রাজনীতির আগে শিক্ষা : প্রধানমন্ত্রী


প্রকাশিত: ১১:২২ এএম, ২৪ জানুয়ারি ২০১৭

দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা নিরক্ষর মানুষদের অক্ষর জ্ঞান দেয়া এবং তাদের স্বাক্ষর জ্ঞান করে তুলতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ছাত্রলীগ নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ছাত্রদের মূল রাজনীতি হবে লেখাপড়া। মনে রাখতে হবে শিক্ষা সবচেয়ে বড় সম্পদ। কারণ এটা কেউ হাইজাক, লুট বা ছিনিয়ে নিতে পারে না। সে জন্য সুশিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। দেশকে প্রগতির পথে এগিয়ে নিতে যে আলোর যাত্রা শুরু হয়েছে সে যাত্রায় শামিল হতে হবে।
 
মঙ্গলবার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত ছাত্রলীগের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে। যারা যুদ্ধাপরাধীদের মদদ দিয়েছে তারাও রেহায় পাবে না। তাদেরও বিচার হবে।জঙ্গিবাদ ও মাদকের সঙ্গে যারা যুক্ত তারাও রক্ষা পাবে না। তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, দেশের প্রতিটি অর্জনের সঙ্গে ছাত্রলীগ জড়িত। প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে ছাত্রলীগ অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে। ষড়যন্ত্রকারীরা এক সময় ছাত্রলীগ ও মুজিব সৈনিককে ধ্বংস করতে চেয়েছিল। কিন্তু তারা তা পারেনি। যে সংগঠন একটি আদর্শ ধারণ করে চলে তাদের কেউ ধ্বংস করতে পারে না।

ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনা বলেন, অশিক্ষিতদের হাতে ক্ষমতা গেলে দেশের কি অবস্থা হয়। তা দেশের মানুষ হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে। শিক্ষা থাকলে শুধু নিজের জন্য নয়, দেশের মানুষকেও কিছু দেয়া যায়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু যেমন শিক্ষার ওপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন আমরাও তেমনি শিক্ষার ওপর জোর দিয়েছি। আজ প্রতিটি শিক্ষার্থীর হাতে বছরের শুরুতেই বই তুলে দিতে পেরেছি।

তিনি বলেন, জিয়া ছিল মেট্রিক পাশ আর জিয়ার স্ত্রী ছিল মেট্রিক ফেল। এ কারণে তারা চায়নি এ দেশের ছেলে মেয়েরা শিক্ষিত হোক। খালেদা জিয়া যখন বলেছিল আওয়ামী লীগকে দমনের জন্য ছাত্রদলই যথেষ্ট। তখন আমি ছাত্রদের হাতে বই এবং কলম তুলে দিয়েছিলাম।

শেখ হাসিনা বলেন, ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ে যখন জঙ্গি হয় তখন বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়। জঙ্গি হয়ে জীবন দিলে কি বেহেস্ত পাওয়া যায়? তারা কি বেহেস্তে গিয়ে কোন খবর পাঠিয়েছে? এ পথে কেউ গেলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।  

দেশ উন্নয়নের পথে। আমরা যখন পদ্মাসেতুর কাজ শুরু করি তখন অনেকেই নানা টিটকারী মেরেছিল। এখন দেখিয়ে দিতে পারছি। ২১ সালে দেশ মধ্যম আয়ের এবং ৪১ সালে বাংলাদেশ হবে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ।

শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু মাত্র সাড়ে তিন বছরের দেশকে যে ভাবে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন আর ১০ বছর দেশ চালাতে পারলে এতদিন আমার উন্নত সমৃদ্ধ দেশে পরিনিত হতে পারতাম। ষড়যন্ত্রকারীরা দেশের উন্নয়নকে থামাতে বঙ্গবন্ধুকে ১৫ আগস্ট স্বপরিবারে হত্যা করেছে। জিয়া সংবিধান লংঘন করে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করেছিল। জিয়ার ক্ষমতা দখলের মধ্যে দিয়ে হত্যার রাজনীতি শুরু হয়েছিল। তারা রাজাকার আল বদরদের পুরস্কৃত করেছিল। তাদের মন্ত্রী বানিয়ে গাড়ীতে লাল সবুজের পতাকা তুলে দিয়েছিল। ইতিহাস বিকৃতি করেছে। ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর দেশের মানুষ প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত  সভায় তোফায়েল আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন।

ছাত্রলীগের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানকে ঘিরে জেলা নেতা-কর্মীদের পদভারে উৎসবমূখর পরিবেশে পরিণত হয় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান।বিভিন্ন জেলা থেকে আগত ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা নিজ নিজ জেলার নাম লেখা গেঞ্জি ও ব্যাচ পরে অবস্থান নিয়েছিলেন দোয়েল চত্বর এলাকা থেকে টিএসসি পর্যন্ত। এ সময় কানায় কানায় পূর্ণ হয় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান।   

ছাত্রলীগের এ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানকে ঘিরে কোনো ধরনের অপ্রিতিকর ঘটনা ঘটেনি । সবার মধ্যেই  ছিল উচ্ছ্বাস। বেলা ৩টা ৩৬ মিনিটে জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে শুরু হয় ছাত্রলীগের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান।  

এইউএ/এসএইচএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।