আওয়ামী লীগই বিএনপিকে অনুসরণ করছে : ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ বরাবরই বিএনপিকে অনুসরণ করছে। প্রেসিডেন্ট জিয়াকে অনুসরণ করেছে। খালেদা জিয়াকে অনুসরণ করেছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ভিশন ২০৩০ ঘোষণার পর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, খালেদা জিয়ার ভিশন অন্তস্বারশূন্য, আওয়ামী লীগের ভিশন থেকে চুরি করা হয়েছে।
ফখরুল বলেন, আপনারা (সাংবাদিক) নিশ্চয়ই ভুলে যাননি ১৯৭৫ সালে তারা (আওয়ামী লীগ) গণতন্ত্রকে অবলুপ্ত করে দিয়ে এক দলীয় শাসন ব্যবস্থা বাকশাল কায়েম করেছিলেন। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান পরবর্তীতে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন করেছিলেন। সেই সময় আওয়ামী লীগ তার দল অবরুদ্ধ করে দিয়ে বাকশালে যোগ দিয়েছিল। তাদের বাকশালের যে গঠনতন্ত্র তাতে সব পরিবর্তন করে এক দলীয় শাসন ব্যবস্থা মেনে নিয়েছিল। তারা মুক্তবাজার অর্থনীতির কথা বাদ দিয়ে তথাকথিক লুটপাটের সমাজতন্ত্র গঠনতন্ত্রের মধ্যে নিয়ে এসেছিল।
এ সময় আওয়ামী লীগ জিয়াউর রহমানের আমলে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন পেয়েছিল বলেও উল্লেখ করেন বিএনপির এ নেতা।
বিএনপি ভিশন অনুসরণ করে না উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ২০০১ সালে বিএনপিই প্রথন ভিশন দেয়া শুরু করে। এর পরে আওয়ামী লীগ অনুসরণ করে ভিশন দেয়া শুরু করে। আমরা এ নিয়ে অভিযোগ না করে গর্ববোধ করি।
তিনি বলেন, বিএনপি বরাবরই একটি ভিশনারি দল। ২০০১ সালে বিএনপি প্রথম ভিশন দিয়েছিল। ভিশনটা প্রথম আওয়ামী লীগ দিয়েছে, তাদেরকে আমরা অনুসরণ করেছি এটা একেবারেই অসত্য তথ্য। এ দেশের অর্থনীতি, বাণিজ্য, কৃষি, রুপায়ন ও রাষ্ট্র ব্যবস্থাসহ সকল ক্ষেত্রেই যে আধুনিকায়ন ও ইতিবাচক রুপ এসেছে তার সবই বিএনপি, জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার হাত ধরে এসেছে।
ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ ভিশন দিয়ে তা বাস্তবায়ন করে না। সে যোগ্যতা তাদের নেই। তারা দলীয়করণের মাধ্যমে লুটপাট, দখলদার, ভাগাভাগিতে ব্যস্ত থাকে। তাদের লুটপাটের প্রমাণ দেখা যায়, ব্যাংক ডাকাতি, শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারি, উন্নয়নের নামে বাজেট বাড়িয়ে লুটপাটে।
আওয়ামী লীগের ভিশন নিয়ে বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, আওয়ামী লীগ ভিশন দিয়েছে ২০৪১ সাল পর্যন্ত। অথচ তাদের বর্তমান অবস্থা দেখলেই বোঝা যায়। এই ভিশনের সাথে বাস্তবতার কতটুকু মিল আছে। তারা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করবে বলেছিল কিন্তু প্রধান বিচারপতি বলছে দেশে আইনের শাসন নেই। কিন্তু বিএনপি যা বলে তা বাস্তবায়ন করে। অতীতে তা প্রমাণিত হয়েছে, ভবিষ্যতেও হবে। এই ভিশনও বাস্তাবায়ন করবে। বিএনপির ভিশন কঠিন তবে অসম্ভব নয়। বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসলে এই ভিশন বাস্তাবায়নে কাজ করবে।
জিয়াউর রহমানের কথা স্মরণ করে মহাসচিব বলেন, বর্তমান প্রেক্ষিতে যখন গণতন্ত্র লুণ্ঠিত, মানুষের মৌলিক অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে, বাক স্বাধীনতাকে রুদ্ধ করা হয়েছে, হত্যা, গুম, খুনের মধ্য দিয়ে মানুষের নূন্যতম বেঁচে থাকার অধিকার হরণ করা হচ্ছে, রাজনৈতিকভাবে অধিকার হরণ করা হচ্ছে। সেই সময় জিয়াউর রহমানকে বারবার স্মরণ করে তাকে অনুসরণ করে গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করার যে সংগ্রাম-লড়াইয় আমরা তাতে অনুপ্রাণিত, উজ্জিবিত হতে চাই।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব মজিবুর রহমান সারোয়ার, হারুন অর রশীদ, হাবিব উন নবী খান সোহেল, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, শহীদুল ইসলাম বাবুল, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভুইয়া জুয়েল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এমএম/আরএস/আরআইপি/জেআইএম