যে কারণে গ্রেফতার হতে পারেন সুশান্তর দুই বোন!
প্রয়াত বলিউড তারকা সুশান্ত সিং রাজপুতকে জাল প্রেসক্রিপশনে নিষিদ্ধ ওষুধ দেয়া হয়েছিল-এমন খবর জানা যাচ্ছে। পাশাপাশি জানা গেছে তার দুই বোনকে গ্রেফতারও করা হতে পারে।
-
তাদের ছেলেকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া হয়েছে। আত্মসাৎ করা হয়েছে তার অর্থ। ছেলের মৃত্যুর পর তার বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ আনে সুশান্ত সিংহ রাজপুতের পরিবার। মাদক মামলায় রিয়া যখন জেলে, তখন তার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের আর্জিও জানানো হয়।
-
কিন্তু জেল থেকে বেরিয়ে এবার সুশান্তের দুই বোনের বিরুদ্ধেই কড়া ব্যবস্থা নেয়ার আর্জি জানালেন রিয়া। জাল প্রেসক্রিপশন তৈরি করে সুশান্তকে তারা নিষিদ্ধ ওষুধ খাইয়েছিলেন এমন অভিযোগ করেছেন রিয়া। তাই কোনো অবস্থাতেই তারা যাতে নিষ্কৃতি না পান, তা নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন অভিনেত্রী।
-
গত ১৪ জুন বান্দ্রার ফ্ল্যাট থেকে সুশান্তের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। তার আগে ৮ জুন হোয়াটসঅ্যাপে বোনদের সঙ্গে কথা হয় সুশান্তের। তার স্ক্রিনশটও সংবাদমাধ্যমে উঠে এসেছে। তাতে দেখা গিয়েছে, সুশান্ত যে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন, সে কথা জানতেন তার পরিবারের সদস্যরা।
-
হোয়াটসঅ্যাপের ওই কথোপকথনে দেখা গিয়েছে, সুশান্তকে তিনটি ওষুধ খেতে বলেন তার বোন প্রিয়াঙ্কা লিব্রিয়াম, মেক্সিটো এবং লোনাজেপ। যারা অবসাদ এবং উৎকণ্ঠার সমস্যায় ভোগেন তাদের সাধারণত এই ওষুধগুলো নেয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
-
কিন্তু সরাসরি এই ওষুধগুলো কেনা যায় না। নার্কোটিক ড্রাগস অ্যান্ড সাইকোট্রপিক সাবস্ট্যান্সেস আইনে সেগুলো নিষিদ্ধও। অভিযোগ, তাই নিজেই সুশান্তকে একটি প্রেসক্রিপশন পাঠান প্রিয়াঙ্কা। মুম্বাইয়ের একজন অত্যন্ত নামী চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেবেন বলেও জানান।
-
সুশান্ত ও তার বোনদের মধ্যে ওই কথোপকথনকে হাতিয়ার করে বান্দ্রা থানায় এফআইআর দায়ের করেছিলেন রিয়া। জাল প্রেসক্রিপশন তৈরি করে সুশান্তের জন্য ওই ওষুধ জোগাড় করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেন তিনি।
-
রিয়ার দায়ের করা সেই এফআইআর যাতে বাতিল করে দেওয়া হয়, তা নিয়ে সম্প্রতি বম্বে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন প্রিয়াঙ্কা ও মীতু। আদালতে পিটিশন জমা দেন তারা। তার জবাবে আইনজীবী সতীশ মানশিন্ডে মারফত আদালেত ৩০ পাতার একটি পাল্টা আবেদন জমা দিয়েছেন রিয়া।
-
ওই আবেদনে রিয়া জানান, দিদির পাঠানো প্রেসক্রিপশন দেখিয়ে সুশান্ত ওষুধ কিনে খেয়েছিলেন কি না, তা জানা নেই। যদি খেয়ে থাকেন, তাহলে হতে পারে তা থেকেই তার মানসিক অবস্থার আরও অবনতি হয় এবং আত্মহত্যার মতো চরম পদক্ষেপ করতে বাধ্য হন তিনি। সে ক্ষেত্রে সুশান্তের দুই দিদি তার মৃত্যুর জন্য দায়ী। তাই তাদের বিরুদ্ধে দায়ের ওই এফআইআর যেন বাতিল না করা হয়।
-
তরুণ কুমার নামের যে চিকিৎসক সুশান্তের মানসিক অবস্থার কথা না জেনেই তার জন্য ওষুধ লিখে দিয়েছিলেন, তার ভূমিকাও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন রিয়া। তার যুক্তি, ‘মানসিক অবসাদে ভুগছেন যে রোগী, তার মেডিকেল হিস্ট্রি না জেনে কীভাবে ওষুধ লিখে দিলেন ওই চিকিৎসক? চিকিৎসক হিসেবে একবারের জন্যও তার মনে প্রশ্ন জাগল না’?
-
এ নিয়ে সুশান্তের পরিবারের তরফে এখনো পর্যন্ত কোনো প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে সুশান্তের দুই দিদির বিরুদ্ধে তদন্ত এগোবে নাকি এফআইআরটি বাতিল করা হবে, আগামী ৪ নভেম্বর বিচারপতি এসএস শিন্ডে এবং এমএস কার্ণিকের ডিভিশন বেঞ্চ সেই সিদ্ধান্ত নেবে।