বলিউডে দীর্ঘদিন ধরে যারা মাদকের সাথে জড়িত
বলিউডের অনেক তারকা দীর্ঘদিন ধরে মাদকের সাথে জড়িত রয়েছেন। এবার জেনে নিন কে কে আছেন এই তালিকায়।
-
সুশান্ত সিংহ রাজপুত মৃত্যুকাণ্ডে নতুন করে আলোচনায় উঠে এসেছে বলিউডের মাদকযোগ। নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো বা এনসিবির জেরায় রিয়া চক্রবর্তী বেশ কয়েক জন তারকার নাম বলেছেন।
-
মাদককাণ্ডে রিয়া উল্লেখ করেছেন সইফ আলি খান ও অমৃতা সিংহের মেয়ে সারা আলি খান, মডেল-অভিনেত্রী রাকুলপ্রীত সিংহ, ডিজাইনার সিমোন খম্বাটার নাম।
-
রিয়ার বান্ধবী রোহিনী আইয়ার এবং পরিচালক মুকেশ ছাবড়ার নাম উঠে এসেছে জেরায়। সুশান্তের শেষ ছবি ‘দিল বেচারা’র পরিচালকও এই মুকেশ। ইন্ডাস্ট্রির প্রায় পঁচিশজনের নাম উঠে এসেছে রিয়ার বক্তব্যে। তাঁদের মধ্যে আছেন স্বল্প পরিচিত বি-গ্রেড অভিনেতাও।
-
এনসিবির আতস কাচের নিচে আছে করণ জোহরের বাড়ির একটি পার্টিও। অভিযোগ, ২০১৯ সালে ৩০ জুলাইয়ের সেই পার্টিতে মাদক সেবন করেছিলেন বেশ কয়েকজন তারকা।
-
সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই পার্টির ক্লিপিংসও ছড়িয়ে পড়ে। অকালি দল নেতা মনজিন্দর সিংহ সিরসা ওই পার্টির ক্লিপিং শেয়ার করেছেন টুইটারে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, রণবীর কাপুর, ভিকি কৌশল, দীপিকা পাড়ুকোন, অর্জুন কাপুর, মালাইকা অরোরা, শহিদ কাপুর, বরুণ ধবন, অয়ন মুখোপাধ্যায়সব বেশ কিছু তারকাকে।
-
ঘটনাচক্রে, এই ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল হওয়ার আগে কঙ্গনা রানাউতও বেশ কয়েকজন তারকার নাম উল্লেখ করেছিলেন বলিউডে মাদকসেবন প্রসঙ্গে। অভিনেতা রণবীর কাপুর, রণবীর সিংহ, ভিকি কৌশল এবং পরিচালক অয়ন মুখোপাধ্যায়কে মাদককাণ্ডে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন কঙ্গনা। তবে কর্ণ জোহর, ভিকি কৌশল-সহ বেশির ভাগ তারকাই মাদকযোগের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
-
এ সব ডামাডোলের মধ্যে হঠাৎই ভাইরাল, অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউতের একটি পুরনো ভিডিও। যে ভিডিওতে কঙ্গনাকে প্রকাশ্যেই বলতে শোনা যাচ্ছে, ক্যারিয়ারের শুরুতে মাদক সেবনের কথা, মাদকাসক্ত হওয়ার কথা। কঙ্গনার ইনস্টাগ্রামে এ বছরের মার্চ নাগাদ পোস্ট করা হয়েছিল ভিডিয়োটি।
-
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, মানালির বাড়িতে বসে কঙ্গনা বলছেন,‘ছোটবেলাতেই বাড়ি থেকে পালিয়ে চলে এসেছিলাম। এর কয়েক বছরের মধ্যেই আমি ফিল্মস্টার হই। একই সঙ্গে হয়ে উঠি মাদকাসক্তও।’
-
তখন সদ্য ক্যারিয়ার শুরু, মিলছে খ্যাতি কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে ঝড়, জানান কঙ্গনা। তার কথায়, ‘জীবনকে কেন্দ্র করে অনেক কিছু হচ্ছিল। অদ্ভুত সব মানুষ জীবনের সঙ্গে জুড়ে গিয়েছিল হঠাৎই। আমার তখন ১৮-ও হয়নি। টিনএজার ছিলাম।’
-
ভিডিওটি ভাইরাল হতেই নেটাগরিকদের একাংশের প্রশ্ন, সুশান্ত-কাণ্ডে মাদক যোগ নিয়ে যে কঙ্গনা প্রথম থেকেই সরব, যে কঙ্গনা প্রকাশ্যে বলেছিলেন বলিসেলেবদের প্রায় ৯৯ শতাংশই মাদক নেন, সেই কঙ্গনা নিজেও ব্যতিক্রমী নন?
-
কঙ্গনাই তার ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডলে মুম্বাই পুলিশকে ট্যাগ করে লেখেন, ‘দয়া করে আমার ড্রাগ টেস্ট করুন। আমার কল রেকর্ডও চেক করতে পারেন। যদি কোনো মাদক পাচারকারীর সঙ্গে আমার যোগাযোগ প্রমাণ করতে পারেন অথবা খুঁজে পান তবে আমি আমার ভুল স্বীকার করব এবং সারাজীবনের জন্য মুম্বই ছেড়ে দেব।’
-
শিবসেনার সঙ্গে প্রকাশ্যে সংঘাত, রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং দেশ জুড়ে চলা বিতর্কের মধ্যেই মুম্বাই ছাড়েন অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউত। কিন্তু যাওয়ার আগে টুইটে আরও একবার পাক অধিকৃত কাশ্মীরের সঙ্গে তুলনা করে যান মুম্বইকে।
-
তবে সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যুপরবর্তী সময়েই প্রথম নয়। এর আগেও বলিউডের বিরুদ্ধে মাদকযোগের অভিযোগ উঠেছে। অভিনেতা সঞ্জয় দত্ত নিজেই স্বীকার করেছেন তিনি এক সময়ে নিয়মিত মাদক নিতেন।
-
সিমি গারেওয়ালের টক শো-এ সঞ্জয় জানান, তিনি একবার মাদকসেবন করে টানা দু’দিন ঘুমিয়ে ছিলেন। তিন সপ্তাহ তিনি ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। জানান সঞ্জয়। আমেরিকায় রিহ্যাব-এ যাওয়ার পরেই তিনি মাদকের নেশামুক্ত হন, স্বীকার করেছন সুনীলপুত্র।
-
২০০১ সালে মাদক কেনার অপরাধে গ্রেফতার হন ফারদীন খান। তার বিরুদ্ধে কোকেন কেনার চেষ্টার অভিযোগ ছিল। তবে ফারদীন জানান, তিনি কোনওদিন মাদকাসক্ত ছিলেন না। এক গ্রাম কোকেন যোগাড় করার চেষ্টা করেছিলেন। দাবি, অভিনেতা ফিরোজ খানের ছেলের।
-
মাদক রাখার দায়ে অভিযুক্ত হন অভিনেতা বিজয় রাজ। ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি আবুধাবিতে গিয়েছিলেন বিক্রম ভট্টের ‘দীওয়ানে হুয়ে পাগল’-এর শুটিং-এ। সে সময় তার জিনিসপত্রের মধ্যে পাওয়া গিয়েছিল ৬ গ্রাম মারিজুয়ানা।
-
এই ঘটনায় অভিনেতার দাবি ছিল, তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার। কোনওদিন তিনি মাদকসেবন করেননি। পুলিশি পরীক্ষায় তার দেহে মাদক থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। পরে তিনি মুক্তি পান।
-
মাদকাসক্তির কথা স্বীকার করেছেন প্রতীক বব্বর-ও। রাজ বব্বর ও স্মিতা পাতিলের ছেলে প্রতীক জানান, ১৩ বছর বয়সে তিনি প্রথম মাদক নেন। এর জন্য দায়ী করেন সমস্যাজর্জরিত নিজের শৈশবকে।
-
প্রতীক বলেন, এতটাই আসক্ত হয়ে পড়েছিলেন, মাদক ছাড়া তিনি থাকতে পারতেন না। ফলে তার শরীরও ভেঙে পড়ে। ক্রমে সময়ের সঙ্গে ধীরে ধীরে তিনি মাদকাসক্তি মুক্ত হন।