আইপিএলে নাইট রাইডার্সের এখন পর্যন্ত সেরা ক্রিকেটার যারা
কলকাতা নাইট রাইডার্সে খেলেছেন দেশ-বিদেশের অনেক মহাতারকা। তবে সবাই সমান সাফল্য পাননি। কোনো তারকা হয়তো ধারাবাহিক থাকতে পারেননি। কেউ আবার ভুলে যেতেই চাইবেন বেগুনি জার্সির অভিজ্ঞতা। আবার এই জার্সি গায়ে চাপিয়ে তারকা হয়ে ওঠার উদাহরণও রয়েছে। ফলে, গত এক যুগ ধরে কেকেআরে খেলা সেরা দল বেছে নেয়ার কাজ সহজ নয়। তার মধ্যেই বেছে নেয়া হল ১৩ জনের দল।
-
ওপেনিংয়ে অবশ্যই ব্রেন্ডন ম্যাকালাম। ২০০৮ সালে আইপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচেই বেঙ্গালুরুতে কিউয়ি ওপেনারের বিধ্বংসী ১৫৮ মাতিয়ে দিয়েছিল ক্রিকেট দুনিয়াকে। ঘোষিত করেছিলেন আইপিএলে তার আবির্ভাবকে। ২০০৯ সালের আইপিএলে ম্যাকালাম নেতৃত্বও দেন কেকেআরকে।
-
ওপেনিংয়ে ম্যাকালামের সঙ্গী গৌতম গম্ভীর। এই দলের অধিনায়কও তিনি। দু’বার গম্ভীরের নেতৃত্বে আইপিএলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে কলকাতা। কলকাতার হয়ে আইপিএলে সবচেয়ে বেশি রান গম্ভীরেরই রয়েছে। ৩১.৬১ গড়ে তিনি করেছেন ৩০৬৫ রান। স্ট্রাইক রেট ১২৪.২৮। সাত মৌসুম ধরে তিনি খেলেছেন কলকাতার হয়ে।
-
তিন নম্বরে নামবেন রবিন উথাপ্পা। ম্যাকালাম না চাইলে উইকেটকিপিংয়ের দায়িত্বও পালন করতে পারেন তিনি। কর্নাটকি কেকেআরের হয়ে ৩০.৪৮ গড়ে ২৪৩৯ রান করেছেন। স্ট্রাইক রেট ১৩৬.২৫। ২০১৪ সালে কেকেআরের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার নেপথ্যে বড় অবদান ছিল উথাপ্পার। ৬৬০ রান করে অরেঞ্জ ক্যাপের মালিক হন তিনি।
-
চারে মণীশ পান্ডে। নাইটদের জার্সিতে মিডল অর্ডারে ভরসা জুগিয়েছেন তিনি। ৩১.৭৫ গড়ে তিনি কেকেআরের হয়ে করেছেন ১২৭০ রান। স্ট্রাইক রেট ১২৫.১২। চার মৌসুম ধরে তিনি ধারাবাহিকতা দেখিয়েছেন। ২০১৪ সালের আইপিএল ফাইনালে ম্যাচ-জেতানো ইনিংস খেলেছিলেন কর্নাটকি।
-
এরপর তিন অলরাউন্ডার। পাঁচে আন্দ্রে রাসেল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিগ-হিটিং অলরাউন্ডার একক ক্ষমতাতেই বেশ কিছু ম্যাচ জিতিয়েছেন কলকাতাকে। আইপিএলে কেকেআরের হয়ে ১৩৪২ রান করেছেন তিনি। গড় ৩৫.৩১। স্ট্রাইক রেট চোখ কপালে তোলার মতো ১৮৮.৭৪। অন্তত ১২৫ ডেলিভারি খেলেছেন, আইপিএলে এমন ক্রিকেটারদের মধ্যে এটাই সবচেয়ে বেশি স্ট্রাইক রেট। নিয়েছেন ৫৪ উইকেটও।
-
ছয়ে আর একজন অলরাউন্ডার। ইনি বাংলাদেশের সাকিব আল হাসান। ব্যাটে নির্ভরযোগ্য, বল হাতে কৃপণ। সাকিবের উপস্থিতি ভারসাম্য বাড়াবে দলে। প্রায় সাত বছর কেকেআরে ছিলেন তিনি। কলকাতার দু’বার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার নেপথ্যে ব্যাটে-বলে অবদান ছিল তার।
-
সাতে আরও এক ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার। প্রয়োজনে যিনি ওপেনার হিসেবে নেমেও বড় শট নিতে পারবেন। অবশ্য, সুনীল নারিনের পরিচিত ‘রহস্যময় স্পিনার’ হিসেবে। অফস্পিনারের বল বোঝা রীতিমতো কঠিন ব্যাটসম্যানদের পক্ষে। বেগুনি জার্সিতে ১২২ উইকেট নেয়া নারিন হলেন কলকাতার তুরুপের তাস। কারণ, তার ইকনমি রেট মাত্র ৬.৬৭।
-
আটে আরও এক স্পিনার, তবে ইনি লেগস্পিনার। পীযূষ চাওলা কেকেআরের হয়ে দ্বিতীয় সর্বাধিক উইকেট সংগ্রহকারী। আর কলকাতার হয়ে ভারতীয় বোলারদের মধ্যে তিনিই সর্বাধিক উইকেটের মালিক। ২৭.৮০ গড়ে তিনি নিয়েছেন ৬৬ উইকেট। পাশাপাশি, ব্যাট হাতেও চাপের মুখে দলকে জেতানোর ক্ষমতা ধরেন। যা দেখাও গিয়েছে ২০১৪ সালের ফাইনালে।
-
কলকাতা যেহেতু ইডেনেই হোম ম্যাচ খেলবে, তাই দলে আরও এক জন স্পিনার। চায়নাম্যান কুলদীপ যাদবও রহস্যময়। ২৯.৩৩ গড়ে তিনি কেকেআরের হয়ে নিয়েছেন ৩৯ উইকেট। গত বছর অবশ্য আইপিএলে ভালো বল করতে পারেননি। তবে কুলদীপ যেহেতু রিস্ট স্পিনার, তাই উইকেট নেওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়।
-
উমেশ যাদব শুরু করবেন নতুন বলে। কলকাতার হয়ে তিনি চতুর্থ সর্বাধিক উইকেট শিকারী। ২৯.০২ গড়ে তিনি নিয়েছেন ৪৮ উইকেট। সমস্যা হল, উমেশের ইকনমি রেট একটু বেশি, সাড়ে আটেরও উপরে। ফলে, ডেথ ওভারে তাকে বল না করানোই উচিত হবে।
-
প্রথম এগারোয় অবশ্যই থাকবেন মহম্মদ শামি। ইডেন তার ঘরের মাঠ। আর কলকাতার বোলিং কোচ হিসেবে ওয়াসিম আক্রমকে পাশে পেয়েই বোলার হিসেবে উন্নতি ঘটিয়েছেন শামি। যদিও নাইটরা তার প্রতিভার পুরোপুরি ব্যবহার করেনি। অনেক সময়ই রিজার্ভ বেঞ্চে থাকতে হয়েছে তাকে। তবু কেকেআরের হয়ে খেলেই তো উত্থান, শামিকে বাইরে রাখা যায় নাকি!
-
প্রথম এগারোর বাইরেও দলের কম্বিনেশনের কথা ভেবে থাকছেন দুই ক্রিকেটার। একজন ব্যাটসম্যান, সূর্যকুমার যাদব। যাকে এক সময় ফিনিশার হিসেবে ব্যবহার করেছিল কেকেআর। আর সেই ভূমিকায় মুম্বাইকর সূর্য রীতিমতো সাফল্য পেয়েছিলেন। তাই নারিনকে দিয়ে ওপেন করালে ছয়-সাতে নামতেই পারেন সূর্য।
-
একজন বিদেশিকে বসিয়ে প্রয়োজন হতেই পারে এক্সপ্রেসগতির কোনো পেসারের। আর সেই ভূমিকায় ‘রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস’ সত্যিই লা-জবাব। যা ২০০৮ সালের আইপিএলে বুঝিয়েও দিয়েছিলেন শোয়েব আখতার। তাকে বল হাতে দৌড়ে আসতে দেখাই ব্যাটসম্যানের টেনশন বাড়িয়ে তোলে। তবে চোটপ্রবণতার জন্য শোয়েবকে ব্যবহারের ক্ষেত্রে মুন্সিয়ানা দেখাতে হবে।