ঐশ্বরিয়া-অভিষেক যেভাবে প্রেমে পড়েছিলেন
এই জুটির প্রেম কাহিনি ভক্তরা এখনও জানতে চান। তাদের সব কিছু নিয়েই রয়েছে অনুরাগীদের ব্যাপক কৌতূহল। এবার জেনে নিন ঐশ্বরিয়া-অভিষেক যেভাবে প্রেমে পড়েছিলেন।
-
সালমান খান থেকে বিবেক ওবেরয়। তখন একের পর এক সম্পর্কের ভাঙাগড়ার মধ্যে দিয়ে এগোচ্ছেন ঐশ্বর্যা। সে সময় কাছের বন্ধু ছিলেন যে কয়েক জন, তাদের মধ্যে অন্যতম অভিষেক বচ্চন। অবশ্য দু’জনের কেউই তখন জানতেন না একদিন সেই বন্ধুত্ব বদলে যাবে দাম্পত্যে।
-
অভিষেকের সঙ্গে ঐশ্বরিয়ার প্রথম আলাপ ১৯৯৭ সালে। সে সময় অ্যাশ তার জীবনের প্রথম ছবি ‘অউর প্যায়ার হো গ্যায়া’তে ববি দেওলের বিপরীতে অভিনয় করছিলেন।
-
শুটিং সেটে বন্ধু ববির সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন অভিষেক। সেখানেই প্রথম আলাপ হবু স্ত্রীর সঙ্গে। অবশ্য প্রথম আলাপে প্রেম বা মুগ্ধতার কথা পরবর্তী সময়ে বলেননি তাদের কেউই।
-
এরপর অভিষেকের সঙ্গে ‘ঢাই অক্ষর প্রেম কে’ এবং ‘কুছ না কহো’ ছবিতে অভিনয় করেন অ্যাশ। কিন্তু তখনো অভিষেকের সঙ্গে ঐশ্বর্যার সম্পর্ক আটকে ছিল বন্ধুত্বের স্তরেই।
-
কবে তাদের প্রেমের সূত্রপাত, জানেন না বচ্চন দম্পতিও। বলেন, বন্ধুত্বের পথ ধরেই প্রেম এসেছে। কিন্তু অনেকে বলেন ২০০৫ সালে ‘বান্টি অউর বাবলি’ ছবিতে ‘কজরা রে’ আইটেম গানের শুটিং থেকেই কিউপিডের শরবিদ্ধ হন দু’জনে।
-
তবে প্রেমের সূত্রপাত যেখান থেকেই হোক না কেন, ২০০৬-’০৭ থেকেই অভিষেক ও অ্যাশকে একসঙ্গে বেশি সময় কাটাতে দেখা যায়। ‘উমরাও জান’, ‘গুরু’, ‘ধুম টু’-র মতো ছবিতে অভিনয়ের সঙ্গে সঙ্গে গাঢ় হয় তাদের ঘনিষ্ঠতা।
-
ঐশ্বরিয়ার সরল স্বভাব এবং হাসির কাছে বাঁধা পড়েছিল তার হৃদয়, পরে জানিয়েছিলেন অভিষেক। কিছু বছরের প্রেমপর্বের পরে অবশেষে প্রোপোজ। কানাডার টরন্টো শহরে ‘গুরু’-র প্রিমিয়র শো-এরপরে দু’জনে নিউ ইয়র্কে গিয়েছিলেন। সেখানেই ঐশ্বরিয়াকে প্রোপোজ করেন অভিষেক।
-
অভিষেক জানান, কয়েক বছর আগে নিউইয়র্কের এক হোটেলের ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে তার মনে হয়েছিল, ঐশ্বর্যার সঙ্গে জীবন কাটাতে পারলে মন্দ হয় না! সেই হোটেলের ওই একই ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে তিনি বিয়ের প্রস্তাব দেন অ্যাশকে।
-
পরে এক সাক্ষাৎকারে অ্যাশ বলেছিলেন, হিরের আংটি নয়। অভিষেক তাকে প্রোপোজ করেছিলেন ‘গুরু’-র শুটিং সেটে ব্যবহার করা কোনো কটা জিনিস দিয়ে। তার ওই স্বাভাবিক, অকপট আচরণই ভালো লেগেছিল অ্যাশের।
-
২০০৭ সালের ১৪ জানুয়ারি বচ্চন পরিবারের বাড়িতে বাগদান হয় তাদের। এরপর দু’জনকে আরও বেশি একসঙ্গে দেখা যেতে থাকে প্রকাশ্যে। বচ্চনদের বাড়িতেও আসা যাওয়া শুরু করেন অ্যাশ।
-
দু’জনের বিয়ের আগে দেখা দেয় ‘মাঙ্গলিক-বিতর্ক’। শোনা যায়, ঐশ্বরিয়ার ঠিকুজির ‘মাঙ্গলিক’ দোষ কাটাতে নাকি তাকে আগে গাছের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। এরপর ‘ধুম টু’-তে হৃতিক রোশনের সঙ্গে ঐশ্বর্যার লিপ লক কিস নিয়েও নাকি আপত্তি উঠেছিল বচ্চন পরিবারে।
-
তবে সব বাধা বিপত্তি পেরিয়ে তাদের বিয়ে হয় ২০০৭ সালের ২০ এপ্রিল। হাই প্রোফাইল এই বিয়ে কয়েক দিন ধরে বিরাজ করেছিল শিরোনামে। সমাজের সব স্তরের মান্যগণ্য অতিথি অভ্যাগতদের নিয়ে অভিষেক-ঐশ্বর্যার বিয়ের আসর আক্ষরিক অর্থেই ছিল চাদের হাট।
-
২০১১ সালের নভেম্বরে জন্ম তাদের একমাত্র মেয়ে আরাধ্যার। মা হওয়ার পরে ঐশ্বরিয়া অনেকটাই সরে আসেন ক্যারিয়ার থেকে। কয়েক বছরের বিরতির পর আবার কাজে ফিরেছেন তিনি। তবে সামিল হননি এক নম্বর নায়িকা হওয়ার প্রতিযোগিতায়।
-
একে সাবেক বিশ্বসুন্দরী, তার উপর ক্যারিয়ারের ধারে ও ভারে অনেকটাই এগিয়ে অভিষেকের থেকে। এই পরিস্থিতিতে তাদের বিয়ে কি টিকবে? প্রশ্ন ছিল অনেকের। সব আশঙ্কাকে ভুল প্রমাণ করে দিব্যি আছে অভিষেক-অ্যাশের দাম্পত্য।
-
সুপারস্টারের ছেলে হয়ে বলিউডের চোখে হয়তো অভিষেক ‘ব্যর্থ’। কিন্তু সংসারিক জীবনে ছায়া ফেলেনি দু’জনের কেরিয়ারের দ্বৈরথ। অভিষেক আর ঐশ্বর্যা দু’জনে দু’জনকে নিজের সেরা বন্ধু বলে মনে করেন।
-
বিয়ের আগে অভিষেকেরও একাধিক সম্পর্ক ছিল। নব্বইয়ের দশকে তার সঙ্গে বাগদান হয়ে গিয়েছিল কারিশমা কাপুরের। কিন্তু তারপরেও সেই সম্পর্ক ভেঙে যায়। শোনা যায়, অভিষেককে জামাই হিসেবে মেনে নিতে আপত্তি ছিল কারিশমার মা ববিতার। এরপর রানি মুখার্জীর সঙ্গেও অভিষেকের ঘনিষ্ঠতা নিয়ে গুঞ্জন শোনা গিয়েছিল।
-
কিন্তু অভিষেক ও ঐশ্বরিয়া তাদের বিগত সম্পর্ককে আনেননি নিজেদের বর্তমান সমীকরণে। তারা রয়ে গিয়েছেন বলিউডের পাওয়ার কাপলের দৃষ্টান্ত হয়েই।