সিটি নির্বাচন : পর্যাপ্ত টাকা না পেয়ে বেকায়দায় ইসি


প্রকাশিত: ০২:১৪ পিএম, ১৫ এপ্রিল ২০১৫

ঢাকা সিটি কর্পোরেশন (উত্তর ও দক্ষিণ) নির্বাচন পরিচালনার জন্য চাহিদার তুলনায় কম টাকা পাওয়ায় বেকায়দায় পড়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। একারণে ইসির স্বাধীনতা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।

সূত্র জানায়, ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের জন্য ৪৫ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়ে অর্থমন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠায় ইসি। কিন্তু সম্প্রতি ৩৫ কোটি টাকা ছাড় দিয়েছে মন্ত্রণালয়। একারণে নির্বাচন পরিচালনা এবং আইনশৃঙ্খলা খাতের বিদ্যমান অর্থ কমিয়ে অর্থ সমন্বয় করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার  মো. শাহনেওয়াজ বুধবার সকালে জাগোনিউজ২৪.কমকে বলেন, ‘চাহিদার তুলনায় ১০ কোটি টাকা কম পাওয়া গেছে। তাই বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমন্বয় করে চলতে হচ্ছে।’

স্বাধীনভাবে কাজ করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে আর্থিকভাবে সাবলম্বী করার দাবিটি দীর্ঘদিনের। কিন্তু আজও তা পূরণ হয়নি।

এ বিষয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার জাগোনিউজ২৪.কমকে জানান, সরকারের অনেক নেতা টকশোতে দাবি করে আসছেন নির্বাচন কমিশনকে আর্থিকভাবে স্বাধীন করা হয়েছে। কিন্তু এটা তো স্বাধীন হল না।  এটা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য না। সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনার জন্য অবশ্যই ইসিকে আর্থিক স্বাধীনতা দিতে হবে।

ইসির কর্মকর্তারা জানান, নির্বাচনের সময় পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, আনসার এবং নির্বাহী ও বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়। এ খাতেই মোট বাজেটের অর্ধেক ব্যয় হয়। সে হিসেবে আইন-শৃঙ্খলায় সাড়ে ২৯ কোটি টাকা বাজেট ধরে ইসি। আর নির্বাচন পরিচালনা সংক্রান্ত ৪৬টি খাতে সাড়ে ১৫ কোটি টাকা ধার্য করা হয়।

নির্বাচন পরিচালনায় উল্লেখযোগ্য খাতসমূহ হচ্ছে- অস্থায়ী ভোটকেন্দ্র স্থাপন, ভোটকেন্দ্রে বেষ্টনি ও গোপন কক্ষ নির্মাণ, ভোটকেন্দ্রে ব্যবহারের জন্য মনোহরি দ্রব্য ক্রয়, নির্বাচনী কর্মকর্তাদের ভ্রমণ ও  দৈনিক ভাতা, নির্বাচনের ফরম, প্যাকেট ও নির্বাচনী নির্দেশিকা-ম্যানুয়াল প্রস্তুত, স্বচ্ছ ব্যালট বক্স পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্নকরণ এবং তা কেন্দ্রে পৌঁছানো, নির্বাচনে ব্যবহৃত সামগ্রী ব্যালট পেপার, সিলগালা, স্ট্যাম্প প্যাড এবং রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তাদের পারিশ্রমিক।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, নির্বাচন পরিচালনায় সাড়ে ১৫ কোটি থেকে কমিয়ে সাড়ে ১২ কোটি এবং আইনশৃঙ্খলায় সাড়ে ২৯ কোটি থেকে কমিয়ে সাড়ে ২২ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে মন্ত্রণালয়।

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাগোনিউজ২৪.কমকে জানান, অর্থবিভাগ বাজেট কাটছাট করায় মাঠে যথেষ্ট পরিমাণ আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী নামানো সম্ভব হবে না। এর প্রভাব ভোটের মাঠে পড়তে বাধ্য। ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, সশস্ত্র বাহিনীকে বাইরে রেখে আইনশৃঙ্খলার বাজেট দেওয়া হয়। এ বাজেট কমানোর কারণে নির্বাচনে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের নিয়োগ করা হলে অর্থ সংকট চরম পর্যায়ে পৌঁছাবে।

জানা যায়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের এ বাজেট পাওয়ার পর নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে জড়িতদের মধ্যে এক ধরনের অস্বস্তি তৈরি হয়। এই ঘাটতি বাজেট কিভাবে সমন্বয় করা হবে এ নিয়ে বৈঠকও হয়।

এইচএস/একে/আরআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।