ছাত্রলীগের পুনর্মিলনীর বোঝা ঢাকাবাসীর কাঁধে


প্রকাশিত: ০৭:০৪ এএম, ২৪ জানুয়ারি ২০১৭

ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের পুনর্মিলনীকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার সকাল থেকেই রাজধানীতে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে অবশ্য বলা হয়েছিল কোনো ধরনের যানজট যাতে সৃষ্টি না হয় সেজন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে সকাল থেকে বাস্তবতা দেখা গেছে একেবারে ভিন্ন।  

বিকেল ৩টায় আনুষ্ঠানিকভাবে পুনর্মিলনীর অনুষ্ঠান শুরুর কথা থাকলেও সকাল থেকেই এর প্রভাব দেখা যাচ্ছে রাজধানীর সড়কগুলোতে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত থাকবেন এ অনুষ্ঠানে।
 
মঙ্গলবার সকাল শাহবাগ মোড়, কাঁটাবন মোড়, টিএসসি, মৎসভবন মোড়, নিউমার্কেট ও হাইকোর্টের মোড়ে দেখা গেছে, ‘স্তব্ধ’ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে শত শত যানবাহন।

মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর পৌনে ১২টা পর্যন্ত সড়কের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে- কোনো যানবাহনই যেন স্বাভাবিক গতিতে চলতে পারছে না। দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর একটু একটু করে এগিয়ে চলতে হচ্ছে।

ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের নয়াপল্টন শাখায় চাকরি করেন সাজেদা আক্তার, থাকেন মিরপুরে। তিনি বলেন, মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্বর পেরিয়ে কাজীপাড়া ও শেওড়াপাড়া অতিক্রম করার পর সিগন্যালে পড়ে তার বাসটি। নয়াপল্টন পৌঁছাতে তার আড়াই ঘন্টা সময় লেগেছে আজ।

তিনি জানান, আগারগাঁও থেকে বাংলামোটর পর্যন্ত জ্যাম অতিক্রম করে অফিসে যেতে হয়েছে।

উত্তরার বাসিন্দা তোফায়েল চাকরি করেন মতিঝিলের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। তিনি জানান, সকাল ৯টায় বাসে উঠেছি। চারদিকে জ্যাম তাই বাংলামোটর নেমে গেছি।

সে সময় তিনি জানিয়েছিলেন, মগবাজার থেকে রিকশা নিয়ে গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করবেন তিনি। শেষ পর্যন্ত তিনি কখন পৌঁছেছেন সেটা আর জানা যায়নি।  

এদিকে শাহবাগ হয়ে বিভিন্ন রুটে যেসব যানবাহন চলাচল করে সেগুলোকে আজ চরম বেকায়দায় পড়তে হয়েছে। কারণ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশ করতে গিযে পুরো টিএসসি এলাকায় অবস্থান নিয়েছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এজন্য এ রুট দিয়ে বলতে গেলে যানচলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।

রোববার বিকেলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ জানিয়েছিলেন, পুনর্মিলনীকে কেন্দ্র করে যেন কোনো ধরনের যানজট সৃষ্টি না হয় সেজন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

তিনি জানিয়েছিলেন, পুনর্মিলনীকে কেন্দ্র করে ঢাকায় কোনো ধরনের যানজট সৃষ্টি না হয় সেজন্য বিশেষ পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা ট্রাফিক বিভাগের সঙ্গে কথা বলেছি। তারাও বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা গাড়িগুলো যেন রাস্তার ওপরে বা যত্রতত্র পার্কিং করা না হয় সেজন্য শৃঙ্খলা উপ-কমিটি করা হয়েছে। এসব গাড়ি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেসিয়াম, মলচত্বর, মহসিন হলের খেলার মাঠ ও ফুলার রোডে পার্কি করা হবে। কোনোভাবেই রাস্তায় গাড়ি রাখতে দেয়া হবে না।

অন্যদিকে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন বলেছিলেন, ছাত্রলীগ একটি সুশৃঙ্খল ছাত্রসংগঠন। পুনর্মিলীতে এ সংগঠনের কোনো নেতাকর্মী বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে না। মিছিলগুলো রাস্তার একপাশ দিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আসবে। কেউ কোনো গাড়ি আটকে মিছিল নিয়ে আসবে না।

এরপরেও যদি পুনর্মিলনীর কারণে নগরবাসীর কোনো ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয় বা কষ্ট পেয়ে থাকেন তাহলে সংগঠনের পক্ষ থেকে অগ্রীম দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।

এমএম/এনএফ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।