যে কারণে গাড়ির চাকা কালো রঙের হয়
প্রতিদিনই আমরা সাইকেল, বাস, অটো বা ট্যাক্সিতে যাতায়াত করি। কিন্তু কেউ কি কখনো ভেবে দেখেছেন সব যানবাহনের চাকা কালো। কেন চাকা কালো হয় তা জেনে নিন।
-
চাকা ছাড়া গাড়ি এগোবে না একটুও। যারা গাড়ি ব্যবহার করেন বা যানবাহন সম্পর্কে সচেতন, তারা সবাই জানেন টায়ারের গ্রিপ রাস্তায় দ্রুত গতিতে চলা গাড়িকে পিছলে যাওয়া থেকে রক্ষা করে।
-
গাড়ি তো বিভিন্ন রঙের হয়, তা হলে টায়ার কেন অন্য কোনো রংয়ের হয় না? ইতিহাস কিন্তু বলছে, টায়ারের রং কিছু ক্ষেত্রে আগে সাদা ছিল।
-
আগে টায়ারের এই সাদা রংকে আভিজাত্যের প্রতীক বলে মনে করা হত। ‘ক্লাসিক’ গাড়ির পরিচয় ছিল এই সাদা টায়ার। পরিষ্কার করার জন্যও তাই নিতে হত বিশেষ সাবধানতা।
-
টায়ার তৈরি হয় রাবার দিয়ে, যার রং হয় হালকা ধূসর। এর সঙ্গে টায়ার মজবুত করতে আগে মেশানো হতো জিঙ্ক অক্সাইড। যার ফলে টায়ার হয়ে যেত সাদা। কিন্তু এখনও তো জিঙ্ক অক্সাইড মেশানো হয়, তা হলে এই বদলের সিদ্ধান্ত কেন হল? তার পিছনে রয়েছে এক গল্প।
-
টায়ারের এই রং বদলের বিষয়টি প্রথম লক্ষ্য করেন এক সাংবাদিক ডেভিড ট্রেসি। ডেট্রয়েডের ‘ফোর্ড পিকিউ অ্যাভিনিউ প্লান্ট মিউজিয়াম’-এ ফোর্ড গাড়ির একটি মডেলে দেখেন সাদা টায়ারের। খোঁজ নিলে জানতে পারেন টায়ার প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলো ১৯১৭ সাল থেকে টায়ার প্রস্তুতকরণে কার্বন ব্লাকের ব্যবহার শুরু করেন।
-
কার্বন ব্লাক হল মৌলিক কার্বন যা গ্যাস বা তেলের অসম্পূর্ণ জ্বলনের ফলে সৃষ্টি হয়। এটি টায়ারকে ইউভি রশ্মি থেকে রক্ষা করে, যার ফলে অতিরিক্ত গরমেও টায়ার ফেটে কোনো বিপত্তি ঘটে না। কার্বন ব্লাক ব্যবহারে টায়ারের কর্মক্ষমতাও বৃদ্ধি পায় আগের তুলনায়।
-
কার্বন কার্বন ব্লাক হল মৌলিক কার্বন যা গ্যাস বা তেলের অসম্পূর্ণ জ্বলনের ফলে সৃষ্টি হয়। এটি টায়ারকে ইউভি রশ্মি থেকে রক্ষা করে, যার ফলে অতিরিক্ত গরমেও টায়ার ফেটে কোনো বিপত্তি ঘটে না। কার্বন ব্লাক ব্যবহারে টায়ারের কর্মক্ষমতাও বৃদ্ধি পায় আগের তুলনায়। হল মৌলিক কার্বন যা গ্যাস বা তেলের অসম্পূর্ণ জ্বলনের ফলে সৃষ্টি হয়। এটি টায়ারকে অতিবেগুনি রশ্মি থেকে রক্ষা করে। যার ফলে অতিরিক্ত গরমেও টায়ার ফেটে বিপত্তি ঘটে না।
-
সংস্থাগুলোর দাবি, আগে যে সব টায়ারে কার্বন ব্লাক ব্যবহার করা হত না, সেগুলো পাঁচ হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত ভালো অবস্থায় চলত। কার্বন ব্লাক ব্যবহার শুরু করার পর টায়ারগুলো এখন চলে প্রায় ৫০ হাজার কিলোমিটার।
-
তবে কার্বন ব্লাক ব্যবহারের পিছনে রয়েছে অন্য একটি কারণও। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় বুলেট তৈরি করতে প্রয়োজন পড়েছিল প্রচুর পরিমাণে জিঙ্ক ওক্সাইডের। তাই টায়ার প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলো এক রকম বাধ্য হয়েই কার্বন ব্লাকের ব্যবহার শুরু করেন।
-
প্রথম কার্বন ব্লাক কেমিক্যাল বিক্রি শুরু করে বিনি অ্যান্ড স্মিথ কোম্পানি, যা কেনে টায়ার প্রস্তুতকারক সংস্থা বি এফ গুডরিচ কোম্পানি। বিনি অ্যান্ড স্মিথ কোম্পানি মূলত রং, পেনসিল ও পেনের কালি প্রস্তুতকারক সংস্থা হিসাবেই পরিচিত।
-
এরপর থেকেই কার্বন ব্লাক ব্যবহার করা শুরু হয় টায়ারে। যদি এখনও কার্বন ব্লাকের সঙ্গে সামান্য পরিমাণ জিঙ্ক ওক্সাইড ব্যবহার করেই টায়ার তৈরি করা হয়। বর্তমানে প্রায় ৭০ শতাংশ কার্বন ব্লাকই টায়ার প্রস্তুত করাতে ব্যবহৃত হয়।
-
টায়ারের উপর পরীক্ষা নিরীক্ষা চালানোর ইতি কিন্তু এখানেই শেষ হয়নি। আরো খরচ কমানোর জন্য টায়ার কোম্পানিগুলো কেবল কার্বন ব্লাক ব্যবহার করে নতুন টায়ার তৈরি করেন, যার মাঝখান কালো ও পাশগুলো সাদা রঙের ছিল। এখনও অনেক গাড়িতে এই ধরনের টায়ারের ব্যবহার দেখা যায়।