‘গণতান্ত্রিক উপায়ে সরকারের সঙ্গে আমরা লড়াই করতে চাই’
বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, আগামী বছর বাংলাদেশে যে সরকার ক্ষমতায় আসবে সেটা হচ্ছে গণতান্ত্রিক সরকার। ২০ দলের সরকার। আর সেই সরকারের প্রধান হবেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া।
‘একটি গণতান্ত্রিক দল হিসেবে গণতান্ত্রিক উপায়েই আমরা বর্তমান সরকারের সঙ্গে লড়াই করতে চাই। আমরা সামরিক শাসন চাই না। সামরিক শাসন আমাদের নেতা জিয়াউর রহমান প্রত্যাহার করেছিলেন। আওয়ামী লীগ নেতা খন্দকার মোশতাক সামরিক শাসন জারি করেছিলেন। এই দেশে যতগুলো সামরিক শাসক এসেছে সবগুলোতেই শেখ হাসিনা প্রকাশ্যে সমর্থন জানিয়েছেন।’
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে রোববার দুপুরে ‘ঘুরে দাঁড়াও বাংলাদেশ’ নামক সংগঠনের ‘দেশ নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র ও রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার দাবি’তে আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
‘বাংলাদেশের প্রতিটি পরিবার প্রধান বিচারপতির মতো ভীতসন্ত্রস্ত’ মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘দেশে এমন একটি পরিবার খুঁজে পাওয়া যাবে না যে পরিবার প্রধান বিচারপতির মতো ভীতসন্ত্রস্ত নয়, তারা কথা বলাই বন্ধ করে দিয়েছেন। নিরাপত্তার প্রশ্নে যে দেশের প্রধান বিচারপতিকে দেশ ছাড়তে হয়, সে দেশে আর থাকে কী? আমরা আদালতে যাই বিচারের আশায়, সুপ্রিম কোর্টে যাই সর্বশেষ বিচারের আশায় সেই কোর্টের প্রধান বিচারপতি আজ কোনো কথা বলছেন না। কেন তিনি কথা বলছেন না- জাতি তা জানতে চায়।’
সরকারের সমালোচনা করে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, দেশ ধ্বংস হয়ে গেছে। দেশে এমন কোনো ব্যাংক খুঁজে পাওয়া যাবে না যেখান থেকে টাকা লুটপাট করা হয়নি। এমনই একটা দেশে আমরা বসবাস করছি! দেশকে রক্ষা করতে হলে অগণতান্ত্রিক এই সরকারকে বিদায় করতে হবে।
সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনারা খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কথা বলেন! ইতিহাস ঘাটলে দেখা যাবে দেশের গণতন্ত্রের জন্য যতটুকু কাজ হয়েছে সেটা হয় জিয়াউর রহমান না হয় খালেদা জিয়ার হাত দিয়ে হয়েছে। মইন উদ্দিন (মইন উ আহমেদ) যে কাজ করেছেন তার সমর্থক ছিলেন শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়েই বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে বিদায় দেয়া হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, ‘আমি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, আপনার যদি ভালো কাজের কোনো লক্ষণ থাকে আসেন, আলোচনায় বসেন, স্বচ্ছ গ্রহণযোগ্য স্বাভাবিক একটি নির্বাচন দেন। তাহলে বুঝব আপনি শেখ মুজিবের কন্যা। বুঝব আপনার সাহস আছে। আপনি ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেন, মানুষের খাবার ফিরিয়ে দেন, ব্যাংকের যত টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে সেগুলো ফিরিয়ে আনুন। তখন আওয়ামী লীগের সংবর্ধনা দিতে হবে না, দেশের জনগণ আপনাকে সংবর্ধনা দেবে। তা না হলে আপনি গতকাল (শনিবার) সংবর্ধনার নামে ঢাকা শহরে যা করেছেন সেটা কলঙ্কের ইতিহাস হয়ে থাকবে।’
‘রোহিঙ্গা সঙ্কট সরকারের ব্যর্থতার জ্বলন্ত প্রমাণ’- এমন দাবি করে বিএনপির এই ভাইস-চেয়ারম্যান বলেন, ‘সরকার যে সাফল্যের কথা বলছেন পুরোপুরিভাবে তা মিথ্যা কথা। শেখ হাসিনার সঙ্গে চীন, ভারত ও রাশিয়া নাই। বিশ্বের কোনো দেশই নাই- এটাই প্রমান করেছে রোহিঙ্গা ইস্যু। রোহিঙ্গারা এমনিতেই আমাদের দেশে আশে নাই, শেখ হাসিনার ব্যর্থতার কারণে অন্য একটি দেশের নাগরিকরা আমাদের দেশে ঢুকেছে।’
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি কাদের সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সহ-সম্পাদক কাদের গণি চৌধুরী ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমতউল্লাহ প্রমুখ।
এআর/এএস/এমএআর/আইআই