জামায়াত নিয়ে এমাজউদ্দীনের কণ্ঠে ভিন্ন সুর
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জামায়াতে ইসলামী। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে দলটির স্বাধীনতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের বিষয়টি বিচারাধীন। এছাড়া বিভিন্ন মহলে দলটি নিষিদ্ধের দাবি উঠলেও বিএনপি বরাবরই না নাকচ করে আসছে। তবে এবার ভিন্ন সুর শোনা গেল বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অন্যতম পরামর্শক অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদের কণ্ঠে। তিনি বলেন, ‘২০ দলীয় জোটের মধ্যে জামায়াতে ইসলামীকে ওইভাবে রাখার কোনো প্রয়োজন নেই’ বিএনপি চেয়ারপারসন এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এমন মন্তব্য করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে যে সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে, সেটা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময়কালীন সঙ্কটের মতো মনে হয়। তাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এ সঙ্কটের সমাধান করতে হবে।
বিএনপির সঙ্গে জাতীয় ঐক্যের পথে জামায়াতে ইসলামীকে সব সময় বড় বাধা হিসেবে উল্লেখ করছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার ক্ষেত্রে একটি রাজনৈতিক দল বড় প্রতিবন্ধকতা বলে মনে হয়। কিন্তু যেকোনো মুহূর্তে ক্ষমতাসীন দল ওই দলটিকে নিষিদ্ধ করতে পারে। বর্তমানে রাজনৈতিকভাবে না হলেও দেশের বিরোধী দল বেগম খালেদা জিয়ার দল বিএনপি। তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, ২০ দলের মধ্যে অন্ততপক্ষে এই দলটিকে আর ওইভাবে রাখার কোনো প্রয়োজন নেই। খালেদা জিয়া বুঝতে পেরেছেন, ওই দলটিকে রাখলে যে দায়-দায়িত্ব আসে সেটা তিনি বহন করতে চান না। সুতরাং এই দিক থেকে দেখলে প্রতিবন্ধকতা (জাতীয় ঐক্যের ক্ষেত্রে) নেই।
তিনি আরো বলেন, অন্যদিক থেকে বলবো, জামায়াতে বর্তমানে যারা নেতৃত্বে আছেন, তাদের অধিকাংশের জন্ম একাত্তর সালের পরে। এরাও দেশ ও জাতির অংশ। সুতরাং তাদেরও একটা চিন্তা-ভাবনা থাকা দরকার। জাতীয় ঐক্য যদি তাদের কারণে ব্যর্থ হয়, সেটা তারাই বা চাইবেন কেন? সুতরাং এটা নিয়ে ঝগড়ার কোনো কারণ আছে বলে আমরা মনে করি না।
তবে একই অনুষ্ঠানে ২০ দলীয় জোটের আরেক শরিক জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সভাপতি শফিউল আলম প্রধান বলেন, ‘২০ দলীয় জোটে জামায়াতে ইসলামী ছিল, এখনো আছে।’
এদিকে একই অনুষ্ঠানে দুজনের ভিন্নধর্মী বক্তব্য দেয়ায় অনুষ্ঠানের পর বেশ কয়েকজন সমালোচনাও করেছেন। বিএনপি জামায়াতে ইসলামীকে জোটে রাখবে না ছাড়বে বিষয়টি নিয়ে এত জটিলতা সৃষ্টি না করে স্পষ্ট করা দরকারও বলে কয়েকজন মন্তব্য করেন।
এমএম/আরএস/এমএস