বিশ্বকাপ ক্রিকেটের আগে যে দিকগুলো চিন্তায় রাখছে ভারত
প্রথমে অস্ট্রেলিয়া পরে নিউজিল্যান্ড। বিদেশের মাটিতে মোটের উপর ভালো এগোচ্ছিল ভারতীয় দল। কিন্তু, তাদের দেশের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে একদিনের সিরিজ হারার পর রীতিমতো ঘন হয়ে উঠল আশঙ্কার মেঘ। বিশ্বকাপের আগে বেশ কিছু প্রশ্ন উঠে গেল। যা নিয়ে রীতিমতো চিন্তায় রয়েছেন কোহলি-শাস্ত্রীরা।
-
শিখর ধাওয়ান: দলের দুই ওপেনারের ধারাবাহিকতা কোহলির বড় চিন্তার কারণ। শিখরের ব্যাট থেকে দু-একটা বড় ইনিংস এলেও ধারাবাহিতা নেই। দায়সারা শট নিয়ে আউট হতেও দেখা গিয়েছে বার বার।
-
রোহিত শর্মা: ধারাবাহিকতা শিখরের মতো রোহিতের ক্ষেত্রেও বড় সমস্যা। ক্রিজে জমে গেলে বড় রান আসবে। কিন্তু, অনেক সময় শুরুতেই ফিরে যাচ্ছেন। ইংল্যান্ডের পরিবেশে ওপেনারদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হবেই। সেখানে শিখর-রোহিতের ধারাবাহিকতার অভাব, দলের মাথা ব্যথার বড় কারণ।
-
কোহলি নির্ভরতা: এক সময় ভারতীয় দল ছিল বড্ড বেশি শচীন নির্ভর। আর এখন দলটা কোহলি নির্ভর। সব ম্যাচে বিরাট রান পাবেন এটা হতে পারে না। আর তিনি অল্প রানে আউট হলেই চাপে পড়ে যাচ্ছে দল। বিশেষ করে রান তাড়া করার ক্ষেত্রে কোহালির উপর নির্ভরতা ক্রমেই প্রকট হচ্ছে।
-
চার নম্বর: চার নম্বরে কে নামবেন? রায়ুডু-পন্থ-শঙ্কর না কি কোহালি-ধোনির মধ্যে কেউ? অজিদের বিরুদ্ধে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের হতশ্রী পারফরম্যান্স সেই প্রশ্নের কোনো উত্তর দিতে পারল না। বিশ্বকাপের মতো প্রতিযোগিতায় চার নম্বর জায়গার গুরুত্ব নতুন করে বোঝার কিছু নেই। কিন্তু, এই ¯øটের কোনো ভরসার ব্যাটসম্যান পাওয়া গেল না।
-
মিডল অর্ডারের ব্যর্থতা: রোহিত-শিখর-বিরাট প্রথম তিন জনের মধ্যে যে কোনো দু’জন সফল হলে দলের রান ভাল জায়গায় চলে যাবে। চাপ না থাকলে মিডল অর্ডারও দারুণ খেলবে। কিন্তু, উল্টোটা হলেই মিডল অর্ডারের কঙ্কালসার চেহারা উন্মুক্ত হয়ে যাচ্ছে। চাপের মধ্যে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অভাব দেখা যাচ্ছে মিডল অর্ডারের।
-
ব্যর্থ পান্থ: এক সময় ঋষভ পান্থকে ধোনির বিকল্প ভাবা শুরু হয়েছিল। তারা যে কতটা ভুল, তা প্রমাণ করে দিলেন পান্থ নিজেই। কিপিংয়ে তিনি ধোনির ধারাকাছে নন। আর ব্যাট হাতে দু-একটা ভালো ইনিংস থাকলেও তা ম্যাচ জেতানোর জন্য যথেষ্ট নয়।
-
ধোনির অভাব: উইকেটের পিছনে ধোনির উপস্থিতি কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা ভালোভাবে বোঝা গেল সিরিজে। সঙ্গে অবশ্যই রয়েছে তার অভিজ্ঞতা। বিশেষ করে সিরিজের শেষ ম্যাচে বেশ অসহায় লেগেছে অধিনায়ক কোহলিকে। ধোনি মাঠে থাকলে তার থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ পান বিরাট। কোনো সময় ধোনি মাঠে না থাকলে কী হবে? উত্তর নেই।
-
ভালো ফিনিশার: বিশ্বকাপের আগে ভারত কিন্তু নতুন ফিনিশারও তুলে আনতে পারল না। মহেন্দ্র সিংহ ধোনি অবশ্য দলে ফিরে আসবেন। কেদার যাদব খারাপ খেলছেন না। কিন্তু প্রয়োজনে বড় শট কতটা নিতে পারবেন, প্রশ্ন থাকেই গেল। চোট সারিয়ে হার্দিক পান্ডে প্রবল চাপের মুখে কেমন খেলবেন, তাও জল্পনা।
-
কুল-চা রহস্য: গত এক বছরে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে দলকে ভরসা দিয়েছেন কুলদীপ এবং চহাল। এই দুই তরুণ স্পিনারের কাঁধে ভর করে বহু ম্যাচ পকেটে পুরেছেন কোহালিরা। কিন্তু, কেমন যেন তাল কাটা লাগল দুই জনকেই। তা হলে কি কুল-চা রহস্য ভেদ হয়ে গিয়েছে? বিশ্বকাপের আগে কোহালিদের কিন্তু মোটেই স্বস্তি দেবে না বিষয়টা।
-
পেস আক্রমণ: বুমরা-শামি-ভুবিদের নিয়ে গড়া পেস আক্রমণ যথেষ্ট সমীহ আদায় করে নিয়েছিল। কিন্তু, বিশ্বকাপের আগে সেই ত্রয়ীদেরও ছন্দে মনে হল না। ভুবিকে বেশ ছন্নছাড়া মনে হল। ইংল্যান্ডের পরিবেশে এই তিন পেসারের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হবেই।
-
বিকল্প পেসার: বুমরা-শামি-ভুবিদের বিকল্প হতে পারেন এমন পেসার দলে নেই। কোনো এক জন চোট পেলে কে তার বিকল্প হবেন, কোনো উত্তর নেই। মহম্মদ সিরাজ-বিজয় শঙ্কর বা হার্দিক পান্ডে, বিকল্প হয়ে উঠতে পারছেন না কেউই।