৫০ কোটি ডলারের মালিক যে মাদক সম্রাট
অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি। মাদক চালান করে ৫০ কোটি ডলারের মালিক হয়েছেন একজন। এখন তাকে চারদিকে তুমুল আলোচনা হচ্ছে। তার সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন।
-
মাদক পাচারের জন্য কুখ্যাত পাবলো এসকোবারকে নিয়ে নানার ধরনের আলোচনা হয়েছে। কিন্তু জানেন কি এসকোবারের মতোই আর এক মারাত্মক মাদকপাচারকারী ছিলেন মেক্সিকোতেই। যাকে নিয়ে গোটা একটা ওয়েব সিরিজ তৈরি হয়েছে। সত্য ঘটনার অনুপ্রেরণায় তৈরি সেই ওয়েব সিরিজ দেখে তার প্রতি সহানুভূতিশীলও হয়েছেন অনেকে। ছবি: সংগৃহীত
-
ওয়েব সিরিজের নাম নারকোজ: মেক্সিকো। তার কেন্দ্রীয় চরিত্র মিগেল অ্যাঞ্জেল ফেলিক্স গালার্দো। এই গালার্দোই ছিলেন মেক্সিকোর মাদক সাম্রাজ্যের মুকুটহীন সম্রাট। তাকে বলা হত ‘এল পেদ্রো’। এই স্প্যানিশ শব্দের ইংরেজি প্রতিশব্দ ‘গড ফাদার’। ছবি: সংগৃহীত
-
মাদক সাম্রাজ্যের বিপুল প্রতিপত্তির জন্যই তার ওই নাম। একই কারণে তাকে ‘বস অফ দ্য বসেস’ও বলা হত। কেন তিনি এত কুখ্যাত? কেনই বা আলোচনায়? ছবি: সংগৃহীত
-
বলা হত, মাদকে ‘সোনা’ ফলাতে পারতেন গালার্দো। মাদক সাম্রাজ্য বিস্তারের পাশাপাশি নিজের সম্পত্তিও বিপুল বাড়িয়ে ফেলেছিলেন তিনি। মজা করে তাকে বলা হয় ‘বিল গেটস অব কোকেন’। তার সম্পত্তির পরিমাণ বাড়তে বাড়তে পৌঁছেছিল ৫০ কোটি ডলারে। ছবি: সংগৃহীত
-
বলা হত, মাদকে ‘সোনা’ ফলাতে পারতেন গালার্দো। মাদক সাম্রাজ্য বিস্তারের পাশাপাশি নিজের সম্পত্তিও বিপুল বাড়িয়ে ফেলেছিলেন তিনি। মজা করে তাকে বলা হয় ‘বিল গেটস অব কোকেন’। তার সম্পত্তির পরিমাণ বাড়তে বাড়তে পৌঁছেছিল ৫০ কোটি ডলারে। ছবি: সংগৃহীত
-
সেই বিপুল সম্পত্তির মালিক, ‘কোকেনের বিল গেটস’-এর ঠিকানা এখন একটি ছয় ফুট বাই আট ফুটের ঘুপচি ঘর। আমেরিকার কারাগারে ৩৭ বছর বন্দি থাকতে হবে তাকে। ছবি: সংগৃহীত
-
অদ্ভুতভাবে গালার্দোর জীবন শুরুও হয়েছিল এমনই একটা ঘুপচি ঘর থেকে। অত্যন্ত গরিব ছিলেন বাবা-মা। যেখানে সরকারি সুযোগ সুবিধা পাওয়াও ছিল প্রায় দুঃসাধ্য। গালার্দো সহানুভূতিকদের মত, এই অতি দারিদ্রই তাকে ভুল পথে টেনে নিয়ে গিয়েছিল। কঠিন আর সঠিক পথের বদলে সহজ উত্তরণের ভুল পথ বেছে নিয়েছিলেন। তাদের মতে, গালার্দো আসলে পরিস্থিতির শিকার। ছবি: সংগৃহীত
-
যদিও গালার্দো নিন্দুকদের বক্তব্য, পরিস্থিতির শিকার হলেও একসময় প্রচণ্ড নৃশংস হয়ে উঠেছিলেন গালার্দো। তার জন্য পরিস্থিতি দায়ী হতে পারে না। ওয়েব সিরিজে তাকে সহানুভূতির আলোয় দেখানো হয়েছে ঠিকই কিন্তু বাস্তবে গালার্দোর গোপন কথা জেনে যাওয়া এক সরকারি গোয়েন্দাকে অমানবিক অত্যাচার করে খুন করা হয়েছিল তারই নির্দেশে। এই খুন থেকেই গালার্দোর জীবনের শেষের অধ্যায় লেখা শুরু হয়। ছবি: সংগৃহীত
-
১৯৪৬ সালে উত্তর পশ্চিম মেক্সিকোর একটি খামারে জন্ম গালার্দোর। মাদক সম্রাট হয়ে একের পর এক আইন ভেঙেছেন গালার্দো। দুর্নীতিগ্রস্ত আইনরক্ষকদের হাতের পুতুল করে রেখেছিলেন দীর্ঘ দিন। অথচ গালার্দো তার চাকরি জীবন শুরু করেছিলেন আইনরক্ষক হিসেবেই। ১৭ বছর বয়সে মেক্সিকোর ফেডারেল জুডিসিয়াল পুলিশ এজেন্ট হিসেবে তিনি সরকারি কাজে যোগ দেন। ছবি: সংগৃহীত
-
ওই বিভাগের অধিকাংশ পুলিশ কর্তাই ছিলেন দুর্নীতিগ্রস্ত। গালার্দো দ্রুত তাদের সংস্পর্শে আসেন। সিনালোয়ার গভর্নরের ব্যক্তিগত দেহরক্ষী ছিলেন তিনি। অন্ধকার জগতের সঙ্গে তার পরিচয় করান আর এক দেহরক্ষী পেড্রো অ্যাভিলেস পেরেজ। কুখ্যাত মাদক পাচারকারী পেরেজ তার হেরোইন এবং মারিজুয়ানা ব্যবসার দায়িত্ব দেন গালার্দোকে। ছবি: সংগৃহীত
-
১৯৭৮ সালে পুলিশের গুলিতে পেরেজের মৃত্যু হলে তার মাদক সাম্রাজ্যের মাথায় বসেন গালার্দো। তৈরি করেন মেক্সিকোর কুখ্যাত মাদক সাম্রাজ্য গুয়াডালাজারা কার্টেল। ‘গড ফাদার’ তকমাও পান। সেই শুরু। ১৯৮০ সালে, দুই বছরের মধ্যেই পেরেজের ব্যবসাকে কয়েক গুণ বাড়িয়ে তোলেন গালার্দো। তার ১৩৪৪ একর মারিজুয়ানো ফলানো জমিতে প্রতি বছর ৮০০ কোটি ডলারের উৎপাদন শুরু হয়। ছবি: সংগৃহীত
-
অঘটন ঘটে ঠিক পাঁচ বছরের মাথায়। গালার্দোর ড্রাগ ব্যবসার খোঁজ পাওয়া এক সরকারি গোয়েন্দাকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়। কিকি কামারেনা নামে ওই গোয়েন্দার খুলি, চোয়াল, নাক এমনকি গালের হাড়ও গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। শ্বাসনালিও থেঁতলে গিয়েছিল। পাঁজরের প্রতিটা হাড় ছিল ভাঙা। আর মাথার ঠিক মাঝ বরাবর একটি গর্ত ছিল, যেটা গুলির নয় বলেই জানিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা। ছবি: সংগৃহীত
-
দেওয়াল ফুটো করার যন্ত্র বা ড্রিল মেশিন দিয়ে মাথায় ওই গর্ত করা হয়েছে বলে অনুমান করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। পুরোপুরি মেরে ফেলার আগে অমানুষিক অত্যাচার করা হয়েছিল কিকির উপর। এই খুনের দায় এসে পড়ে গালার্দোর উপর। ছবি: সংগৃহীত
-
গালার্দো অবশ্য বারবার এই খুনের কথা অস্বীকার করেছেন। জেল থেকে লেখা তার ডায়েরি প্রকাশ করত একটি পত্রিকা। সেখানে খোলাখুলি একাধিক আইন ভাঙার কথা স্বীকার করলেও খুনের কথা মানতে চাননি গালার্দো। ছবি: সংগৃহীত
-
যদিও তাতে কিকির সহকর্মীদের আটকানো যায়নি। আমেরিকার মাদক নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিইএ কর্মীরা সম্ভবত পণ করেছিলেন গালার্দোর শেষ দেখে ছাড়বেন। তারাই গালার্দোর সাধের গুয়ার্ডাজালায় একের পর এক অভিযান চালান। গ্রেফতার করেন মাদক সম্রাটকে। ছবি: সংগৃহীত
-
জেলে থেকেও পরে নিজের সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছিলেন গালার্দো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পেরে ওঠেননি। তার অনুপস্থিতিতে মাথা তুলতে শুরু করে ছোট ছোট মাদক ব্যবসায়ী। ছাড়খাড় হয়ে যায় গুয়াডালাজারা কার্টেল। ছবি: সংগৃহীত