বিশ্বযুদ্ধের সময় রুখে দাঁড়ানো নদীর উপরের দুর্গ এখন শুধুই ধ্বংসস্তূপ
নিচের ছবিগুলো এক সময়ে স্থলসেনা, বিমানসেনা এবং নৌবাহিনীর আখড়া ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযু্দ্ধের সময় এখানেই লুকিয়ে থেকে জার্মান বিমানবাহিনীকে ধুলিসাৎ করার ছক কষত সেনাবাহিনী। এখন সেগুলোই ধ্বংসস্তূপ।
-
১৯৪২ সালে লন্ডনের টেমস নদীর উপর গড়ে তোলা হয়েছিল এই দুর্গ। ব্রিটিশ সিভিল ইঞ্জিনিয়ার গুয়ে মনসেলের নামানুসারে একযোগে এই দুর্গগুলোকে বলা হয় মনসেল ফোর্ট। কারণ তিনিই এই দুর্গের নকশা করেন।
-
প্রকৃতপক্ষে তিনটি আলাদা দুর্গ বানানো হয়েছিল। তার মধ্যে বর্তমানে রেডস্যান্ড এবং সিভারিং নামে দুর্গ দু’টি অক্ষত রয়েছে। অন্যটি অর্থাৎ নোর আর্মি দুর্গ সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। প্রবল ঝড় এবং একটি জাহাজের ধাক্কায় ১৯৫৩ সাল নাগাদ দুর্গটির একাংশ ভেঙে পড়ে।
-
প্রতিটা দুর্গ গড়ে উঠেছিল সাতটি আলাদা বিল্ডিং নিয়ে। এই বিল্ডিংগুলো কেন্দ্রের একটি টাওয়ারকে ঘিরে দাঁড়িয়েছিল।
-
বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয় ১৯৪৫ সালে। যে কারণে দুর্গ বানানো হয়েছিল, তার প্রয়োজনও ফুরিয়ে যায়। ফলে ১৯৫০ সালে দুর্গগুলোকে ফাঁকা করে দেয় ব্রিটেন। ১৯৫৯-৬০ সাল নাগাদ ক্ষতিগ্রস্ত দুর্গ নর আর্মি ভেঙে ফেলা হয়।
-
সেনা ফাঁকা করে দেওয়ার পর আর কোনও কাজ ছিল না দুর্গের। পরে সরকারি অনুমতি ছাড়াই রেডিয়ো ব্রডকাস্টিং শুরু হয় রেডস্যান্ড দুর্গ থেকে। পরে এই রেডস্যান্ড দুর্গ সংরক্ষণের জন্য প্রজেক্ট রেডস্যান্ড চালু হয়। ২০০৭-০৮ সাল নাগাদ বিনা অনুমতির রেডিয়ো ব্রডকাস্টিংকে হটিয়ে দিয়ে এই দুর্গ থেকে রেডস্যান্ড রেডিয়ো শুরু হয়।
-
২০০৫ সালে ৩৬ দিনের জন্য সিভারিং দুর্গে ছিলেন লেখক স্টিফেন টার্নার। একেবারে বিচ্ছিন্ন থেকে তিনি নিজের ব্লগ এবং বই লেখায় ব্যস্ত ছিলেন এই দুর্গে।
-
নর আর্মি দুর্গ তো আগেই ভেঙে গিয়েছে, রেডস্যান্ড এবং সিভারিং দুর্গগুলোও এখন ধ্বংসপ্রাপ্ত। ভিতরে ঢোকার অনুমতি নেই। নৌকা করে কাছে গিয়ে দেখা যায় মাত্র।