শঙ্কার নারায়ণগঞ্জে স্বস্তির নির্বাচন


প্রকাশিত: ০৮:২৪ এএম, ২২ ডিসেম্বর ২০১৬

তফসিল ঘোষণা থেকেই নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে নানা রকম আলোচনা ডানা মেলেছিল। এ নির্বাচন নিয়ে সহিংসতার আশঙ্কা ছিল অন্য যেকোনো নির্বাচনের চেয়ে তুলনামূলক বেশিই।    

ব্যাপক আলোচিত সাত খুনের ঘটনাস্থল নারায়ণগঞ্জের এ নির্বাচনে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু ছিল ওসমান পরিবারের আধিপত্য। আওয়ামী লীগ দলীয়ভাবে শামীম ওসমানকে মনোনয়ন না দিয়ে সেলিনা হায়াৎ আইভীকে মনোনয়ন দেয়ায় সেই ইস্যু আরো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। যদিও শেষ পর্যন্ত শামীম ওসমান বলে এসেছেন নারায়ণগঞ্জের এ নির্বাচন হবে বাংলাদেশের ইতিহাসে নিরপেক্ষতার মডেল।

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের অভিভাবক বেছে নেয়ার এ নির্বাচনের সঙ্গে জাতীয় নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক না থাকলেও, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপির এই নির্বাচনে অংশ নেয়া বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে। এছাড়া নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় রাজনীতির বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতিতে আলাদা মাত্রা সংযোজন করার ক্ষেত্র রয়েছে বলে মনে করা হয়। সেসব বিবেচনায় এ নির্বাচনকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।

সেই নারায়ণগঞ্জের নির্বাচন নিয়ে শুরু থেকেই নানা শঙ্কা থাকলেও বৃহস্পতিবার ভোট শুরু হওয়ার পর থেকে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। বেলা ২টা পর্যন্ত সহিংসতার খবর পাওয়া যায়নি; কোনো প্রার্থীর তরফ থেকে তেমন জোরালো কোনো অভিযোগও ওঠেনি।

ভোট শুরুর দিকে বিএনপির প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খান নির্বাচনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে তার সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন। পরে অবশ্য তার এজেন্টকে কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হচ্ছে বলেও একটি অভিযোগ করেন তিনি।

অন্যদিকে নিজের ভোট দিয়ে কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, এতো সুন্দর পরিবেশে নির্বাচন নারায়ণগঞ্জবাসী এর আগে দেখেনি।

নারায়ণগঞ্জ থেকে জাগো নিউজের নিজস্ব প্রতিবেদক আবু সালেহ সায়াদাত জানিয়েছেন, নির্বাচনকে ঘিরে নারায়ণগঞ্জে নেয়া নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন ভোটাররাও। উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে ভোট দিয়েছেন তারা।

সার্বিকভাবে এখন পর্যন্ত ভোটের যে চিত্র তাতে নির্বাচন সুষ্ঠু হচ্ছে বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় শুরু হওয়া ভোট শেষ হবে বিকেল ৪টায়। শেষ ২ ঘণ্টায় অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা না ঘটলে বর্তমান নির্বাচন কমিশন তার শেষ সময়ে এসে একটি সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে পারলো বলে সন্তুষ্টিত ঢেঁকুড় তুলতেই পারে।  

বিগত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনগুলোতে অংশ নিলেও মাঝপথে এসে নির্বাচন বর্জন করেছিল বিএনপি। তবে এবার তার ভিন্ন কিছু বিএনপির তরফ থেকে আসতে পারে সেরকম আলামত ছিল শুরু থেকেই; যদিও তাদের চাওয়া অনুযায়ী সেনা মোতায়েনে শেষ পর্যন্ত রাজি হয়নি নির্বাচন কমিশন।

বেলা ১১টার দিকে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, এভাবে শেষ পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলতে থাকলে বিএনপি জয়ী হবে।

অন্যদিকে আইভীর নিরঙ্কুশ জয় শতভাগ নিশ্চিত বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ।

শেষ পর্যন্ত নারায়ণঞ্জে ধানের শীষে সোনালী রোদের ছোঁয়া লাগবে, না কি আইভীর হাত ধরে নৌকার পালেই লাগবে নতুন বাতাস তা জানতেই এখন অপেক্ষা।

এনএফ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।