যেসব মন্তব্যের কারণে কঙ্গনা বিতর্কিত হয়েছেন
শুধু বিভিন্ন আবেদনময়ী চরিত্রের কারণেই নয়, কঙ্গনা রানাউত ঝাঁঝালো মন্তব্যের কারণেও বিতর্কিত হয়েছেন।
-
হৃতিক-কঙ্গনা সম্পর্ক বলিউডের ইতিহাসে তিক্ততম তারকা-বিবাদের মধ্যে অন্যতম। ২০১৬ সালে এক সাক্ষাৎকারে কঙ্গনা বলেছিলেন হৃতিক তার ‘নির্বোধ প্রাক্তন’। তার অভিযোগ ছিল, হৃতিক একটি আলাদা ইমলে আইডি তৈরি করেছিলেন শুধু কঙ্গনার সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন বলে। অন্যদিকে, হৃতিক বলেছিলেন মানসিক রোগী।
-
করণ জোহরের টক শো-এ গিয়ে তাকে মুখের উপর ‘স্বজনপ্রীতির মাফিয়া’ বলেছিলেন কঙ্গনা। সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যুর আনেক আগেই কঙ্গনা টিনসেল টাউনে স্বজনপ্রীতির প্রতিবাদে মুখর হয়েছিলেন।
-
বহিরাগত কঙ্গনার বলিউডে গডফাদার ছিলেন আদিত্য পাঞ্চোলি। পরে তার সঙ্গে দীর্ঘ কয়েক বছর লিভ ইন করেন কঙ্গনা। একটি টেলিভিশন শো-এ এসে তিনি অভিযোগ করেছিলেন, আদিত্য তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছেন। এমনকি, তাকে বাড়িতে আদিত্য বন্দি করে রাখেন বলেও অভিযোগ ছিল কঙ্গনার।
-
আদিত্যর স্ত্রী অভিনেত্রী জারিনা ওয়াহাবের শরণাপন্নও হয়েছিলেন কঙ্গনা। অভিযোগ জানিয়েছিলেন তার স্বামীর বিরুদ্ধে। কিন্তু কঙ্গনাকে কোনো সাহায্য করেননি জারিনা। এমনকি, এই ত্রিভুজ প্রেমের সবকিছু জেনেও তিনি স্বামীর পাশে ছিলেন। কঙ্গনার সঙ্গে আদিত্য লিভ ইন করছেন জেনেও ডিভোর্সের পথে যাননি জারিনা। পরে তার বিরুদ্ধে আনা কঙ্গনার সব অভিযোগ অস্বীকার করেন আদিত্য।
-
আবার কঙ্গনার বিরুদ্ধে শারীরিক ও মানসিক নিগ্রহের অভিযোগ এনেছিলেন তার আর এক প্রাক্তন প্রণয়ী অধ্যয়ন সুমন। অভিনেতা শেখর সুমনের ছেলে অধ্যয়নের অভিযোগ, “কয়েক বছর আগে কঙ্গনা তার জন্মদিনে ‘দ্য লীলা’তে কাছের মানুষদের আমন্ত্রণ জানায়। আমায় হঠাৎ করেই ও বলে ‘চল আজ সারারাত কোকেন নিই’। এর আগে আমি কঙ্গনার সঙ্গে গাঁজা খেয়েছি। আমার ভাল লাগেনি। আমি না বলি। এরপরেই কঙ্গনা রেগে যায়। আমাদের মধ্যে বিশ্রী ঝামেলা শুরু হয়।”
-
যদিও দিন কয়েক আগে কঙ্গনা তার ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেলে মুম্বই পুলিশকে ট্যাগ করে লেখেন, “দয়া করে আমার ড্রাগ টেস্ট করুন। আমার কল রেকর্ডও চেক করতে পারেন। যদি কোনো মাদক পাচারকারীর সঙ্গে আমার যোগাযোগ প্রমাণ করতে পারেন অথবা খুঁজে পান তবে আমি আমার ভুল স্বীকার করব এবং সারাজীবনের জন্য মুম্বাই ছেড়ে দেব।”
-
কঙ্গনার ক্ষুরধার কথা থেকে রেহাই পাননি জয়া বচ্চনও। সম্প্রতি বিজেপি সাংসদ রবি কিশনের মন্তব্যের প্রতিবাদ করে রাজ্যসভায় জয়া বলেছিলেন, তিনি যে থালায় খাচ্ছেন সেই থালাকেই ফুটো করছেন। রবি বলেছিলেন, বলিউডের বেশিরভাগ শিল্পীই মাদকাসক্ত। সেই কথা শুনেই বেজায় চটেছিলেন সমাজবাদী নেত্রী। একহাত নিয়েছিলেন অভিনেতাকে।
-
জবাবে কঙ্গনা টুইটে লেখেন, “ইন্ডাস্ট্রিকে আপনি কোন থালা সাজিয়ে দিয়েছেন জয়াজি? একটা থালা পেয়েছিলাম যেখানে দু’মিনিটের আইটেম নম্বর এবং একটা রোম্যান্টিক দৃশ্যে অভিনয় করার বদলে নায়কের সঙ্গে বিছানায় যাওয়ার প্রস্তাব সাজানো ছিল। এই ইন্ডাস্ট্রিকে নারীবাদ আমি শিখিয়েছি। নারীবাদী, দেশপ্রেমের ছবি দিয়ে ইন্ডাস্ট্রির থালা সাজিয়েছি। এই থালা আমার নিজের, আপনার নয়।”
-
একদিন কঙ্গনাকে ‘পতিতা’ বলেছিলেন ঊর্মিলা মাতন্ডকর। কঙ্গনার সাম্প্রতিক বাকনিশানায় পড়েছেন ঊর্মিলাও। একটি টেলিভিশন চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ঊর্মিলাকে ‘সফট পর্ন অভিনেত্রী’ বলেন কঙ্গনা। বলেন, ‘‘ঊর্মিলা একজন সফট পর্ন স্টার। অভিনয় দক্ষতার জন্য ঊর্মিলা বিখ্যাত নন। তা হলে উনি কেন বিখ্যাত? সফট পর্ন সিনেমায় অভিনয় করার জন্য। সেও যদি ভোটের টিকিট পেতে পারে, আমিও পারি।’’
-
শুধু সহকর্মীরাই নন। কঙ্গনা সরাসরি আক্রমণ করেছেন রাজনীতিকদের। মুম্বাইকে ‘পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর’ বলে মন্তব্য করেন কঙ্গনা। এর জেরে মহারাষ্ট্রে মুখ্যমন্ত্রী তথা শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে সঙ্ঘাতে জড়িয়ে পড়েন অভিনেত্রী। বেআইনি নির্মাণের অভিযোগে কঙ্গনার অফিস গুঁড়িয়ে দেয় বৃহন্মুম্বই পৌরসভা।
-
সম্প্রতি স্বজনপোষণ নিয়ে মুখ খুলেছেন তাপসীও। বহিরাগত তিনিও। তাই স্টারকিডদের বাড়বাড়ন্তে তারও যে বেশ কয়েকটি ছবি হাতছাড়া হয়েছে তা প্রকাশ্যেই বলেছেন তিনি। কিন্তু কোন ছবি, কোন স্টারকিড তা নিয়ে নীরব থেকেছেন তাপসী। আর এতেই চটেছেন কঙ্গনা। তিনি তাপসীকে বলেন, ‘মুভি মাফিয়ার স্তাবক’।
-
বছর কয়েক আগে ‘নাম শাবানা’ ছবি মুক্তির সময়ে কঙ্গনার উদ্দেশে তাপসী একবার বলেছিলেন, ‘কাজ না পেলে সব সময় স্বজনপোষণকে দায়ী করা ঠিক নয়।’ সেই কথাই টেনে এনে কঙ্গনার বক্তব্য, তা হলে এখন সরব কেন তাপসী?
-
কঙ্গনা লেখেন, ‘বহিরাগতদের যে আন্দোলন আমি শুরু করেছিলাম, অনেক বহিরাগতই তাতে বারেবারে বাধা দিয়েছে। আমাকে সরাসরি আক্রমণ করেছে। অপমান করেছে। ফলস্বরূপ তাদের ভাগ্যে জুটেছে ভালো ছবি, পুরস্কার। যে গাছ কঙ্গনা পুঁতেছিল তারই ফল খাচ্ছ তুমি, তাপসী, লজ্জা হওয়া দরকার।’
-
পাল্টা উত্তর দিতে সময় নেননি তাপসীও। কঙ্গনাকে তিক্ত, অসুখী মানুষ হিসেবে বর্ণনা করে পাল্টা আক্রমণ করেন ‘পিঙ্ক’ অভিনেত্রী। তাপসী কতগুলো ইংরেজি কোট শেয়ার করেন টুইটারে। যাতে লেখা, ‘অসুখী মানুষদের মতো ব্যবহার করো না। বরং তাদের আচরণ থেকে শিক্ষা নাও কী রকম আচরণ করা উচিত নয়।’ দুই বহিরাগতর তরজায় সরগরম হয়ে ওঠে সোশ্যাল মিডিয়া।
-
‘তনু ওয়েডস মনু’-র সাফল্যের অন্যতম উপাদান কঙ্গনা ও স্বরা ভাস্করের অনস্ক্রিন বন্ধুত্ব। বাস্তবে ছবিটা সম্পূর্ণ অন্যরকম। দুই অভিনেত্রীর ভার্চুয়াল ক্যাট ফাইট এখন শিরোনামে। কিছুদিন আগেই আমির খানের একটি সাক্ষাৎকার টুইট করেন কঙ্গনা। সাক্ষাৎকার প্রসঙ্গে কঙ্গনার দাবি ছিল,‘পিকে’ অভিনেতার স্ত্রী হিন্দু হওয়া সত্ত্বেও তার সন্তানদের ইসলাম ধর্ম অনুসরণ করার শিক্ষা দিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত দেখা যায় সাক্ষাৎকারটি ফেক।
-
এমন সুযোগ ছেড়ে দেননি স্বরা। একটি অনলাইন সংবাদ মাধ্যম এই ফেক খবরের উপর ভিত্তি করে কঙ্গনার টুইটের খবরটি প্রকাশ করে। সেখানেই স্বরা কমেন্ট করেন ‘থক যা বেহেন’। এই ছোট্ট একটা লাইনের ‘থাম রে বোন’ খোঁচার সঙ্গে হাত জোড় করা ইমোজি যেন নাটকীয়তা বাড়িয়ে তুলেছে আরও কয়েকগুণ। স্বরার এই তিনটি শব্দই সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তুলে দেয়। কেউ স্বরার পক্ষে, তো কেউ আবার এগিয়ে এসেছেন তাদের ‘কুইন’ কঙ্গনার জন্য।
-
অবশ্য এটাই প্রথম নয়। এর আগেও তাপসী ও স্বরাকে আক্রমণ করেছেন কঙ্গনা। তাদের নামের সঙ্গে জুড়ে দিয়েছেন বি-গ্রেড অভিনেত্রীর তকমা। অভিযোগের সুর সপ্তমে চড়িয়ে বলেছেন- ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ পাওয়ার লোভে স্বজনপোষণকে সমর্থন করতেও নাকি পিছুপা হন না ওরা। তারপর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের বাকযুদ্ধ জারি।