তারেককে নিয়ে বিব্রত খালেদা জিয়া!


প্রকাশিত: ০৩:১৪ পিএম, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৪

সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘রাজাকার’ আখ্যা দিয়ে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান যে মন্তব্য দিয়েছেন সে বিষয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছেন দলটির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তাকে প্রশ্ন করা হয় বঙ্গবন্ধুকে রাজাকার বলে তারেক রহমান যে বক্তব্য দিয়েছেন তার সাথে তিনি একমত কিনা?

তিনি তার জবাব বলেন, তারেক রহমান সরাসরি এমনভাবে বক্তব্য দেয়নি। তিনি তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে এ কথা বলেছেন।

বুধবার সন্ধ্যায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া তার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। এতে প্রায় পৌনে এক ঘন্টা বক্তব্য দেন তিনি। ৩০ মিনিট লিখিত বক্তব্য দেন পরের ১৫ মিনিট সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।

কয়েকজন সংবাদকর্মীর প্রশ্নে জর্জরিত ছিলেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কাছে প্রথম প্রশ্ন ছিল বিএনপি দাবি করছে, আওয়ামী লীগ বলেছিলো গত ৫ জানুয়ারি সাংবিধানিক নিয়ম রক্ষার নির্বাচন হবে। পরে আলোচনার ভিত্তিতে নতুন নির্বাচন দেওয়া হবে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে  গত ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব অস্কার ফার্নান্দেজ তারাঙ্কোর উপস্থিতে যে বৈঠকে হয়েছে তাতে এ সংক্রান্ত কোনো লিখিত অঙ্গীকার আওয়ামী লীগ দিয়েছিলো কি-না ?

বিএনপি চেয়ারপারসন : তারা প্রকাশ্যেই এ কথা বলেছে, এটাই অঙ্গীকার। এ নিয়ে কোনো লিখিত অঙ্গীকার হয়নি।

বিএনপির সম্মানিত ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন শেখ মুজিবুর রহমান রাজাকার ছিলেন। আপনি তার এ বক্তব্যের সঙ্গে একমত কি-না ?

বিএনপি চেয়ারপারসন : তারেক রহমান ভাইস চেয়ারম্যান নয়, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান। সে সরাসরি এমন কোনো কথা বলেননি। সে যা বলেছে, তথ্য উপাত্ত দিয়ে বলেছে। তারেক রহমান বিদেশে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

মাননীয় চেয়ারপারসন আপনি বলেছেন বর্তমান সরকার ধূর্ত এবং অপকৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে। বিএনপির এতো জনসমর্থন থাকা সত্ত্বেও আপনারা তাদের অপকৌশল মোকাবিলা করতে ব্যর্থ কি-না ?

বিএনপি চেয়ারপারসন : রাজনীতি হচ্ছে কৌশল, অপকৌশল নয়। বিএনপি সন্ত্রাসের রাজনীতি করে না।

মাননীয় চেয়ারপারসন আপনার দলের শীর্ষ নেতাদের রাজপথে দেখা যায় না, আপনিও কেবল নিজের বাসভবন এবং রাজনৈতিক কার্যালয়ে অবস্থান করে সেখান থেকে হুমকি-ধামকি দিয়েছে। আপনাকেও রাজপথে দেখা যায়নি।

বিএনপি চেয়ারপারসন : জনগণের সাথে ছিলাম, আছি, থাকবো। সময় হলে রাজপথে থাকবো। নেতারা রাজপথে থাকে না এটা এজেন্টদের খবর। অনেক সময় আপনারা তা প্রকাশে বাধ্য হন।

মাননীয় চেয়ারপারসন আপনার ৭ দফা প্রস্তাবনা না মানলে কী করবেন ?

বিএনপি চেয়ারপারসন : আমরা সরকারকে প্রস্তাব দিয়েছি। এ সরকার অবৈধ হলেও এদের সাথেই আলোচনা করতে হবে। এখন এই সরকারকেই ঠিক করতে হবে। আলোচনার জন্য রাজি হবে না আন্দোলনের জন্য এগিয়ে যাবে। সেটা সরকারকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

মাননীয় চেয়ারপারসন জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করছে, এ নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে ?  

বিএনপি চেয়ারপারসন : আওয়ামী  লীগ যখন তাদের সঙ্গে আন্দোলন করেছে তখন তো এ কথাটি আপনারা বলেননি।

মাননীয় চেয়ারপারসন তাহলে আপনারা কি আন্দোলনকে প্রাধান্য দিচ্ছেন নাকি আলোচনা ?

বিএনপি চেয়ারপারসন : এখন আমরা যে প্রস্তাব দিয়েছি, সরকারকেই তা ঠিক করতে হবে তারা কি এ প্রস্তাব মেনে আলোচনা করবে কি-না, সরকার মেনে নিলে আলোচনা হতে পারে, এটা সরকারের বিষয়। সরকার অবৈধ হলেও তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে।

মাননীয় চেয়ারপারসন আপনি রাজনৈতিক এবংক রাজবন্দিদের মুক্তি দাবি করেছেন, জামায়াতের শীর্ষ নেতারা মানবতা বিরোধী অপরাধে কারাগারে রয়েছেন

বিএনপি চেয়ারপারসন : আমরা রাজবন্ধী এবং রাজনৈতিক নেতাদের কথা বলেছি। যারা সাজাপ্রাপ্ত রয়েছে আমরা তো বলেছি আমার সুষ্ঠু বিচার চাই।

সাধারণত সংবাদ সম্মেলন হলে বেগম খালেদা জিয়াকে প্রশ্ন করার সুযোগ থাকে না। তবে চলতি বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে যে সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন সেখানে তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন। তার ধারাবাহিকতা এবারও রক্ষা করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।