প্রথম ছবি থেকে বাদ পড়া সৌমিত্র যেভাবে কিংবদন্তি হলেন
প্রথম ছবির স্ক্রিনটেস্ট থেকে বাদ পড়ে ছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। লড়াই করে সব কিছু জয় করেছেন। লড়াইয়ের আরেক নাম সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। জেনে নিন যেভাবে সৌমিত্র কিংবদন্তি নায়ক হয়েছেন।
-
৮৬ বছর বয়সে জীবন থেমেছে তার। অভিনয় দিয়ে বাঙালির নিশ্বাসে বিশ্বাসে বেঁচে থাকবেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়।
-
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯৩৫ সালের ১৯ জানুয়ারি। নাটকে হাতেখড়ি বাড়িতেই। ঠিক অপুর মতোই কম বয়সেই চলে আসা কলকাতায়। সেখানেই বাংলা সাহিত্যে হাতেখড়ি। এই সময়েই থিয়েটারের সঙ্গে একটা অবিচ্ছেদ্য নাড়ির যোগ তৈরি হয়।
-
সৌমিত্রের দাদু ভারতের হাওড়া বোমার মামলায় জেল খেটেছিলেন। বাড়িতে এসেছিল সুভাষচন্দ্র বসু, বাঘাযতীনের মতো বিপ্লবীরা। কাজেই তার মনটা আজীবনই স্বদেশচেতনায় মগ্ন ছিল।
-
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় আজীবন থিয়েটার গুরু মানতেন শিশির ভাদুড়িকে। তার দেখানো পথকেই আজীবন পাথেয় মেনেছিলেন। সত্যজিতের কাছে আসার আগে অভিনেতা হিসেবে আত্মপ্রস্তুতিটা হয়েছিল শিশির ভাদুড়ির কাছে এসেই।
-
জলসাঘর ছবির লোকেশানে এসে সত্যজিত রায়ের কাছাকাছি আসেন সৌমিত্র। সোনা চিনতে দেরি করেননি সত্যজিত। অপুর সংসরা ছবি দিয়েই শুরু হয় সিনেমার মহাযাত্রা। শুধু সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গেই চোদ্দটি ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। ততদিনে অবশ্য নীলাচলে মহাপ্রভুর মতো উল্লেখযোগ্য ছবির স্ক্রিনটেস্ট থেকে বাদ পড়েছেন।
-
শুধু সত্যজিৎ নন, তপন সিনহার প্রিয় অভিনেতা ছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। শুধু সত্যজিৎ নন, তপন সিনহা তরুণ মজুমদারদেরও প্রিয় অভিনেতা ছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। পরিচালকদের সঙ্গে সম্পর্কের সেই রসায়ন শেষদিন পর্যন্ত বজায় ছিল।
-
২০০৪ সালে তাকে পদ্মভূষণে সম্মানিত করা হয় এছাড়াও পেয়েছেন ফরাসি সর্বোচ্চ সম্মান লিজয়ন দি অনার। তার ঝুলিতে রয়েছে তিনবার জাতীয় পুরস্কার জেতার বিরল কৃতিত্ব। পেয়েছেন সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি, দাদা সাহেব ফালকের মতো পুরস্কারও। ২০১৭ সালে বঙ্গবিভূষণ পুরস্কার দেয় পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
-
নাটকেও তার সাফল্য ছিল আকাশছোঁয়া। হোমাপাখির মতো মঞ্চসফল নাটক বাঙালি কখনও ভুলবে না। তার সাহিত্যপ্রীতির কথা সুবিদিত।এক্ষণ পত্রিকা সম্পাদনা করেছেন দীর্ঘদিন। আজীবন বামপন্থায় আস্থা রেখেছিলেন সৌমিত্র। নাটক-সেলুলয়েড-সাহিত্য সব মিলিয়ে এক বর্ণময় জীবনের সমাপ্তি ঘটল আজ।