যে ৭ নীতি মেনে চলে পাখির রাজা ঈগল
ঈগল শক্তিধর, দক্ষ শিকারি পাখি। এমনকি ঈগলকে পাখির রাজাও বলা হয়। বানর, ছোট জাতের পাখি, টিকটিকি, হাঁস-মুরগি খেয়ে জীবনধারণ করে থাকে। একটি পূর্ণবয়স্ক ঈগলের ওজন প্রায় ৩০ কেজি এবং লম্বায় প্রায় ৩০-৩৫ ইঞ্চি হয়ে থাকে। এছাড়া একটি পূর্ণবয়স্ক সুস্থ ঈগল ১১ হাজার ফুট ওপরে উঠতে পারে। এরা জনমানব এলাকার বাইরে ও কমপক্ষে ১০০ ফুট ওপরে বাসা তৈরি করে প্রজনন ঘটায়।
-
ঈগলের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার তাদের পায়ের নখ। নখগুলো এতই তীক্ষ্ণ যে নিমিষের মধ্যে শিকারকে ছিন্নভিন্ন করে দেয়। তবে এরা এখন বিলুপ্তির পথে। বাংলাদেশে এদের দেখা পাওয়া যায়না বললেই চলে। তবে বাংলাদেশে একসময় সাদা বুকের সমুদ্র ঈগল, কুড়া বা পলাশ মেছো ঈগল, কুল্লে বা সাপখেকো ঝুঁটি ঈগল, ছোট নখের ঈগল দেখা যেতো কিন্তু এখন তারা বিলুপ্তির পথে। ছবি: সংগৃহীত
-
ঈগল যেই উচ্চতায় উড়ে বেড়ায়, সেই উচ্চতায় অন্য কোনো পাখি পৌঁছাতে পারে না। এজন্যেই ঈগল একা উড়ে বেড়ায়। ছবি: সংগৃহীত
-
ঈগলের দৃষ্টিশক্তি এতটাই তীক্ষ্ণ যে আকাশে থাকা অবস্থায় ৫ কিলোমিটার পর্যন্ত স্পষ্ট দেখতে পায়। ঈগল যখন তার শিকার খোঁজে বের হয় তখন সে তার তীক্ষ্ণ দৃষ্টি সেটার ওপরেই দেয়। যত বাধাই আসুক না কেন, সেটিকে না পাওয়া পর্যন্ত ঈগল কোনোভাবেই তার চোখ সরায় না। ছবি: সংগৃহীত
-
ঈগল সব সময় জীবন্ত প্রাণীকে খাবার হিসেবে খেয়ে থাকে। কখনোই কোনো মৃত জিনিস তারা ভক্ষণ করে না। ছবি: সংগৃহীত
-
ঈগল ঝড়কে এড়িয়ে না গিয়ে ঝড়ের বেগকে কাজে লাগিয়ে উঁচুতে উড়ে যায়। অন্যান্য পাখিরা যখন পাতা ও গাছের আড়ালে লুকিয়ে থাকে, ঈগল তখন ঝড়ের বিরুদ্ধে তার ডানা ঝাপটে যায় এবং ঝড়ের বেগকেই কাজে লাগিয়ে মেঘকে ভেদ করে ওপরে উঠে যায়। এমনকি একবার বাতাসের বেগ পেয়ে গেলেই ঈগল তার ডানা ঝাপটানো বন্ধ করে দেয় এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবেই ওপরে যেতে থাকে। ঝড়কে যেন সে খুব ভালবাসে। ছবি: সংগৃহীত
-
একটা মেয়ে ও ছেলে ঈগল যদি কখনো বন্ধু হতে চায়, মেয়ে ঈগলটি প্রথমেই ছেলে ঈগলটির পরীক্ষা নেয়। সাক্ষাৎ হওয়ার পর মেয়ে ঈগলটি মাটিতে নেমে এসে গাছের একটি ডাল তুলে নেয়। তার পিছে পিছে ছেলে ঈগলটিও উড়ে যায়। মেয়ে ঈগলটি সেই ডাল নিয়ে ওপরের দিকে উড়ে যায় এবং একটি নির্দিষ্ট উচ্চতায় যাওয়ার পর গাছের সেই ডালটি নিচে ফেলে দেয়। তার পিছু নেওয়া সেই ছেলে ঈগলটি তা দেখে ডালটি ধরার জন্য দ্রুত নিচের দিকে যায়। ডালটি সে মেয়ে ঈগলের কাছে ফিরিয়ে আনে। ছবি: সংগৃহীত
-
এই কার্যক্রমের পুনরাবৃত্তি কয়েক ঘণ্টা ধরে হতেই থাকে যতক্ষণ না পর্যন্ত মেয়ে ঈগল আশ্বস্ত হয় যে ছেলে ঈগলটি এই ডাল ফিরিয়ে আনার কাজটি আত্মস্থ করতে পেরেছে। একমাত্র ‘প্রতিজ্ঞাবদ্ধতার’ পরিচয় দিতে পারলেই পরে তারা দুজন বন্ধু হতে পারে। ছবি: সংগৃহীত
-
ডিম পাড়ার সময় আসলে বাবা ও মা ঈগল পাহাড়ের এমন একটি জায়গা বেছে নেয় যেখানে কোনো শিকারির হামলা করার সুযোগ থাকে না। বাসা তৈরির পালা আসলে ছেলে ঈগল এই বাসা নির্মাণের জন্য প্রথমে কিছু কাঁটা বিছায়, তার উপর গাছের ছোট ছোট ডালা, তার উপর আবার কিছু কাঁটা দিয়ে একদম শেষে কিছু নরম ঘাস বিছিয়ে দেয়। ছোট্ট আবাসটির নিরাপত্তার জন্য বাইরের দিকে তারা কাঁটা ও শক্ত ডালা বিছিয়ে রাখে। ছবি: সংগৃহীত
-
বাচ্চা ঈগলগুলোর যখন উড়তে শেখার সময় হয়, মা ঈগল তাদের বাইরে ছুঁড়ে দেয় কিন্তু পড়ে যাওয়ার ভয়ে ছানাগুলো ফিরে আসে। মা ঈগল এবার সব নরম ঘাস সরিয়ে ফেলে পুনরায় তাদের বাইরে ছুঁড়ে দেয়। আর তাই ছানাগুলো যখন ফিরে আসে, কাঁটার সাথে আঘাত পেয়ে তারা নিজেই বাইরে ঝাঁপ দেয়। এবার বাবা ঈগল নিয়োজিত হয় তাদের উদ্ধারকাজে। নিচে পড়ে যাওয়ার আগেই সে তার পিঠে করে ছানাগুলোকে ফিরিয়ে নিয়ে আসে। যতদিন পর্যন্ত ছানাগুলো তাদের ডানা ঝাপটানো না শুরু করে, এই প্রক্রিয়া চলতেই থাকে। ছবি: সংগৃহীত
-
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঈগল পাখির ডানার পালকগুলো দুর্বল হয়ে পরে, যে কারণে সে আগের মতো খুব দ্রুত গতিতে উড়তে পারে না। দুর্বল বোধ করলে সে এমন একটি জায়গায় আশ্রয় নেয় যেখানে পাথর রয়েছে। সেখানে সে তার শরীরের প্রতিটি পালক টেনে ছিঁড়ে ও উঠিয়ে ফেলে। নতুন পালক না গজানো পর্যন্ত সেই দুর্বল ঈগল কোথাও বের হয় না। নতুন পালক গজিয়ে গেলে সে পুনরায় বজ্র গতিতে উড়ে বেড়ায়। ছবি: সংগৃহীত