‘সবচেয়ে শক্তিশালী’ মানুষ যে গ্রামে বাস করে
এই গ্রামে সবচেয়ে শক্তিশালী মানুষ বাস করেন। ব্যাপারটি শুনতেও যেন ভালো লাগে। কিভাবে তারা এতো শক্তিশালী হলেন এবার জেনে নিন সেই সম্পর্কে।
-
এই গ্রামে দিনের শুরু হয় খুব সকালে। পাখি বাসা ছেড়ে বাইরে বের হওয়ার আগেই আখড়ায় আখড়ায় ভিড় জমে যায়। চলে মুগুর ভাঁজা, ডন-বৈঠক এবং কুস্তি। সকাল সকাল হাজারখানেক ডন-বৈঠক কোনো ব্যাপারই না এই যুবকদের কাছে। ভারতের সবচেয়ে শক্তিশালী লোকেরা নাকি থাকেন এ গ্রামে। জায়গার নাম অসোলা-ফতেহপুর বেড়ি। ছবি: সংগৃহীত
-
ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লির পার্শ্ববর্তী একটি পরিচিত এলাকা অসোলা-ফতেহপুর। গ্রামের যুবশক্তি এখানকার ‘প্রাণ’। বস্তুত, দিল্লিসহ দেশের বড় বড় রেস্তরাঁবারের বাউন্সারের দায়িত্বে যারা থাকেন, তাদের সিংহভাগের ঠিকানা অসোলা-ফতেহপুর বেড়ি। ছবি: সংগৃহীত
-
শুধু বাউন্সারের চাকরিই নয়, রাজনীতিক থেকে ফিল্মস্টার, বেশির ভাগের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকেন অসোলা-ফতেহপুরের যুবকরা। কিন্তু এই গ্রামের বিশেষত্ব কী? কীভাবে সিংহভাগ যুবকের পেশিবহুল শরীর? কেনোই বা বাউন্সারের চাকরি তাদের এতটা টানে? ছবি: সংগৃহীত
-
কয়েক প্রজন্ম ধরে অসোলা-ফতেহপুরের বাসিন্দাদের দিন শুরু হয় ঘণ্টা দুয়েক কসরত করে। বিকেলেও দুঘণ্টা ঘাম ঝরান তারা। বছরের পর বছর বড়দের দেখে শিখছে ছোটরা। কিশোর থেকে পঞ্চাশ পার হওয়া প্রৌঢ় সবাই আখড়ায় লড়েন। ব্যায়াম করেন। ইট তোলেন। ধুলো মেখে লড়াই করেন। একসঙ্গে ঘাম ঝরান। ছবি: সংগৃহীত
-
দিল্লির এই গ্রামের যুবকদের কাছে ভারোত্তোলন শখের খেলা। সময় কাটাতেও ব্যায়াম করেন তারা। কেউ কেউ ৩৫০ কেজি পর্যন্ত ওজন তোলেন। স্বাস্থ্যের বিষয়ে সবাই সচেতন। ভালো খাওয়া-দাওয়া করা, নেশা থেকে দূরে থাকা এটাই তাদের সুস্বাস্থ্যের কারণ বলে জানান গ্রামের বাসিন্দারা। ছবি: সংগৃহীত
-
কী খাওয়া-দাওয়া করেন এই যুবকরা? সংবাদমাধ্যমকে অসোলা-ফতেহপুরের বাসিন্দারা জানান, তাদের গ্রামে কেউ মদ্যপান করেন না। সিগারেট-বিড়ি বা তামাকজাত কোনো নেশায় কারো আসক্তি নেই। ছবি: সংগৃহীত
-
সবচেয়ে অবাক করার বিষয়, অসোলা-ফতেহপুরের সিংহভাগ বাসিন্দাই নিরামিষাসী। গ্রামের এমনই একটি আখড়ার প্রধান প্রশিক্ষক বলেন, ‘আমরা সবাই স্বাস্থ্যকর খাবার খাই। এবং অবশ্যই সময়ে খাওয়া-দাওয়া করি। এটাই এখানকার দৈনন্দিন রুটিন। প্রতিদিন ভালো খাবার খাও এবং প্রতিদিন শরীরচর্চা করো, এটা এখানকার রীতির মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে।’ ছবি: সংগৃহীত
-
অসোলা-ফতেহপুরের বাসিন্দারা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন ভারতের বিভিন্ন নাইটক্লাব। এখানে তারা কাজ করেন বাউন্সার হিসেবে। আসলে এখানকার যুবকদের আলাদা করে চাহিদা রয়েছে এই কাজে। তাদের দায়িত্ববোধ এবং নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন সবাই পছন্দ করেন। জানাচ্ছেন দিল্লির এমন একটি নাইটক্লাবের পদস্থ কর্তা। ছবি: সংগৃহীত
-
তনওয়ার নামে এক যুবক কয়েক বছর আগে অলিম্পিকে কুস্তি লড়ার প্রস্তুুতি নিচ্ছিলেন। কোনো কারণে তা হয়ে ওঠেনি। তারপরে নেন বাউন্সারের চাকরি। ছবি: সংগৃহীত
-
কেনো বাউন্সারের কাজ বাছলেন? সংবাদমাধ্যমকে তনওয়ারের সহজ জবাব, ‘আমি এমন একটা কাজ খুঁজছিলাম যেখানে আমার পেশীশক্তি দেখাতে পারব। পাশাপাশি ভালো উপার্জন করতে পারব। সে ক্ষেত্রে বাউন্সারের চাকরি আমার কাছে সবচেয়ে ভালো সুযোগ ছিল।’ ছবি: সংগৃহীত
-
এই তনওয়ার নাকি তার গ্রাম থেকে উঠে আসা প্রথম বাউন্সার। খেলাধুলা, সেনাবাহিনী ছাড়াও অসোলা-ফতেহপুরের বাসিন্দাদের সবচেয়ে বড় পছন্দের চাকরি বাউন্সারের। ছবি: সংগৃহীত
-
তনওয়ারের দাবি, তাকে দেখেই পরে গ্রামের যুবকরা বাউন্সারের কাজ নিচ্ছেন। এবং এখন পুরো ভারতের ছোট-বড় শহরে কাজ করছেন তারা। তিনি জানান, গ্রামের কেউ নেশা করেন না। পুষ্টিকর খাবার খান। আর সবাই এই লোহার মতো শরীর তৈরি করেছেন কঠোর পরিশ্রম করে। কোনো সাপ্লিমেন্টের ধার ধারেন না তারা। ছবি: সংগৃহীত
-
তনওয়ারের কথায়, ‘আমার দেখাদেখি গ্রামের বাকি যুবকরাও পরে বাউন্সারের চাকরি নিয়েছেন। শুধুমাত্র দিল্লির ক্লাব এবং বারেই আমার গ্রামের ৩০০ ছেলে বাউন্সারের কাজ করছে।’ ছবি: সংগৃহীত
-
দিল্লির এই গ্রামের বাসিন্দারা মনে-প্রাণে বিশ্বাস করেন, স্বাস্থ্যই সম্পদ। শুধু স্বাস্থ্যবানই নন, রুজিরোজগারেও তাদের সমান নজর। যেমন তনওয়ারই বলছেন পরিবারকে ভালো রাখা, সন্তানদের ভালো স্কুলে পড়াতে কে না চায়! তারাও সেটা চান। ছবি: সংগৃহীত
-
তবে শুধু বাউন্সারের চাকরির জন্য যে কসরত করেন সেটাও না। আসলে তনওয়ারের গ্রামের ঐতিহ্যই হচ্ছে সুস্থ্য সবলভাবে বাঁচা। ব্যায়াম করলে মন ভালো থাকে। শরীর ভালো থাকে। ছোটখাট চোট-আঘাত, জ্বর ইত্যাদি অসুখ চট করে কাহিল করতে পারে না। ছবি: সংগৃহীত
-
ছেলেমেয়ে নির্বিশেষে তাই সবাই ব্যায়াম করেন। সেই চর্চা আগামীদিনেও থাকবে বলে বিশ্বাস গ্রামবাসীর। শুধু শরীরচর্চা করেও যে তারা সবার থেকে আলাদা, সেটাই প্রমাণ করে দিয়েছেন। ছবি: সংগৃহীত