শরীরে প্রোটিনের সেরা উৎস কোনটি?
শরীর সতেজ রাখতে ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে প্রোটিনের গুরুত্ব অনেক। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি দেখা যায়। আর অজান্তেই দিনের পরদিন কার্বোহাইড্রেট বা ফ্যাটসর্বস্ব খাবার খেতে থাকি আমরা। এক্ষেত্রে শরীরে প্রোটিনের অভাব পূরণ করার জন্য ডিম বা চিকেন খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। আর ঠিক এখানেই একটা চাপা বিতর্কও তৈরি হয়। কোনটি বেশি ভালো? ডিম না চিকেন? আসুন জেনে নেয়া যাক প্রোটিনের সেরা উৎস কোনটি!
-
চিকেন: প্রোটিনের অন্যতম সেরা উৎস হলো চিকেন। আমেরিকার ডিপার্টমেন্ট অফ এগ্রিকালচারের মতে, ১০০ গ্রাম চিকেন তথা মুরগির মাংসে ১৪৩ কিলো ক্যালোরি এনার্জি, ২৪.১১ গ্রাম প্রোটিন, ২.৬৮ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট ও ৩.১২ গ্রাম ফ্যাট থাকে। এগুলো ছাড়াও মাংসের মধ্যে আয়রন, ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম, ভিটামিন এ ও ভিটামিন ই থাকে। ছবি: সংগৃহীত
-
তবে ওজন কমানো বা অন্যান্য শারীরিক সমস্যার উপরে নির্ভর করে ডায়েটে চিকেন রাখা যেতে পারে। ওজন কমানো বা পেশি বাড়াতে গেলে চিকেন খাওয়া যেতে পারে। কারণ এতে ফ্যাটের পরিমাণ অনেক কম। উল্টে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন থাকে। এক্ষেত্রে চিকেনের মাঝের দিকের অংশ খাওয়া যেতে পারে। ছবি: সংগৃহীত
-
ডিম: প্রোটিনের প্রসঙ্গ উঠলে ডায়েটে ডিম অন্তর্ভুক্ত করা নিয়ে নানা মত দেখা যায়। অনেক ডায়েট-বিশেষজ্ঞ শরীরে প্রোটিনের মাত্রা বজায় রাখতে ডিম খাওয়ার পরামর্শ দেন। ইউএসডিএ-এর মতে, প্রায় ১০০ গ্রামের ডিমের মধ্যে ১৫৫ কিলো ক্যালোরি এনার্জি, ১২.৫৮ গ্রাম প্রোটিন, ১.১২ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট ও ১০.৬১ গ্রাম ফ্যাট থাকে। এগুলোর পাশাপাশি ডিমের মধ্যে ডায়াটারি কোলেস্টেরলও থাকে। আর এটি রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায় না। তাই ডিমকে সুষম খাদ্যের তালিকায় রাখা হয়। ছবি: সংগৃহীত
-
তবে শুধু প্রোটিন বা ফ্যাট নয়, সেদ্ধ ডিমের মধ্যে ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, সোডিয়াম, জিঙ্ক, কপার, ম্যাঙ্গানিজ, সেলেনিয়াম, ফ্লুরাইড, ভিটামিন এ ও ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ভিটামিন কে-সহ একাধিক খাদ্য উপাদান থাকে। এক্ষেত্রে ডিমের কুসুমের মধ্যে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টও থাকে। যা শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। বলা বাহুল্য, চিকেনে তুলনামূলক ভাবে প্রোটিনের পরিমাণ বেশি। তবে অন্যান্য উপাদানগুলোর নিরিখে ডিমের জুড়ি মেলাও ভার। ছবি: সংগৃহীত
-
তাহলে ডায়েটে কোনটা রাখবেন? ২০১৯ সালের ইন্ডিয়ান ডার্মাটোলজি অনলাইন জার্নালের সমীক্ষা অনুযায়ী, ভারতীয় ডায়েট সিস্টেমে একাধিক সমস্যা রয়েছে। এ দেশের খাবারে মূলত কার্বোহাইড্রেট থাকে। প্রোটিনের পরিমাণ অত্যন্ত কম। আর এই প্রোটিনের ঘাটতির কারণে ডায়াবেটিস, চুল-ত্বকের নানা সমস্যা, এডেমা থেকে শুরু করে পেশির নানা রোগ দেখা যায়। ছবি: সংগৃহীত
-
এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ, ডায়েটে ডিম ও চিকেন উভয়ই রাখা যেতে পারে। যদি একসঙ্গে দু'টি না খাওয়া যায়, তাহলে ওজন ও শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী যে কোনো একটি বেছে নিতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া একান্ত কাম্য। যদি কারো চিকেন বা ডিম খেলে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়, তাহলে সেই বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। এগুলোর পাশাপাশি ডিম ও চিকেন বেছে নেয়ার ক্ষেত্রে এদের দামও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তবে শরীরে যাতে প্রোটিনের ঘাটতি না হয়, সে দিকেই লক্ষ্য রাখতে হবে। ছবি: সংগৃহীত