দ্রুত ওজন কমাতে যে ধরনের ডায়েট করবেন
মেদ কমানোর অনেকেই মাত্রাতিরিক্ত ডায়েট করে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তারা জেনে নিন যেভাবে ডায়েট করলে আপনি সুস্থ খেতে মেদ কমাতে পারবেন।
-
চাইলে অল্প সময়ে মেদ কমিয়ে ফেলা যায়। খুব বেশি খাটাখাটনি নয়, মন দিতে হবে শুধু খাবারের পাতে।
-
লো ফ্যাট নো কার্বসের ডায়েট মেনে চললে ওজন কমে দ্রুত। শরীরও সুস্থ থাকে। পুষ্টিবিদরা এই ডায়েটের পরামর্শ দিয়ে থাকেন অনেককেই। কিন্তু শুধুমাত্র কার্বোহাইড্রেট সরিয়ে দিয়ে আর প্রোটিন বাড়িয়ে দিলেই কাজ হবে ভাবছেন? পুষ্টিবিদ ও ফিটনেস এক্সপার্টরা কিন্তু অন্য কথা বলছেন।
-
তাদের মতে, অল্প কয়েকদিনের মধ্যে ওজন ঝরিয়ে কিছুটা নির্মেদ হয়ে উঠতে চাইলে লো ফ্যাট নো কার্বসের ডায়েট মানার সময় লক্ষ্য রাখতে হবে আরও কিছু টুকটাক কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ নিয়মের দিকে। সেসব না মানলে কিন্তু ডায়েট মেনেও পাবেন না কাঙ্ক্ষিত উপকার।
-
লো ফ্যাট, নো কার্বস ডায়েট মেনে চলছেন ভালো কথা। ওজনও কমবে এতে তবে সময়ের অভাবে বা খাওয়ার অনীহায় যদি কোনও মিল বাদ দেন তা হলে কিন্তু হিতে বিপরীত হবে। বরং দু’-তিন ঘণ্টার বেশি পেট খালি রাখা যাবে না একেবারেই। এতে কিন্তু এই ডায়টের কার্যকরী দিকটাও ব্যাহত হয়।
-
ফ্যাট কম, শর্করা একেবারেই নেই- এই ডায়েটের সোজা হিসেব এটাই। কিন্তু লো ফ্যাট মানেই কম ফ্যাট খেয়েই সারা দিন কাটিয়ে দেওয়া নয়। এই ডায়েটের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হল প্রোটিনের উপস্থিতি। পাতে রাখতেই হবে পর্যাপ্ত প্রোটিন। ভাত যেহেতু একেবারেই বাদ, রুটিও নামমাত্র, সেই খিদে পূরণ করুন মাছ-মাংস ও ডিম ও উদ্ভিজ্জ প্রোটিন দিয়ে।
-
একেবারে ভাত খাব না! এটা ভেবেই যারা ভয় পাচ্ছেন, তাদের উদ্দেশে পুষ্টিবিদদের পরামর্শ, ‘ভাতে তেমন কোনো উপকার নেই, তবু ভাত বাদ ভাবলেই যদি মানসিক সমস্যা হয়, তা হলে পাতে রাখতে পারেন ব্রাউন রাইস, হোল গ্রেন ব্রেড। ফাইবারের জোগান পেতে অসুবিধা হবে না।’
-
লো ফ্যাট- এই অংশে এসেও ধন্দে পড়েন অনেকেই। ফ্যাট মানেই খারাপ নয়, তা এত দিনে কমবেশি সকলেই জানি।
-
পুষ্টিবিদদের মতে, ওজন অনুযায়ী আপনার শরীরে কত ক্যালোরির খাবার দরকার তার পরামর্শ আগে নিয়ে নিন কোনো চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের থেকে। সেই অনুযায়ী ঠিক করতে হবে পাতে থাকবে কতটা ফ্যাট। এক চামচ ঘি বা এক চামচ মাখনে প্রায় ১০ গ্রাম ক্যালোরি। ১ হাজার ক্যালোরির ডায়েটের উপযুক্ত হলে মোট খাবারের ১০ শতাংশ পেয়ে গেলেন সেখান থেকেই!
-
তাই ঘি-মাখন কম খাওয়াই ভালো। তাতে ডায়েটের ভারসাম্য থাকে। প্রোটিনজাত খাবার ও সামান্য তেল-মশলা থেকেও শরীরে বেশ কিছুটা ফ্যাট ঢুকেই পড়ে। এরপরেও ফ্যাট যেটুকু দরকার, তার জন্য ভরসা রাখুন বাদাম জাতীয় খাবারের উপর। সপ্তাহে এক দিন এক চামচ ঘি-মাখনও চলে। আস্থা রাখতে পারেন ডার্ক চকোলট, ফুল ক্রিম পনিরের উপর।
-
দোকান থেকে কোনো প্রক্রিয়াজাত খাবার কিনতে গেলে বা প্যাকেট ফুড কেনার আগে সাবধান হোন। ফ্যাটলেস লেখা অনেক খাবারের প্যাকেটেই ঘুরপথে ফ্যটের কথা লেখা থাকে। ট্রান্স ফ্যাটের কথাটা তাই ভুললে চলবে না। এড়িয়ে চলুন সে সব।
-
কার্বোহাইড্রেট বাদ বলে চালের সব বাদ এমনটা নয়। বরং বেছি নিন হাই গ্লাইসেমিক রেটের কার্বোহাইড্রেট। ইডলি, প্লেন দোসা, উপমা, ওটস, দু’-একটা রুটিও চলতে পারে মাঝে মাঝে স্বাদবদলের জন্য।
-
ছানা, অন্তত ১০০ গ্রামের ফল ও টকদই রোজ রাখুন পাতে। এক বাটি মুসুর ডাল অনেকটা প্রোটিনের জোগান দেবে, পেটও ভর্তি রাখবে। তাই এই সব খাবার থাকুক ডায়েটে।
-
পানি পান ও পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব যেন কখনোই না হয়। যত কম পানি খাবেন, তত শরীর পানি জমিয়ে রাখবে তার প্রয়োজনীয় কাজ সারার জন্য। লবণের সঙ্গ ছাড়া পানি জমতে পারে না শরীরে। পানি জমার কারণে শরীর ফুলে যায়। তাই জল অনেক আর নুন কমের কৌশলেই কিছুটা ওজন কমবে। সঙ্গে দরকার অন্তত ৬-৭ ঘণ্টার টানা ঘুম।