কুলির ছেলে থেকে কোটিপতি আইপিএল তারকা হয়েছিলেন যে ক্রিকেটার

ভারতের দরিদ্র তামিল পরিবারে নটরাজনের জন্ম ১৯৯১ সালের ২৭ মে। তামিলনাড়ুর সালে থেকে ৩৬ কিলোমিটার দূরে চিন্নপ্পমপট্টিতে। তার বাবা ছিলেন কুলি। মালবাহকের কাজ করতেন শাড়ি তৈরির কারখানায়। মা রাস্তার ধারে এক চিলতে দোকানে খাবার বিক্রি করতেন।

নুন আনতে পান্তা ফুরিয়ে যাওয়ার এরকম এক পরিবারে নটরাজনের বড় হওয়া পাঁচ ভাইবোনের সঙ্গে। কুড়ি বছর বয়স অবধি তার ক্রিকেটীয় অভিজ্ঞতা বলতে ছিল অলিগলিতে টেনিস বল আর ইটের উইকেট।

পাড়ার ক্রিকেট খেলার সময়েই ক্রিকেটার এ জয়প্রকাশের চোখে পড়ে যান নটরাজন। তিনি চেন্নাইয়ে নিয়ে আসেন নটরাজনকে। সেখানেই জীবনে প্রথম প্রথাগত ক্রিকেট-প্রশিক্ষণ পান তিনি।

বাঁ-হাতি পেসার হিসেবে সুযোগ পান জলি রোভার্স ক্লাবে। এরপর ডাক আসে তামিলনাড়ু প্রিমিয়ার লিগ থেকে। ডিন্ডিগুল ড্রাগনস-এর হয়ে তার পারফরম্যান্স নজর কাড়ে।

প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে নটরাজনের অভিষেক ২০১৫ সালে, বাংলার বিরুদ্ধে, কলকাতায়। এখনও অবধি প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১৬টি ম্যাচে তার মোট উইকেট সংগ্রহ ৪৮টি। রান করেছেন ২৮।

তামিলনাড়ু প্রিমিয়ার লিগ-এর ৭ ম্যাচে ১০ উইকেট এবং ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফরম্যান্স দেখে তাকে বলা হত ‘ভারতের মুস্তাফিজুর রহমান’। ২০১৭ সালে তাকে তিন কোটি টাকার বিনিময়ে দলে নেয় কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব। সে বছর তার বেস প্রাইস ছিল মাত্র দশ লাখ টাকা।

কিন্তু প্রত্যাশা জাগিয়েও জীবনের প্রথম আইপিএল অভিযানে ব্যর্থ হন নটরাজন। মোট ৬টি ম্যাচে তার প্রাপ্তি মাত্র ২ টি উইকেট।

কনুইয়ে চোটের জন্য ২০১৭-১৮ সালের রনজি মরসুম খেলতে পারেননি নটরাজন। তারপরেও সুযোগের ভাগ্য তাকে বিমুখ করেনি। ২০১৮ সালের আইপিএল-এ তাকে নেয় সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। তবে এবার নিলামে তার দর উঠেছিল মাত্র ৪০ লাখ টাকা। বেস প্রাইস ৪০ লাখেই তাকে দলে নেয় হায়দরাবাদ।

নিজের আইপিএল-এর দ্বিতীয় মরসুমে একটা ম্যাচও খেলেননি নটরাজন। শুরু থেকে শেষ অবধি তাকে সন্তুষ্ট থাকতে হয় রিজার্ভ বেঞ্চে বসেই।

আইপিএল ২০১৯ সালেও নটরাজন আছেন সানরাইজার্স হায়দারবাদেই। তাকে দলেই রেখে দিয়েছিল হায়দরাবাদ।

নটরাজন বলেছিলেন, আইপিএল তার জীবন আমূল পাল্টে দিয়েছে। কিন্তু অন্ধকার থেকে আলোয় এসেও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি তিনি। এবার কি সুযোগ পেলে নিজের প্রতিভার প্রতি সুবিচার করতে পারবেন তিনি? অপেক্ষায় তার পরিবার। অপেক্ষায় আইপিএল-ভক্তরাও।