রাবি উপাচার্যের সঙ্গে সাংসদের দুর্ব্যবহারে বাড়ছে ক্ষোভ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর মুহাম্মদ মিজানউদ্দিনের সঙ্গে তানোর-গোদাগাড়ী আসনের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরীর দুর্ব্যবহারের ঘটনায় ক্ষোভ বাড়তে শুরু করেছে।
বৃহস্পতিবার বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর বিভিন্ন মহলে এই ঘটনার তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনিও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।
এর আগে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের দপ্তরে ঢুকে উপাচার্যকে শাসিয়েছেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে। গত বুধবার এ ঘটনা ঘটে। যদিও এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সংসদ সদস্য।
ওমর ফারুক চৌধুরী রাজশাহী-১ আসনের সাংসদ এবং রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। অনিয়মের অভিযোগে রাজশাহীর বেসরকারি শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজকে জরিমানার জের ধরে এ ঘটনা ঘটে। তিনি এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি।
এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির জামায়াত-শিবির সমর্থিত ছাত্রদের বিরুদ্ধে খড়খড়ি বাইপাস এলাকায় সংঘটিত বিভিন্ন নাশকতায় জড়িত থাকারও অভিযোগ উঠেছে। তবে বাণিজ্যিকভাবে এর সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছেন তানোর-গোদাগাড়ী আসনের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী। এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রমে অনিয়মের অভিযোগে জরিমানা করায় নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিকে তার দফতরে গিয়ে গত বুধবার শাসিয়ে এসেছেন বলেও ঘোর অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
অভিযোগ রয়েছে রাবি উপাচার্য মুহাম্মদ মিজান উদ্দিনের কার্যালয়ে গত মঙ্গলবার সকাল থেকেই চিকিৎসা কর্মকর্তা পদে পদোন্নতি দেয়ার জন্য মৌখিক পরীক্ষা নেয়া হচ্ছিল। বেলা একটার দিকে উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য মোবাইলে যোগাযোগ করেন সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী। কিন্তু কাজে ব্যস্ত থাকায় উপাচার্য সংসদ সদস্যকে পরে দেখা করতে পারবেন বলে জানান। কিন্তু ১০ মিনিট পরেই সংসদ সদস্য চার থেকে পাঁচজনকে নিয়ে উপাচার্যের দপ্তরের অপেক্ষমাণ কক্ষে আসেন। খবর পেয়ে উপাচার্য কাজ সংক্ষিপ্ত করেন। এরপর সংসদ সদস্য ওমর ফারুক উপাচার্যের কক্ষে ঢুকে উপাচার্যকে শাসান এবং দেখে নেয়ার হুমকি দেন।
এই বিষয়ে উপাচার্য প্রফেসর মুহম্মদ মিজানউদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, সংসদ সদস্য পরিচালিত মেডিকেল কলেজটির একাডেমিক অনুমোদন না থাকা সত্ত্বেও ছাত্র ভর্তিসহ নানা অসঙ্গতি থাকায় কলেজ পরিদর্শক দল প্রতিষ্ঠানটিকে জরিমানা করে। এ বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে সংসদ সদস্য তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন।
তবে সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তেমন কোনো কারণ ছাড়াই শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজকে ২৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। সেই জরিমানা মওকুফের জন্য তিনি নিজের প্যাডে উপাচার্যের কাছে আবেদন করেছিলেন। উপাচার্য হিসেবে তিনি যদি মনে করেন, খারাপ আচরণ করেছি তবে দুঃখ প্রকাশ ছাড়া আমার আর কিছু করার নেই।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঢুকে উপাচার্য বা কোনো শিক্ষকের সঙ্গে এমন আচরণ করা গ্রহণযোগ্য নয়। একজন সংসদ সদস্যের এমন আচরণে আমি বিস্মিত হয়েছি। আর যে মেডিকেল কলেজ নিয়ে এই বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছে, সেই মেডিকেল কলেজ সম্পর্কে অনেক প্রশ্ন রয়েছে।
এমজেড/এমএএস/আরআই