আওয়ামী লীগের চুরি করার বাজেট : খালেদা


প্রকাশিত: ০৬:৪০ পিএম, ০১ জুন ২০১৭

জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত চার লাখ ২৬৬ কোটি টাকার বাজেটকে আওয়ামী লীগের চুরি করার বাজেট বলে অ্যাখ্যায়িত করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি বলেছেন, এই বাজেট লুটপাটের বাজেট। এ বাজেটে আওয়ামী লীগকে চুরি করার সুযোগ দিয়েছে।

খালেদা জিয়া বলেছেন, এ বাজেট তো আর অর্থমন্ত্রীর না। এ বাজেটও তৈরি হয় হাসিনার কথামতো। কাজেই হাসিনা যা চান বাজেট তাই। আর এই বাজেট কি আর বাজেট থাকবে নাকি। পরে দেখবেন বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে ১০ থেকে ২০ হাজার বাড়িয়ে নেবে।

বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির শহীদ সফিউর রহমান মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম আয়োজিত এক ইফতার মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৩৬তম শাহাদাৎবার্ষিকী উপলক্ষে এ আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

বেগম খালেদা জিয়া বলেন, আপনারা সবই জানেন দেশের বর্তমানে কী অবস্থা এবং আপনাদের যে বিচার বিভাগ। সে বিচার বিভাগেরও আজ কী দূরবস্থা সেটা আমরা প্রধান বিচারপতির বক্তব্য পড়লেই বুঝতে পারি।

তিনি বলেন, যেই সরকারের থাবা এত বেশি যে সবদিকে তারা হাত দিয়েছে। কোনো জায়গা তারা বাদ রাখে নাই। সব তার নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে এবং তিনি আজীবন ক্ষমতায় থাকবেন। এটাই তাদের উদ্দেশ্য-লক্ষ্য। সে জন্যই আপনার দেখেছেন এই সরকার কী শুরু করে দিয়েছে।

খালেদা জিয়া বলেন, বিচারকরা ন্যায়বিচার করতে চান। বিচারকরা সুবিচার দিতে চান। কিন্তু প্রধান বিচারপতির বক্তব্য থেকে আমরা বুঝেছি যে, নিম্ন আদালত পুরো সরকারের নিয়ন্ত্রণে। সেখানে সরকার যে নির্দেশ দেয় বিচারকদের সেই নির্দেশ মেনে কাজ করতে হয় এবং সে রায় দিতে হয়। যদি বিচারক দেখে যে বিচারপ্রার্থী নিরাপরাধ তার সঙ্গে এ রকম করা ঠিক হবে না। ওই বিচারক যদি তার বিবেকমতো রায় দেন তাহলে তাকে হয় চাকুরিচ্যুত হতে হয় নয়ত দেশ ছাড়া হতে হয়। না হলে মামলা হামলা দিয়ে তার উপরে হয়রানি করা হয়।

তিনি বলেন, আজকে সাধারণ মানুষ বড় অসহায়। দেশটা আজকে বড় অসহায়ের মধ্যে আছে। আমরা যুদ্ধ করে রক্ত দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছি। দেশের এই অবস্থা করার জন্য নয়। আজকে আওয়ামী লীগ এই দেশটা ধ্বংস করেছে। এখন দায়িত্ব হলো সব বিচারকসহ দেশের সর্বস্তরের জনগণ উচিত জেগে ওঠা, ঐক্যবদ্ধ হওয়া। ন্যায়বিচার ও সব মানুষের অধিকার নিশ্চিত করা।

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ আজকে ভয় পায় বিএনপির মতো একটি দলকে। কারণ বিএনপি জনগণের ভোটে বারবার নির্বাচত হয়। এখনও বিএনপি জনগণের ভোটে বিশ্বাস করে বলে আমরা বলেছি, একটা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। যেখানে সবাই অংশগ্রহণ করবে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হলে আমরাও তাদের মেনে নেব। কিন্তু আজকে আওয়ামী লীগ ষড়যন্ত্র করছে ৫ জানুয়ারির মতো আরেকটি নির্বাচন করতে। কিন্তু সেই নির্বাচন বাংলাদেশের মানুষ অংশগ্রহণ করবে না। কোনো দল অংশগ্রহণ করবে না। তারপরও যদি আওয়ামী লীগ জোর করে নির্বাচন করে তাহলে তাদের সেই নির্বাচন থেকেই বিদায় নিতে হবে।

খালেদা বলেন, আমরা যে ২০৩০ ভিশন দিয়েছি সেখানে দেশের প্রতিটি মানুষের কথা বলা আছে। আমরা সেটা শুরু করব। তাহলে দেশ অনেক উচুতে চলে যাবে। সম্মানের সঙ্গে থাকবে দেশ।

খালেদা জিয়া বলেন, গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে। চালের দাম এত বেড়েছে যে, দেশের মানুষ খেতে পারে না। কাজেই গ্যাসের দাম বাড়ানো বন্ধ করুন। গ্যাসের টাকাও হবে লুটের টাকা। এগুলো বন্ধ করেন, দেশের মানুষের দিকে একটু চান। এখনও কক্সবাজারে রিলিফ যায়নি। এখন পর্যন্ত সাহায্য দেয়ার জন্য কেউ যায়নি।

অনুষ্ঠান সঞ্চলনা করেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির মহাসবিচ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, খোন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, সাবেক স্পিকার ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সাবেক বিচারপতি টি এইচ খান, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, ডা. এ জেড এম জাহিদ প্রমুখ।

এফএইচ/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।