স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর সহজ উপায়
স্মৃতিশক্তি প্রতিটি মানুষের অমূল্য সম্পদ। অনেক কারণে এই স্মৃতিশক্তি কমে যায়। গবেষণায় দেখা গেছে অধিক কাজের চাপে স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে যায়। তাই স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর ১০ উপায় এই অ্যালবামের মাধ্যমে জেনে নিন।
-
পর্যাপ্ত ঘুম: রাতে ৬ ঘণ্টার কম ঘুম হলে তা বার্ধক্য প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে মস্তিষ্কে বাঁধার সৃষ্টি করে, জানান রচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ড. মাইকেন নেডেরগার্ড। তিনি জানান, এর জন্য জরুরি হচ্ছে গভীর ঘুম। এটা না হলে মস্তিষ্ক প্রায় সাত বছর বেশি বুড়িয়ে যেতে পারে।
-
মস্তিষ্কের জন্য ঠান্ডা ঘরই ভালো: গরমের চেয়ে ঠান্ডায় স্মৃতিশক্তি এবং মনোযোগ তিনগুণ বেশি থাকে। এ কথা জানান নিউ সাউথ ওয়েল্স বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্ট্রেলিয়ান মনোবিজ্ঞানী প্রফেসর ইয়োসেফ ফোরগাস। এছাড়া ঠান্ডা ঘর মাথাকেও ঠান্ডা রাখে, তাই ঘরের তাপমাত্রা কখনো ২১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি রাখা ঠিক নয়, জানান তিনি।
-
গল্প শেষ থেকে শুরু করুন: একটি গল্প পড়ে পুরো গল্পটা মনে রাখুন। এবার শুরু থেকে না বলে শেষ বা পেছন থেকে গল্পটা মনে করতে থাকুন। এই পন্থা মস্তিষ্কের কোষগুলোকে সচল তো রাখবেই, করবে আরো শক্তিশালী।
-
সঠিক জুতো পরে বেরিয়ে পড়ুন: নিয়মিত হাঁটাচলা বা জগিং শরীরকে ভালো রাখে-এ কথা কম-বেশি আমরা সকলেই জানি। সেন্ট লুইস বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানী মার্ক ম্যাকডানিয়েল জানান, শুধু শরীর নয় হাঁটাচলা এবং জগিং ব্রেনকেও ফিট রাখে। তবে সবচেয়ে ভালো হয় সপ্তাহে দুই থেকে তিনদিন অন্তত ২০ মিনিট করে হাঁটলে বা জগিং করলে।
-
বিপরীত হাত ব্যবহারের অভ্যাস: যারা ডান হাতে সব কিছু করেন, তারা বাঁ হাতে আর যারা বাঁ হাতে সব কিছু করেন, তারা ডান হাতে সপ্তাহে অন্তত একবার সব কাজ করার চেষ্টা করুন। অর্থাৎ উল্টো হাতে খাওয়া-দাওয়া, দাঁত ব্রাশ করা বা অন্যান্য টুকটাক ঘরের কাজ করার অভ্যাস করতে পারেন। এতেও ব্রেন সচল থাকে।
-
বন্ধুত্ব লালন করুন: মানুষের সাথে কথাবার্তা বলা বা টেলিফোনে যোগাযোগ মস্তিষ্ককে তরুণ রাখে। এই তথ্যটি জানিয়েছেন এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরোলজিস্ট ড. স্টুয়ার্ট রিচি। তিনি বলেন, দিনে মাত্র ১০ মিনিটের যোগাযোগই নাকি মানুষের স্মৃতিশক্তিকে বেশ জোড়ালোভাবে জাগিয়ে তুলতে সহায়তা করে।
-
প্রতিদিনের নিয়ম থেকে বেরিয়ে আসুন: ব্রেনকে সব সময় নতুন কিছু শিখতে হয়। তা না হলে মস্তিষ্ক নির্জীব হয়ে যায়। তাই প্রতিদিনের রুটিন ভেঙে অন্যকিছু করুন। মাঝে মাঝে অন্য রাস্তা দিয়ে কর্মস্থলে বা কলেজে যান। নতুন কোনো ভাষা বা যন্ত্র বাজানো শিখুন। এতে ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি শতকরা ৭৫ ভাগ কমে যায়। নিউ ইয়র্কের আলবার্ট আইনস্টাইন মেডিকেল কলেজের করা এক সমীক্ষা থেকে জানা গেছে এ তথ্য।
-
পায়ের আঙুলের ম্যাসাজ: প্রতিদিন পাঁচ মিনিট করে পায়ের আঙুল ম্যাসাজ করুন। প্রথমে আঙুলের ওপর থেকে শুরু করে আস্তে আস্তে টিপে টিপে নীচের দিকে যান। এই ম্যাসাজ মস্তিষ্কের কোষের সাথে যোগাযোগ স্থাপনে সহায়তা করে।
-
শপিং লিস্ট: বাজারে বা দোকানে যাওয়ার আগে কী কী কিনবেন তার একটি লিস্ট তৈরি করে নিন এবং ইচ্ছে করেই সেটা বাড়িতে রেখে শপিংয়ে চলে যান। ফিরে এসে দেখুন ক’টা ভুলে গেছেন আর ক’টা মনে রাখতে পেরেছেন। এই নিয়ম যত বেশি করা হবে, ব্রেন তত দীর্ঘ সময় মস্তিষ্কে ‘সেভ’ করে রাখতে পারবেন তথ্যগুলো।
-
দুই কাপ কফিই যথেষ্ট: দিনে দুই কাপ কফি পান করলে আলৎসহাইমার ঝুঁকি কমে শতকরা ২০ ভাগ। একটি সমীক্ষার ফলাফল থেকে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে বলে জানিয়েছেন ডিমেনশিয়ার পর্তুগিজ গবেষক ড. কাটারিনা সান্তোস। কারণ কফি পান তিরিশের বেশি বয়সিদের মস্তিষ্ককে ধীরে ধীরে বুড়িয়ে যাওয়া থেকে অনেকটাই রোধ করে, বিশেষ করে মেয়েদের ক্ষেত্রে।