বলিউডে যাদের বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে

পরিসংখ্যান বলছে, করণ জোহর, সালমান খান, যশরাজ ফিল্মস, সঞ্জয়লীলা ভানশালীর প্রোডাকশন হাউসের ছবিতে তারকাপুত্র বা কন্যাকে বেশি দেখা গিয়েছে। সঞ্জয়লীলা ভানশালীর ছবি ‘সাঁওয়ারিয়া’-তে এক সঙ্গে দু’জন স্টারকিডের আবির্ভাব হয়েছিল বলিউডে। সে ছবিতে রণবীর কাপুর ও সোনম কাপুর দু’জনেই অভিনয় করেছিলেন।

বলিউডের দুই প্রভাবশালী কাপুর পরিবারের সন্তান রণবীর এবং সোনম। ঋষি কাপুরের একমাত্র পুত্র রণবীর এবং অনিল কাপুরের মেয়ে সোনমকে পরিচিতি দিয়ে প্রথম সারিতে আনার জন্য চেষ্টার কোনো ভুল করেননি ভানশালী।

ইন্ডাস্ট্রিতে নবাগতদের সাহায্য করার বিষয়ে সালমান খানের তো সুনাম আছেই। তবে এই ‘নবাগত’ বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ছিলেন তারকাদের ছেলেমেয়ে বা তাদের আত্মীয়।

বোন অর্পিতার স্বামী আয়ুষ শর্মাকে প্রথম ছবিতে সুযোগ করে দেন সালমান খান। আয়ুষের প্রথম ছবি ‘লভযাত্রী’ মুক্তি পেয়েছিল ২০১৮ সালে।

মহেশ মঞ্জরেকরের মেয়ে সাই মঞ্জরেকরও অভিনয়ে পা রেখেছেন সলমনের হাত ধরেই। সাইয়ের প্রথম ছবি ‘দবং থ্রি’।

মণীশ বহেলের মেয়ে তথা অভিনেত্রী নুতনের নাতনি প্রনূতনকে ‘নোটবুক’ ছবিতে লঞ্চ করেন সালমান।

আদিত্য পাঞ্চোলির ছেলে সূর্য পাঞ্চোলিকেও ক্যারিয়ার শুরু করতে সাহায্য করেছেন সালমানই।

সুনীল শেটির মেয়ে আথিয়ার প্রথম ছবি ‘হিরো’ আত্মপ্রকাশ করেছিল ২০১৫ সালে। সেখানেও পথ প্রদর্শক, সেই ভাইজান।

স্বজনপ্রীতিতে কম যায় না যশরাজ ফিল্মস-ও। বনি কাপুরের প্রথম পক্ষের ছেলে অর্জুন কাপুরকে এই সংস্থা লঞ্চ করেছিল। ২০১২ সালে অর্জুনের প্রথম ছবি ‘ইশকজাদে’ মুক্তি পেয়েছিল যশরাজের ব্যানারেই।

প্রিয়ঙ্কা চোপড়ার চাচােেতা বোন পরিণীতি চোপড়াও যশরাজ ফিল্মসের ব্যানারেই পরিচিতি পেয়েছেন। ২০১১ সালে তার প্রথম ছবি ‘লেডিজ ভার্সেস রিকি বহেল’ মুক্তি পেয়েছিল যশরাজের ব্যানারেই।

রণবীর সিংহের বাবা মা কেউ বলিউডের সঙ্গে যুক্ত নন। কিন্তু তারা অনিল কাপুরের আত্মীয়। ফলে রণবীরের বলিউডে নায়ক হতে বেশি কাঠখড় পোড়াতে হয়নি। ২০১০ সালে আদিত্য চোপড়ার প্রযোজনায় তিনি প্রথম অভিনয় করেন ‘ব্যান্ড বাজা বরাত’ ছবিতে।

স্বজনপ্রীতির অভিযোগে যিনি এই মুহূর্তে বিদ্ধ, তিনি করণ জোহর। তার পরিচালনা এবং গৌরী খানের প্রযোজনায় ‘স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার’ ছবি দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেন আলিয়া ভাট এবং বরুণ ধাওয়ান।

বরুণ ধায়ান, অনন্যা পান্ডে, জাহ্নবী কাপুরের মতো নতুন মুখদেরও ইন্ডাস্ট্রিতে ঢুকতে সাহায্য করেছেন করণই। এরা তিন জনেরই বাবা অথবা মা, কোথাও দু’জনেই বলিউডের তারকা।

বরুণ ধাওয়ানের বাবা ডেভিড ধাওয়ান নামী পরিচালক। ২০১০ সালে বরুণ প্রথম সহ পরিচালকের ভূমিকায় কাজ করেন করণ জোহরের পরিচালনায় ‘মাই নেম ইজ খান’ ছবিতে।

চাঙ্কি পান্ডের মেয়ে অনন্যার প্রথম ছবি ‘স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার টু’ মুক্তি পেয়েছিল ২০১৯ সালে। সেখানেও পরিচালনার দায়িত্বে সেই, কর্ণ জোহরই।

বনি কাপুর ও শ্রীদেবীর বড় মেয়ে জাহ্নবীর প্রথম ছবি ‘ধড়ক’-এর সহ প্রযোজক করণ জোহর।

শুধু সুযোগ করিয়ে দেওয়াই নয়। অভিযোগ, তারকাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ যাতে নিশ্চিত হয়, তার জন্য বিভিন্ন পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তাদের গুরুত্ব দেয়া হয়। তৈরি করা হয় নতুন নতুন বিভাগ।

মাঝখান থেকে প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও হারিয়ে যেতে হয় সুশান্ত সিংহ রাজপুতদের। টিনসেল টাউনে দীর্ঘ দিন এই ট্র্যাডিশন চলছেই। আরো একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়ে গেলেন ‘ছিছোড়ে’-র অভিনেতা। বলছেন দর্শকরা।