ডিভোর্স দিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারী তিনি
কে কখন, কিভাবে প্রচুর অর্থ প্রতিপত্তির মালিক হবে তা আসলে ধারণা করা মুশকিল। এবার জেনে নিন এই নারী ডিভোর্স দিয়ে যেভাবে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারী হলেন।
-
এশিয়ার আলোচিত বিবাহবিচ্ছেদের ফলে বিশ্বের নারী ধনকুবেরদের তালিকায় যুক্ত হল নতুন এক নাম, যুয়ান লিপিং। তিনি এখন এশিয়ার ধনীতম নারী।
-
য়ুয়ানের প্রাক্তন স্বামী দু ওয়েইমেইন শিল্পপতি। তিনি শেনঝেন কাংতাই বায়োলজিক্যাল প্রোডাক্টস কো-এর চেয়ারম্যান। তিনি সম্প্রতি বিবাহবিচ্ছেদের শর্ত হিসেবে তিনি তার প্রতিষেধক প্রস্তুতকারী সংস্থার ১৬১.৩ মিলিয়ন শেয়ার দিয়েছেন প্রাক্তন স্ত্রীকে।
-
সোমবার শেয়ার বাজার বন্ধ হওয়ার সময় অবধি এই স্টকের আর্থিক অঙ্কের পরিমাণ ছিল ৩২০ কোটি ডলারেরও বেশি।
-
আদতে কানাডার নাগরিক যুয়ান বর্তমানে চিনের শেনঝেন প্রদেশে থাকেন। তিনি কাংতাই বায়োলজিক্যাল প্রোডাক্টস কো-র ডিরেক্টর ছিলেন ২০১১ সালের মে থেকে ২০১৮ সালের আগস্ট অবধি।
-
বর্তমানে যুয়ান অন্য একটি সংস্থার ভাইস জেনারেল ম্যানেজার পদে কর্মরত। ৪৯ বছর বয়সি এই ধনীতম এশিয়াবাসী মহিলা বেজিংয়ের ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস অ্যান্ড ইকনমিক্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক।
-
কাংতাই বায়োলজিক্যাল প্রোডাক্টস-এর শেয়ার গত কয়েক মাস ধরেই ঊর্ধ্বমুখী। গত ফেব্রুয়ারিতে সংস্থার তরফে জানানো হয়, তারা করোনাভাইরাসে প্রতিষেধক আবিষ্কার করার পরিকল্পনা করেছে। এরপরেই বাজারে তাদের শেয়ারের চাহিদা হু হু করে বেড়ে যায়।
-
কিন্তু সংস্থার কর্ণধারের বিচ্ছেদ ঘোষণার পরে শেয়ারবাজারে ধাক্কা খায় এই সংস্থা। প্রভাব পড়েছে দু-এর ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে। ৬৫০ কোটি ডলার থেকে তা নেমে গিয়েছে ৩১০ কোটি ডলারে।
-
৫৬ বছর বয়সি দু-য়ের জন্ম চিনের জিয়াংঝি প্রদেশের এক কৃষক পরিবারে। কলেজে রসায়ন নিয়ে পড়ার পরে ১৯৮৭ সালে তিনি একটি ক্লিনিকে চাকরি করতে শুরু করেন।
-
১৯৯৫ সালে তিনি একটি বায়োটেক সংস্থার সেলস ম্যানেজার হন। অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে ২০০৯ সালে নিজের প্রথম সংস্থা ‘মিনহাই’ শুরু করেন তিনি। ফোর্বস পত্রিকার সাম্প্রতিক তালিকা অনুযায়ী বিচ্ছেদের আগে তিনি বিশ্বের ৩২০ নম্বর ধনকুবের ছিলেন।
-
চীনের অর্থনৈতিক উত্থানের সাম্প্রতিক ইতিহাসে মহার্ঘ বিচ্ছেদের নজির বিরল নয়।
-
২০১২ সালে চিনের ধনীতম নারী ছিলেন উ যাজুন। তিনি বিবাহবিচ্ছেদের সময় তার প্রাক্তন স্বামী কাই কুইকে ২৩০ কোটি ডলার দিয়েছিলেন।
-
তার অনলাইন গেমিং সংস্থার মালিক ধনকুবের ঝোউ ইয়াহুইকে তার প্রাক্তন স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে দিতে হয়েছিল ১১০ কোটি ডলার।
-
জীবনে বিদায় বা বিচ্ছেদও অনেক সময়েই মূল্যবান হয়ে দেখা দেয়। দক্ষিণ কোরিয়ার শিল্পপতি শে তাই ওন-এর স্ত্রী বিচ্ছেদের সময় তার স্বামীর সংস্থার ৪২.৩ শতাংশ শেয়ার পেয়েছিলেন। তার আর্থিক মূল্য ছিল ১২০ কোটি।
-
তবে এখনও অবধি বিশ্বে বিবাহবিচ্ছেদের ইতিহাসে মহার্ঘতম হল জেফ ও ম্যাকেঞ্জি বেজোসের বিচ্ছেদ।
-
অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বিচ্ছেদের শর্তস্বরূপ প্রাক্তন স্ত্রীকে অনলাইন রিটেলারের ৪ শতাংশ দিয়েছিলেন। এর ফলে ম্যাকেঞ্জির সম্পত্তির পরিমাণ পৌঁছয় ৪৮ কোটি ডলারে। বর্তমানে তিনি বিশ্বের চতুর্থ ধনীতম মহিলা।