‘প্রধানমন্ত্রী লোক দেখানোর জন্য রিকশায় ওঠেননি’
নেত্রকোনার খালিয়াজুড়িতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ত্রাণ বিতরণের ঘটনা তুলে ধরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘তিনি (প্রধানমন্ত্রী) লোক দেখানোর জন্য রিকশায় ওঠেননি। লোক দেখানোর জন্য ট্রলারে করে ওপারে যাননি। তিনি গিয়েছেন সত্যিকার অর্থে বিপদে পড়া মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিরোধী দলে থাকতে তাকে (শেখ হাসিনা) দেখেছি কীভাবে ছিন্নবস্ত্র পরিহিতা মহিলাকে জড়িয়ে ধরেছেন। কীভাবে মানুষকে কাছে টেনে মাথায় হাত বুলিয়ে মমতা প্রকাশ করেছেন। কিন্তু ক্ষমতায় থাকাকালেও গতকাল (বৃহস্পতিবার) আমি তা দেখলাম।
শুক্রবার রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে ‘শেখ হাসিনার ৩৭তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস’ উপলক্ষে আওয়ামী যুবলীগ আয়োজিত সংবাদচিত্র প্রদর্শনী ও আলোচনা সভায় ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা পলিটিশিয়ানরা কোথাও যদি ত্রাণ ও সাহায্য দিতে চাই তাহলে চার থেকে পাঁচজনকে দিয়েই মন্ত্রীরা চলে যান। এরপর কর্মী বা স্থানীয়রা এগুলো দেন- এটা হয় বাংলাদেশে। কিন্তু আমি অবাক হয়ে দেখলাম, তিনি (শেখ হাসিনা) খালিয়াজুড়িতে একটি স্কুলে গেছেন, সেখানে গিয়ে কী করেছেন, অবাক হবেন। সেখানে ২০৮ জন লিস্টে ছিল। তিনি সেই ২০৮ জনের হাতেই ত্রাণ তুলে দিয়েছেন। এটা আমি আর কখনও দেখিনি। এ প্র্যাকটিস আমি নিজে কখনও করিনি। সময় চলে যাচ্ছে, আমরা বারবার তাগিদ দিচ্ছি। কিন্তু তিনি শুনছেন না। সবাইকে দিয়েই তিনি এসেছেন। এরপর আবার স্পিডবোর্ডে উঠে ইউএনওকে বলছেন, যা দিলাম তাতে আরও কিছু লোক বাকি রইল না-তো। এটাই কমিটমেন্ট। এটাই মানুষের প্রতি ভালোবাসা। এটাই শেখ হাসিনা।
কাদের বলেন, এ তুলনা আমি করতে চাইছিলাম না। ঢাকায় বসে যারা সমালোচনা করেন, সমালোচনার বিরুদ্ধে আমি নই কিন্তু তাদের জানাতে এ কথা বলছি। নেপোলিয়ন বোনাপার্টকে তার সভাসদরা বলতো, ‘কমরেড নেপোলিয়ন ইজ অলওয়েজ রাইট’। আমি নিজে বলছি, আই অ্যাম নট অলওয়েজ রাইট। আমারও ভুল হতে পারে। ক্রটি হতে পারে। আমারও সমালোচনা থাকতে পারে। আমি মনে করি, সমালোচকরা আমার বড় বন্ধু। আর যারা আমার বন্দনা করে, যারা চাটুকারি-মোসাহেবি করে, তারা হচ্ছে বড় শত্রু। চাটুকার মোসাহেবদের চেয়ে বড় শত্রু আর কেউ নেই।
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশের মন্ত্রীরা তো কোনো প্রোগ্রামে আসার সঙ্গে সঙ্গে চলে যাওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েন। প্রোগ্রাম দেব... কিন্তু তা শেষ হওয়ার আগে তিনি রাষ্ট্রীয় কাজের ব্যস্ততায় চলে যাবেন। তাহলে প্রোগ্রাম দেব কেন? আর আপনারাও তার থেকে প্রোগ্রাম নেবেন কেন?
ওবায়দুল কাদের বলেন, এদেশে অনেকে ক্ষমতায় আসেন ক্ষমতাকে ভালোবেসে। অনেকে ধন-সম্পদের স্ফীতির জন্য ক্ষমতায় থাকেন। ক্ষমতাকে ধরে রাখেন। কিন্তু শেখ হাসিনার ক্ষমতা হচ্ছে মানুষের জন্য, মানুষকে ভালোবাসার জন্য।
যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী, ফারুক হোসেন, সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট এবং মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন। সভা সঞ্চালনা করেন যুবলীগের প্রকাশনা ও গ্রন্থনা বিষয়ক সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ বাবলু।
এইউএ/জেডএ/এমএআর/এমএস