কালোজিরার ফুল-মৌমাছির দখলে শরীয়তপুর
শরীয়তপুরের বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ এখন কালোজিরার হালকা নীলাভ ফুলের দখলে। এই ফুলকে উপলক্ষ করে জমিগুলোর পাশেই বসানো হয়েছে সারি সারি মৌবাক্স।
-
ফুলের পাপড়ির মাঝে রেণু থেকে মধু সংগ্রহ করছে মৌমাছি, আর মৌচাষিরা ব্যস্ত মৌবাক্সের পরিচর্যা আর মধু আহরণে। ছবি: বিধান মজুমদার
-
একদিকে ঔষধি গুণসম্পন্ন হওয়ায় কালোজিরার মধুর ভালো দাম পাচ্ছেন মৌচাষিরা, অন্যদিকে জমির পাশে মৌবাক্স বসানোয় ফলন হচ্ছে প্রায় দ্বিগুণ। এতে খুশি স্থানীয় কৃষক ও বিভিন্ন জেলা থেকে আসা মৌচাষিরা। ছবি: বিধান মজুমদার
-
জানা গেছে, জেলায় মোট মৌ খামার রয়েছে ৩০টি। প্রতিটি খামারের ৫০ থেকে ২০০টি পর্যন্ত মৌবাক্স রয়েছে। ছবি: বিধান মজুমদার
-
তবে অন্যসব জেলা থেকে আসা মৌচাষিদের মিলে মোট ৯ হাজার ৫৮০টি মৌবাক্স রয়েছে। ছবি: বিধান মজুমদার
-
চলতি মৌসুমে জেলায় ১৫ হাজার কেজি কালোজিরার মধু আহরণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। গত মৌসুমে আহরণ করা মধুর পরিমাণ ছিল ১১ হাজার ৩৭০ কেজি। ছবি: বিধান মজুমদার
-
জানা যায়, শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার মুলনা ইউনিয়নের অন্তত ১২টি স্থানে চলছে কালোজিরার মধু আহরণ। ছবি: বিধান মজুমদার
-
এছাড়াও জেলার সেনেরচর, বড় গোপালপুর, পালেরচর, জয়নগর, বিলাশপুর, নড়িয়ার চাকধ এলাকায় রয়েছে কালোজিরার আবাদ ও মৌয়ালদের বিচরণ। ছবি: বিধান মজুমদার
-
এসব জায়গায় মধু আহরণের জন্য সিলেট, শেরপুর, দিনাজপুর, সাতক্ষীরা, মাগুরা, নাটোরসহ বিভিন্ন স্থান থেকে মৌ খামারিরা এসে আস্তানা গেড়েছেন। ছবি: বিধান মজুমদার
-
জাজিরার কয়েকটি মৌ খামারে দেখা যায়, কালোজিরা ক্ষেতের অদূরেই পেতে রাখা হয়েছে সারি সারি বেশ কিছু মৌবাক্স। একটি মৌবাক্স থেকে আরেকটি মৌবাক্সের দূরত্ব প্রায় দেড় হাত। ছবি: বিধান মজুমদার
-
শ্রমিক মৌমাছিরা মধু আহরণ করে মৌবাক্সগুলোর ছিদ্রপথ দিয়ে ঢুকছে জমা করার জন্য। জমা করে আবার বের হয়ে যাচ্ছে মধু সংগ্রহ করার জন্য, তারা বিরামহীনভাবে চালাচ্ছে তাদের এই মধু আহরণের কর্মযজ্ঞ। মৌচাষিরাও মৌবাক্সগুলোর দেখাশোনা করছেন। ছবি: বিধান মজুমদার
-
সিলেট থেকে আসা মো. শাহাবুদ্দীন নামের এক মৌচাষি বলেন, ৩১ বছর ধরে আমি বিভিন্ন জেলায় ঘুরে ঘুরে মধু সংগ্রহ করে থাকি। কালোজিরার মৌসুমে আমি শরীয়তপুরে চলে আসি। এ বছর অনেক জমিতে কালোজিরার চাষ হয়েছে তাই মধুও ভালো পাচ্ছি। ছবি: বিধান মজুমদার
-
আমি ১৫০টি বাক্স বসিয়েছি। এসব দেখাশোনা করতে ৩ জন শ্রমিক কাজ করছে। আমার খামারে প্রতিদিন ২০ কেজি করে মধু পাচ্ছি। কালোজিরার মধুর প্রচুর চাহিদা। আমরা এই মধু ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। এতে আমরা অনেক লাভবান। ছবি: বিধান মজুমদার
-
এদিকে মৌমাছির পরাগায়নের ফলে আগের তুলনায় ফলন হচ্ছে প্রায় দ্বিগুণ। ফলে কালোজিরা আবাদে উৎসাহী হচ্ছেন কৃষকরা। তাইতো জমির পাশেই বসতে দিয়েছেন মৌ চাষিদের। ছবি: বিধান মজুমদার
-
ফয়সাল বেপারী নামের এক স্থানীয় কৃষক বলেন, আগে যখন মৌচাষিরা আসতো তাদের জমিতে বসতে দিতাম না। আমরা আসলে বুঝতাম না জমির পাশে মৌ বাক্স বসালে ফলন ভালো হয়। ছবি: বিধান মজুমদার
-
আমরা মনে করতাম মৌমাছিরা ফসল নষ্ট করে ফেলে। তবে এখন আমরা বুঝি, তাই মৌ চাষিদের এখানে মধু সংগ্রহ করতে দিই। জমির পাশে মৌবাক্স বসায় জমিতে ফলন ও ভালো হচ্ছে। ছবি: বিধান মজুমদার
-
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. রবীআহ নূর আহমেদ বলেন, কালোজিরা আবাদের পর বৃষ্টি হয়ে প্রথম দিকে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল কৃষক। বর্তমানে কালোজিরার ভরা মৌসুম হওয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মৌয়ালরা এসে মধু সংগ্রহ করে বিক্রি করছে। ছবি: বিধান মজুমদার
-
কালোজিরার মধু দেহের বিভিন্ন রোগ উপশমে কাজ করে, এছাড়াও আয়ুর্বেদীতেও এটির বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এখানে আসা সকল মৌয়ালদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। ভবিষ্যতে তারা যেন আরও বেশি আসতে পারে সেজন্য তাদের সব ধরনের সুযোগ সুবিধা দেওয়া হবে। ছবি: বিধান মজুমদার