শিগগিরই ছাত্রলীগের কাউন্সিল : পদ প্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ


প্রকাশিত: ০৬:৪৬ এএম, ০৫ মে ২০১৫

শিগগিরই ঘোষিত হচ্ছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ২৮তম কাউন্সিলের দিনক্ষণ। এমন আভাস পাওয়ার পর থেকে শুরু হয়েছে পদ প্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ। নিজের পক্ষে সমর্থন আদায়ে রাতদিন কাজ করে যাচ্ছেন তারা। ঢাবির মধুর ক্যান্টিনেও তাদের তৎপরতা বেড়ে গেছে। সংগঠনের নীতি নির্ধারকদের সঙ্গেও সমর্থন আদায়ে কাজ করে যাচ্ছেন তারা। এছাড়া সেক্ষেত্রে নীতি নির্ধারকদের বাসায় ধরণা দেওয়া থেকে শুরু করে প্রাধান্য পাচ্ছে অঞ্চলভিত্তিক রাজনীতিরও।

এদিকে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও খুঁজছেন ক্যাম্পাস রাজনীতিতে অভিজ্ঞ, আনুগত্যশীল, দলীয় আদর্শে বিশ্বাসী ও নেতাকর্মীদের আস্থাভাজনকে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের হাইব্রিড নেতারাও কাজ করে যাচ্ছেন নিজেদের আস্থাভাজনদের নতুন কমিটিতে স্থান করে দিতে। এজন্য তারা নীতি নির্ধারকদের সঙ্গে তদবিরও বাড়িয়েছেন বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।

সিটি নির্বাচন শেষ হওয়ার পর পরই শুরু হয়েছে কাউন্সিল নিয়ে জোর আলোচনা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের আড্ডাস্থল, মধুর ক্যান্টিন, টিএসসি, হলের ক্যান্টিন কিংবা চায়ের টেবিলে ঘুরে ফিরেই আসছে একই কথা। কে হচ্ছেন আগামী দিনের ছাত্রলীগের কাণ্ডারী, কেমন তার ব্যক্তি ইমেজ, তার নেতৃত্বই বা কী রকম কিংবা চলতি কমিটির ভুলগুলো শুধরাতে কতোটুকু সক্ষম হবে নতুন কমিটি? এছাড়া আগামী দিনে ক্ষমতাসীনদের টার্নিং সময়ে ভ্রাতৃপ্রতিম ছাত্র সংগঠন হিসেবে দলের প্রয়োজনে কতোটুকু ভূমিকা রাখতে পারবেন তারা? এমনই আলোচনা এখন তুঙ্গে।

কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা গত কয়েক মাস যাবত ছাত্রলীগ সভাপতি-সম্পাদককে সম্মেলন করার জোর নির্দেশ দিচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে পাল্টে যায় ছাত্রলীগের রাজনীতির দৃশ্যপটও। ক্যাম্পাসে পদ প্রত্যাশীরা ক্রমেই হয়ে উঠছেন তৎপর। অনেকটাই হারাম হয়ে গেছে তাদের ঘুম। মধুর ক্যান্টিনেও তাদের তৎপরতা বেড়ে গেছে। টার্গেট অনুযায়ী কাউন্সিলে নিজের পক্ষে সমর্থন আদায় কাজ করে যাচ্ছেন তারা। অন্যদিকে পদ প্রত্যাশীদের মধ্যে কেউ কেউ লোকচক্ষুর আড়ালে থেকে নিজের পক্ষে সমর্থন আদায়ে কাজ করে যাচ্ছেন। সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগও বাড়িয়ে দিয়েছেন তারা।

এদিকে কবে নাগাদ কাউন্সিল দেয়া হবে তা নিয়ে এখনো পরিষ্কারভাবে মুখ খুলতে রাজি নন ছাত্রলীগ সভাপতি এইচএম বদিউজ্জামান সোহাগ। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক গত কয়েকদিন আগে ৩-৫ মে এর মধ্যে সংবাদ সম্মেলন করে কাউন্সিলের তারিখ ঘোষণার কথা বললেও এখনো তা বাস্তবে রূপ পায়নি। এদিকে গতকাল (সোমবার) ঢাবি ছাত্রলীগ কর্তৃক আয়োজিত বুয়েট ছাত্রলীগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে বহিষ্কারাদেশের প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে সোহাগ খুব শিগগিরই কাউন্সিল দেয়ার ঘোষণা দেন। এসময় তিনি বলেন, জেলা সম্মেলন শেষে কেন্দ্রীয় কাউন্সিল দেয়া  হবে। যারা লেগে থাকবেন তারাই সফল হবেন। দলের প্রয়োজনে নেতা-কর্মীদের কাজ করে যাওয়ারও নির্দেশ দেন তিনি।

কবে নাগাদ কাউন্সিল ঘোষণা হচ্ছে এমন বিষয়ে জানতে চাইলে এইচএম বদিউজ্জামান সোহাগ জাগো নিউজকে বলেন, খুব শিগগিরই কাউন্সিলের দিনক্ষণ ঘোষণা করা হবে। তা আমরা সংবাদ সম্মেলন করে জানাবো। তবে সেক্ষেত্রে এ মাসের মধ্যে কাউন্সিলের দিনক্ষণ ঘোষণা করার সম্ভবনা বেশি।

এদিকে মে মাসে কাউন্সিলের দিনক্ষণ ঘোষণা করা না হলে পিছিয়ে যাবে কাউন্সিল এমনই সমীকরণ তাড়া দিচ্ছে সংশ্লিষ্টদের। ছাত্রলীগের কাউন্সিল সাধারণত এক মাস হাতে রেখেই ঘোষণা করা হয়। সেক্ষেত্রে মে মাসে ঘোষণা না দিলে পিছিয়ে যেতে পারে ২৮তম কাউন্সিল।

যদি মে মাসে কাউন্সিল ঘোষণা না করা হয় সেক্ষেত্রে জুনে রমজান পরবর্তী ঈদসহ জুলাই এর মাঝামাঝি সময় ঘোষণা করতে হবে। এক্ষেত্রে জুলাইতে ঘোষণা করার কোনো সম্ভবনা নেই, কারণ ১০-১২ দিনের মধ্যে কাউন্সিলের যাবতীয় কাজ সম্পূর্ণ করা সম্ভব হবে না। অন্যদিকে আগস্টে সাধারণত ছাত্রলীগের কাউন্সিল হয় না। করণ এই মাসটি আওয়ামী লীগের শোকের মাস। সেক্ষেত্রে সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে কাউন্সিল পিছিয়ে যেতে পারে।

আর এ সময়ের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে দুই প্রভাবশালী পদ প্রত্যাশী বর্তমান কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামসুল কবির রাহাত ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক সাইফুর রহমান সোহাগের নির্দিষ্ট বয়সসীমা। যা কোনোভাবেই চাচ্ছেন না দলের নীতিনির্ধারকরা।

এমএইচ/বিএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।