সরকার রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে আন্তরিক নয় : ফখরুল
সরকার রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে আন্তরিক নয় বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার বিকেলে কক্সবাজারের হোটেল লং বিচের লবিতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব এই অভিযোগ করেন। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করতে বিকেলে ঢাকা থেকে বিমানযোগে তিনি কক্সবাজার পৌঁছান।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা বরাবরই বলে এসেছি যে, রোহিঙ্গা ইস্যুতে আমরা দেশের মধ্যে কোনো রাজনীতি করতে চাই না। আমরা মানবতার পাশে দাঁড়ানোর জন্য সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার কথা বলেছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি সরকার যদি আজকে সব বিরোধী দল ও জনগণকে নিয়ে একটা ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস সৃষ্টি করতে পারত তাহলে সরকারের হাতই শক্তিশালী হত, রাষ্ট্রের হাত শক্তিশালী হত। কিন্তু তারা সেটা করেননি, তারা সেটা নাকচ করে দিচ্ছেন। এই থেকে প্রমাণিত হয় যে, আসলে সরকার রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে আন্তরিক নয়।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ইতিমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে যে, সরকার এখন পর্যন্ত মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর নিমর্মতাকে গণহত্যা বলেননি। তারা এখন পর্যন্ত বিদেশের কাছে বিভিন্ন দেশগুলোর কাছে বিশেষ করে যেসব দেশ মিয়ারমানকে সমর্থন দিচ্ছে তাদের কাছে টিম বা প্রতিনিধিদল পাঠায়নি।’
তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গাদের যে স্বার্থ, সেই স্বার্থ পুরোপুরিভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের সসম্মানে তাদের নাগরিকত্ব দিয়ে নিজ দেশে ফিরিয়ে দেয়া এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই আজকে আমাদের মূল্য লক্ষ্য। আমরা জাতীয় ঐক্যবদ্ধভাবে সেই প্রচেষ্টা চালাতে হবে।’
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য দলের পক্ষ থেকে নেয়া বিভিন্ন কার্য্ক্রম তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বিএনপির পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে ২২ ট্রাক ত্রাণসামগ্রী আনা হয়েছে এবং বিতরণ করা হয়েছে। প্রতিদিনই আমাদের টিম এখানে আসছে এবং উখিয়া ও টেকনাফের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ত্রাণ বিতরণ করছে। বিভিন্ন জায়গায় আমাদের মেডিকেল টিম কাজ করছে, অসুস্থদের সেবা প্রদান করছে।’
ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে যে, আপনি এত বিলম্বে কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের দেখতে এসেছেন- এ রকম প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, ‘এটা কোনো কথা না। আমাদের দল ও দলের নেতৃবৃন্দ ঘটনার প্রথম দিন থেকে অর্থাৎ ২৫ আগস্টের পর থেকে এখানে আছেন, পালিয়ে আসা অসহায় রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছে, তাদের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।’
‘ক্ষমতাসীন দলের নেতারা একদিন এখানে অবস্থান করে, লোক দেখানো ত্রাণের কাজ করেছে, তারা সরকারি ত্রাণ ব্যবহার করছে। আমরা বিরোধী দল থেকে এই সংকটে যতটুকু সম্ভব ত্রাণ দিয়ে রোহিঙ্গাদের পাশে থাকার যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। আমি বিশ্বাস করি, এখন পর্য়ন্ত যে ত্রাণ দেয়া হচ্ছে তার বেশির ভাগ বিএনপি দিয়েছে।’
এ সময়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব মজিবুর রহমান সারোয়ার, কেন্দ্রীয় নেতা শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মাহবুবুর রহমান শামীম, লুৎফর রহমান কাজল, শহীদুল ইসলাম বাবুল, আমিরুজ্জামান খান শিমুল, চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন, চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এমএম/বিএ