শীতে যেসব খাবার খেলে সুস্থ থাকবেন
ঋতু পরিবর্তনের পালা বদলে আবারও শীত এসেছে। শীতের ঠান্ডা হাওয়ায় অনেকেরই নানা রকম অসুখ দেখা দেয়। তবে কিছু খাবার আছে যা আপনার শরীরে শীতে বাড়তি তাপ তৈরি করে সুস্থ রাখবে। জেনে নিন সেসব খাবার সম্পর্কে।
-
ডালিম: ডালিম খুবই উপকারী ফল। শীতে বাজারে হাতের কাছেই পাবেন ডালিম। রস করে খেলে ডালিম মানবদেহে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বাড়ায়। যাদের রক্তশূন্যতা খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
-
রাঙা আলু: রাঙা আলুর মধ্যে রয়েছে পটাশিয়াম, যা পুরুষের শরীরে বলবর্ধক হিসেবে কাজ করে। এছাড়া এই আলু বেশ পুষ্টিকর।
-
পালংশাক: ম্যাগনেশিয়াম ও অন্যান্য মিনারেলে ভরপুর পালংশাক। ‘সেক্স ড্রাইভ’-এর জন্য এটি বিশেষ উপযোগী।
-
কুমড়োর বীজ: কুমড়োর বীজে রয়েছে জিঙ্ক এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড। যা নারী পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই উপযোগী।
-
রসুন: শরীরে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে। এছাড়া শরীরের ব্যথা দূর করে। তাই ভর্তার সঙ্গে রসুন অথবা রসুনের তেল ব্যবহার করতে পারেন।
-
আপেল: আপেলে থাকে ফেন্যালথ্যালামাইন নামের এক রাসায়নিক, যা মানসিক মন ভালো রাখে। আপেলে রয়েছে ভিটামিন সি, এ, ই, বি১, বি২, বি৬। এছাড়াও আপেলে রয়েছে হৃদরোগ, ডায়াবেটিসসহ জটিল সব রোগের প্রতিরোধক ব্যবস্থা।
-
ব্রকোলি: ‘হরমোন মেটাবলিজম’-এর ক্ষেত্রে বিশেষভাবে উপযোগী ব্রকোলি। ব্রকোলি ক্যানসার প্রতিরোধক। এতে রয়েছে ভিটামিন কে, ভিটামিন সি, ফলিক অ্যাসিড, পটাশিয়াম ও ফাইবার।
-
পুদিনা: পুদিনা রুচিজনক অগ্নিবর্ধক, মুখের জড়তানাশক, কফ ও বাত নষ্ট করে, বলকর, বমন ও অরুচিনাশক, জীবাণুনাশক, জীর্ণতার সহায়ক, বায়ুবিকারে উপশামক, প্রস্রাবকারক, বমন নিবারক, অরুচি, হিক্কা, জ্বর ও জরান্তিক দুর্বলতা, ব্রঙ্কাইটিস, বাত ইত্যাদিতে ব্যবহার্য। এটিকে দিয়ে সুস্বাদু খাদ্য ও পানীয় প্রস্তুত করা হয়। পুদিনার গন্ধ পুরুষের কামোদ্দীপনা বৃদ্ধি করে।
-
ডিম: পুরুষের ক্ষেত্রে শরীর গরম রাখতে সাহায্য করে। ডিম পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ একটি খাবার। ডিমের মধ্যে রয়েছে প্রয়োজনীয় অ্যামাইনো অ্যাসিড। এছাড়া এতে রয়েছে ভিটামিন এ, বি৫, বি১২, বি৬, ডি, ই, কে, ফোলেট, ফসফরাস, সেলিনিয়াম, ক্যালিয়াম ও জিংক। প্রতিটি ডিমের মধ্যে রয়েছে পাঁচ গ্রাম প্রোটিন। তাই বডিবিল্ডার্সরা প্রতিদিন ডিম খান।
-
মূল জাতীয় সবজি: শীতকালে যেসব মূল জাতীয় সবজিগুলো পাওয়া যায়, যেমন- গাজর, মুলা, ওলকপি, শালগম এসব সবজিগুলোতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ ও ‘এ’ আছে। মুলা আলসার ও বদহজম দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়া কিডনি ও পিত্ত থলিতে পাথর তৈরি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। গাজরে রয়েছে বেটা ক্যারোটিন, ভিটামিন-এ। গাজর ঠান্ডা ও ফ্লু প্রতিরোধে সাহায্য করে।
-
কপি: শীতের টাটকা সবজির মধ্যে বাঁধাকপি বেশ উচ্চ পুষ্টিমান সম্পন্ন এবং খেতেও সুস্বাদু। খুব সহজেই এটি রান্না করা যায়। বাঁধাকপিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ ও ‘ই’ আছে। ফুলকপিতে থাকা ভিটামিন ‘এ’ ও ‘সি’ শীতকালীন বিভিন্ন রোগ যেমন- জ্বর, কাশি ও টনসিল প্রতিরোধে কার্যকারী ভূমিকা রাখে।
-
শাক: বিভিন্ন ধরনের শাক শীতকালে পাওয়া যায়। পালং শাক ও লাল শাক লৌহসম্বৃদ্ধ শাক। এ কারণে এই শাক রক্তস্বল্পতায় বেশ কার্যকরী ভূমিকা রাখে। এছাড়া লাল শাকে প্রচুর ভিটামিন ‘এ’, ‘বি’, ‘সি’ ও ক্যালসিয়াম থাকে।
-
কমলালেবু: কমলালেবু খেতে আমরা প্রত্যেকেই ভালোবাসি। কিন্তু শুধু মুখের স্বাদে নয়, কমলালেবু আমাদের ত্বকের জন্যেও খুবই উপকারী। ভিটামিন সি থাকায় কমলালেবু আমাদের ত্বককে হাইড্রেট করে এবং ড্যামেজ হওয়া থেকে বাঁচায়।
-
সামুদ্রিক মাছ: স্যামন, টুনা, সার্ডিন এছাড়া অন্যান্য সামুদ্রিক মাছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট আছে। যা রুক্ষ, শুষ্ক ত্বকে ঔজ্জ্বল্য আনতে সাহায্য করে।
-
মধু: শীতে জ্বর, কাশি প্রতিরোধে মধুর জুড়ি মেলা ভার। মধুর মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান। এটি ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করে। ঘুমোনোর আগে বা সাকালে খাবারের সঙ্গে মধু খেতে পারেন। ভালো হয় এক গ্লাস গরম দুধের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেলে। তবে যেকোনো খাবার নিয়মিত খাওয়ার আগে আপনার শরীরের অবস্থা বুঝে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।