ভুল করে যেসব জিনিস আবিষ্কার হয়েছে
একটি জিনিস আবিষ্কার করতে গিয়ে আরেকটি জিনিস আবিষ্কার করে ফেলেছেন বিজ্ঞানীরা। তবে সেই আবিষ্কার ফেলনা হয়নি। মানুষের জীবন এসব আবিষ্কার সহজ করে দিয়েছে। জেনে নিন সেসব আবিষ্কার সম্পর্কে।
-
রান্নাঘরে নন-স্টিক প্যানের ব্যবহার আমাদের সকলেরই জানা। এই আবিষ্কারের পিছনে রয় প্লাঙ্কেটের হাত রয়েছে। কিন্তু তার আসল উদ্দেশ্য রান্না করার পাত্র তৈরি ছিল না।
-
উন্নতমানের ক্লোরোফ্লুরো কার্বন বানাতে চেয়েছিলেন তিনি। তার পরিবর্তে উচ্চ গলনাঙ্কবিশিষ্ট পদার্থ তৈরি করে ফেলেন। এই নতুন আবিষ্কার কী কাজে লাগতে পারে তা ভাবতে গিয়ে বানিয়ে ফেলেন নন-স্টিক প্যান। ছবি: সংগৃহীত
-
১৮৫৩ সালে নিউইয়র্কের এক রেস্তরাঁর রাঁধুনির সঙ্গে তুমুল বচসা বাধে এক ক্রেতার। বার বার তিনি বলছিলেন, ফ্রেঞ্চ ফ্রাইয়ের আলু খুব মোটা করে কাটা হচ্ছে, আরও পাতলা করতে হবে। ছবি: সংগৃহীত
-
পরে শেফ জর্জ ক্রাম ক্রেতাকে সন্তুষ্ট করতে ভুলবশত খুব সরু করে আলু কেটে ফেলেন। তারপর তেলে ভেজে আলুভাজায় লবণ ছড়িয়ে তা পরিবেশন করেন। পরে তা পট্যাটো চিপস আকার ধারণ করে। তখন থেকেই খাদ্যতালিকায় ‘পট্যাটো চিপস’ অন্তর্ভুক্ত হয়। ছবি: সংগৃহীত
-
১৯৪৫ সালে পার্সি স্পেনসার নামে এক বিজ্ঞানী ম্যাগনেট্রন (মাইক্রোওয়েভ তরঙ্গ নিঃসরণকারী টিউব) নিয়ে গবেষণা করছিলেন। ছবি: সংগৃহীত
-
গবেষণা ভুল পথে এগোলেও স্পেনসারের এমন যন্ত্র বানানোর কথা মাথায় আসে যার ভিতর কোনো খাদ্যদ্রব্য রাখলে গরম করা যাবে। এই পদ্ধতিকে কাজে লাগিয়ে মাইক্রোওয়েভ ওভেন বানিয়ে ফেলেন পার্সি। ছবি: সংগৃহীত
-
স্পেনসার সিলভার ভেবেছিলেন, তার গবেষণাগারেই একটি আঠা জাতীয় পদার্থ তৈরি করবেন। কিন্তু তার গবেষণা সফল হয়নি। তিনি এমন এক থকথকে পদার্থ তৈরি করলেন যা খুব আঠালো নয়। জিনিসের সঙ্গে আলগোছে লেগে থাকলেও সামান্য টান দিলেই তা খুলে বেরিয়ে আসে। ছবি: সংগৃহীত
-
পরবর্তীকালে আর্ট ফ্রাই নামে আর এক বিজ্ঞানী তার এই আবিষ্কারকে কাজে লাগিয়ে ছোট ছোট কাগজে লাগিয়ে রাখতেন। নিজের প্রয়োজনে ব্যবহারও করতেন তিনি। ব্যাস! নিজের অজান্তেই আর্ট ফ্রাই তৈরি করে ফেললেন ‘পোস্ট-ইট নোটস’। ছবি: সংগৃহীত
-
এক বিখ্যাত কর্নফ্লেক্স উৎপাদনকারী সংস্থা নিজেদের ভুলেই কর্নফ্লেক্স বানিয়ে ফেলেছিলেন। জন এবং উইল, যারা ‘কেলগ ব্রাদার্স’ নামে বেশি পরিচিত, তারা সিদ্ধ করা শস্য ভুল করে স্টোভের উপর রেখে চলে যান। বেশ কয়েকদিন পর ফিরে এসে দেখেন শস্যদানাগুলো ভাজা অবস্থাতেও খেতে সুস্বাদু। আর এই ভুলের কারণে আবিষ্কার হয়ে যায় কর্নফ্লেক্সের মতো সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর খাদ্য। ছবি: সংগৃহীত
-
পেনিসিলিন আবিষ্কারের সঙ্গে আলেকজান্ডার ফ্লেমিংয়ের নাম ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কিন্তু এই আবিষ্কারের পেছনেও রয়েছে রহস্য। বিজ্ঞানী তার গবেষণাগারে স্ট্যাফিলোকক্কাস অরিয়াস নামে একটি ব্যাকটেরিয়ার কালচার করছিলেন। ছবি: সংগৃহীত
-
দুসপ্তাহ পর তিনি ফিরে এসে দেখেন, ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি তো হয়ইনি, বরং তার বৃদ্ধিরোধ করতে অন্য এক ছত্রাক তৈরি হয়েছে। এক ব্যাকটেরিয়ার উপর গবেষণা করতে গিয়ে তিনি খোঁজ পেয়ে যান পেনিসিলিয়াম নোটেটামের। আর সেখান থেকেই তিনি বানিয়ে ফেলেন পেনিসিলিন। ছবি: সংগৃহীত
-
ইচিরো এন্ডো নামের এক ইঞ্জিনিয়ার ইঙ্ক পেনের উপর ভুল করে গরম লোহা চাপিয়ে দেন। কিছুক্ষণ পর তিনি লক্ষ করেন, কলম থেকে উচ্চ তাপমাত্রা এবং চাপের ফলে কালি গড়িয়ে পড়ছে। এই ঘটনা থেকেই তার মাথায় ‘ইঙ্ক জেট প্রিন্টার’ তৈরির পরিকল্পনা আসে। ছবি: সংগৃহীত
-
উচ্চ রক্তচাপ জাতীয় রোগ প্রতিরোধ তৈরির ওষুধ তৈরির সময় সংস্থা থেকে পরীক্ষা করা শুরু হয় যে তা হৃৎপিণ্ডের উপর কোনো প্রভাব ফেলছে কি না। কিন্তু পরীক্ষা করতে দেখা যায়, তা যৌন উদ্দীপনা বাড়াতে সাহায্য করছে। ছবি: সংগৃহীত
-
এক ডাচ জাহাজের মাস্টার ভেবেছিলেন তিন এমন পদ্ধতিতে ওয়াইন তৈরি করবেন যা খুব সহজেই যে কোনো জায়গায় নিয়ে যাওয়া যায়। তাই তিনি ওয়াইনকে গরম করে তার মধ্যে পানি মিশিয়ে দেন। এর স্বাদ আসল ওয়াইনের থেকেও পছন্দ হয়ে যায় তার। শুরুর দিকে একে ‘পোড়া ওয়াইন’ বললেও পরে এই পদ্ধতি অনুসরণ করে ব্র্যান্ডি তৈরি করা হয়। ছবি: সংগৃহীত
-
১৮২৬ সালে জন ওয়াকার নামে এক ব্রিটিশ রসায়নবিদ ভুল করে দেশলাই আবিষ্কার করে ফেলেন। তার গবেষণাগারে বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থের সঙ্গে একটি কাঠের টুকরো মিশে যায়। পরে তাতে ঘষা লাগায় হঠাৎ আগুন জ্বলে ওঠে। এই ঘটনা দেখেই তিনি দেশলাই আবিষ্কারের পরিকল্পনা করেন। ছবি: সংগৃহীত
-
জন পেম্বারটন নামে এক ফার্মাসিস্ট মাথা যন্ত্রণা কমানোর জন্য ওয়াইনের সঙ্গে কোকা সিরাপ মিশিয়ে এক ধরনের পানীয় তৈরি করেন। পরবর্তীকালে মদের উপর নিষেধাজ্ঞা আনায় তিনি কার্বনেট মেশানো পানির সঙ্গে এই কোকা সিরাপ মিশিয়ে সোডা বানানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু এর স্বাদ লক্ষ করে তিনি বাজারে আর সোডা নয়, ‘কোকা কোলা’ নামের একটি বিশেষ পানীয় নিয়ে আসেন।
-
১৯০৩ সালে এডওয়ার্ড বেনেডিক্টাস নামের এক রসায়নবিদ গবেষণাগারে কাজ করতে গিয়ে তার হাত থেকে হঠাৎ করে কাচ মেঝেতে পড়ে যায়। তিনি ভাবেন, কাচটি ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছে। কিন্তু তিনি দেখলেন, কাচের কোনো ভাঙা টুকরো মেঝেতে পড়ে নেই। কাচটি একেবারে আস্ত অবস্থাতেই রয়েছে। ছবি: সংগৃহীত
-
কাচের মধ্যে সামান্য ফাটল ধরেছে মাত্র। পড়ার ফলে কাচের আকারেও কোনো পরিবর্তন আসেনি। এর কারণ পরীক্ষা করতে গিয়ে তিনি আবিষ্কার করেন, কাচের মধ্যে ভুলবশত সেলুলোজ নাইট্রেট পড়ে যায়। সেই মিশ্রণের কারণেই কাচের এই বদল। এই ঘটনা থেকেই তিনি সেফটি গ্লাস আবিষ্কার করেন যা পড়ে গেলেও ভাঙবে না। ছবি: সংগৃহীত