ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে সংসদে আলোচনার সিদ্ধান্ত আওয়ামী লীগের


প্রকাশিত: ০৫:১৫ পিএম, ০৮ জুলাই ২০১৭

বিচারপতি অভিসংশনের ক্ষমতা সংসদের হাতে থাকা অবৈধ ঘোষণা করে উচ্চ আদালতের দেয়া রায়ের বিষয়ে জাতীয় সংসদের বাইরে কথা বলার ক্ষেত্রে দলীয় নেতা ও সংসদ সদস্যদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেছেন, উচ্চ আদালতের রায় নিয়ে সংসদের বাইরে কথা বললে সেটা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হতে পারে। এ সময় আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক ও সংসদ সদস্য আবদুল মতিন খসরুকে জাতীয় সংসদে উচ্চ আদালতের দেয়া এ রায় সম্পর্কে আইনি ব্যাখ্যা তুলে ধরার নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা।

শনিবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা নিশ্চিত করেছেন।

বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা জানান, আইন বিষয়ক সম্পাদক আবদুল মতিন খসরু বৈঠকে বিষয়টি উত্থাপন করেন। তিনি বলেন, উচ্চ আদালতের দেয়া পূর্ণাঙ্গ রায়টি এখনও প্রকাশ হয়নি। তাই এ ধরনের স্পর্শকাতর বিষয়ে বিস্তারিত না জেনে কথা না বলাই ভালো।

সভায় আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, বাহাত্তরের গণপরিষদ যে সংবিধান প্রণয়ন করেছে সেই সংবিধানের ধারা আমরা ফেরত আনতে চাই, সেটা কিভাবে আদালত অসাংবিধানিক বলে? উচ্চ আদালত মার্শাল ল’ অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন। তাহলে মিলিটারি ডিক্টেটরের করা আইন কিভাবে সাংবিধানিক হয়?

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আইনজীবী ও সুশীল সমাজের একটি সংঘবদ্ধ চক্র তালগোল পাকাতে চায়। একটি শূন্যতা তৈরি করতে চায়, তাই তারা এই ইস্যুটি নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। এখানে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা বিচার বিভাগকে নিয়ে রাজনীতি করিনি। জিয়া, খালেদা, এরশাদ সবাই রাজনীতি করেছে। বিচারপতিদের বয়স কমানে-বাড়ানো এসব করেছে।

তিনি বলেন, ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে আদালত এমিকাস কিউরির মতামত গ্রহণ করেছেন। তারা (এমিকাস কিউরি) তো হাইকোর্ট রায় দেওয়ার সময় সংবিধানের পক্ষে মতামত দিয়েছেন। আপিলের রায়ের আগে তাদের মতামত আবার পরিবর্তন কিভাবে করলেন? এমিকাস কিউরির কোনো কোনো আইনজীবী নিজেদের সংবিধান প্রণেতা দাবি করেন, তারা সংবিধানের বাইরে যান কিভাবে?

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে সংসদ। সংসদই সিদ্ধান্ত নেবে ষোড়শ সংশোধনীর রায়ের ব্যাপারে।

পরে কার্যনির্বাহী সদস্য ও খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম আইন অঙ্গনে দল সমর্থক আইনজীবীদের অবস্থানগত দুর্বলতার কথা বলেন। একই ধরনের কথা বলেন আরেক কার্যনির্বাহী সদস্য নজিবুল্লাহ হিরু। তিনি বলেন, আমি বারবার বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চেয়েছি। আমাদের অবস্থান দুর্বল থাকায় কিছু করা যায়নি।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়েও কথা বলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। দলীয় নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক। এ জন্য সবাইকে আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে। মানুষের ঘরে দলের প্রচার করতে হবে।

ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় আওয়ামী লীগ সমর্থক প্রাপ্তবয়স্ক ভোটাররা যেন বাদ না পড়েন সে বিষয়ে দলীয় নির্দেশনা দেন শেখ হাসিনা। নিজ নিজ এলাকায় প্রাপ্তবয়স্করা স্বতস্ফূর্তভাবে যেন ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হন সে বিষয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
দলীয় সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রম আরও গতিশীল করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশ দেন তিনি। বৈঠকে শোকের মাস আগস্ট জুড়ে দলের বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।

এইউএ/ওআর/এনএফ

 

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।