এই তারকাদের মধ্যে শত্রুতা কেন?
বন্ধুত্ব করতে হলে মন প্রাণ উজাড় করে ভালোবাসা দিয়ে করতে হয়। তা না হলে ঝামেলা তৈরি হয়। এমনই এক ঘটনা ঘটেছিল সালমান খান এবং জন আব্রাহামের মধ্যে। দুজনের অগাধ বন্ধুত্বে যে চিড় ধরল, সেই রেশ এখনো অব্যাহত। জেনে নিন কেনো তাদের মধ্যে শত্রুতা কেনো শুরু হয়।
-
একই ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করার সুবাদে দু'জনের চেনাজানা আগে থেকেই ছিল। দেখা হলে সৌজন্য বিনিময় বা সাধারণ হাই, হ্যালো। তবে বন্ধুত্ব বলতে যা বোঝায় তা শুরু হয় ২০০৬ সালে, ‘বাবুল’ ছবির সেটে।
-
দু’জনেই ফিটনেস ফ্রিক। দু'জনের শার্টলেস লুক দেখতে ভক্তরা পাগল। ওই ছবির শুটিং চলাকালীন হঠাৎ করেই সালমানের বেশ মনে ধরে জনকে। দুজনের চিন্তাভাবনাতেও ছিল বিস্তর মিল। জনও বাড়িয়ে দেন বন্ধুত্বের হাত।
-
সে সময় সালমান ‘রকস্টার’ নামক এক আন্তর্জাতিক ট্যুরে যাচ্ছিলেন। জনকেও তিনি অনুরোধ করেন সেই ট্যুরে তার শরিক হতে। তারকাখচিত ট্যুর। রাজি হয়ে গেলেন জনও।
-
একসঙ্গে দু'জনে পারফর্মও করলেন। সব কিছুই ঠিকঠাক চলছিল। ঠিক এমন সময়েই পয়সাকড়ি নিয়ে জনের সঙ্গে বিবাদ বাধে ভাইজানের। ওই শোর জন্য জন আকাশছোঁয়া পারিশ্রমিক দাবি করলে সালমান বারণ করেন। কিন্তু জন সে কথায় কর্ণপাত করেননি।
-
এখানেই শেষ নয়। যে রকস্টার শোর এতদিন প্রধান আকর্ষণ ছিলেন সালমান। সেখানে রাতারাতি জনপ্রিয়তা পেতে থাকেন জন। কানাঘুষো শোনা যায়, সালমানের থেকেও নাকি সেবার দর্শক পছন্দ করেছেন জনকে।
-
কথাটা কানে যায় সলমনের। খারাপ লাগে তার। তিনি ভেবেছিলেন, যেহেতু জনকে তিনি নিয়ে গিয়েছেন তাই স্বাভাবিক ভাবেই সারা ট্যুরে জন তার সঙ্গেই সময় কাটাবেন। কিন্তু হয়েছিল ঠিক উল্টো। ভালো করেই স্টারডম উপভোগ করছিলেন জন। থাকছিলেন নিজের শর্তেই। আর তাতেই খারাপ লাগা দ্বিগুণ হয় সালমানের।
-
সেখান থেকেই সম্পর্কে চিড় শুরু। কথা ছিল ফিরে এসে ‘বাবুল’ ছবির দ্বিতীয় অংশ শুট করবেন তারা। কিন্তু তাদের দু'জনের সম্পর্ক এমন খারাপ জায়গায় পৌঁছায় যে কথা বলা বন্ধ হয়ে যায়। যদিও অমিতাভ বচ্চনের মধ্যস্থতায় দু’জনে বাকি শুটিং শেষ করেন। কিন্তু বরফ গলে না।
-
এদিকে ‘বাবুল’ বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে। ভাইজান জনসমক্ষে বলেছিলেন, বাবুলের দ্বিতীয় অংশ খুব একটা মনোগ্রাহী নয়। তাই হিট হয়নি। আর দ্বিতীয় পর্বে জন-এরই রোল বেশি ছিল। তাই ভাইজানের ইঙ্গিত যে কার প্রতি ছিল, তা বোঝাই যায়।
-
ঠিক এই সময়েই সালমানের জীবনে আসেন ক্যাটরিনা। জনের উপর তিনিও রুষ্ট ছিলেন। কারণ, ক্যাটরিনার হিন্দি উচ্চারণ খারাপ থাকার কারণে ক্যাটরিনার সঙ্গে একটি ছবিতে কাজ করতে চাননি জন। দুদিন শুটিং শুরু হয়ে গেলেও সেই ছবিতে থেকে বাদ পড়েন ক্যাট।
-
আরও রেগে যান ভাইজান। ঠিক সময়ে এর বদলা নিতে বলেন ক্যাটকে। এরও কিছু বছর পর, তখন ক্যাটরিনার বেশ নাম হয়েছে। তার কাছে একটি ছবির অফার যায়। ছবির নাম ‘নিউইয়র্ক’। সহ অভিনেতা জন।
-
সিনেমাটি করবেন কী না সে বিষয়ে যখন ক্যাটরিনা দোটানায়, ঠিক সেই সময়েই সালমান তাকে ছবিটি করতে বলেন। যে জন তার সঙ্গে একদা ছবি করতে অস্বীকার করেছিলেন, তার সঙ্গেই আবার কাজ করা যে পরোক্ষে ক্যাটরিনার জয়, সে কথা ক্যাটকে বুঝিয়েছিলেন সালমান।
-
সিনেমাটি বক্স অফিসে চূড়ান্ত হিট হয়। কিন্তু সালমানের বিশ্বাস ভাঙে আরও একবার। জন এবং ক্যাটরিনার প্রেম নিয়ে সে সময় সরগরম মিডিয়া। প্রকাশ্যে আসে জন-ক্যাটরিনার এসএমএস আদানপ্রদান এবং কললিস্টের লম্বা ফিরিস্তি।
-
ক্ষোভে পাগল হয়ে যান সলমন। সে সময় সালমানের সঙ্গেই লিভইন করতেন ক্যাট। তার সমস্ত জিনিসপত্র নিজের বাড়ি থেকে বের করে দেন সালমান। ব্রেক আপ হয়ে যায় তাদের।
-
তারপর অনেক বছর কেটে গিয়েছে। সম্পর্কে থাকার কথা জন বা ক্যাট কেউই স্বীকার করেননি। তবে সালমান এবং জনের সম্পর্কের তিক্ততা আজও অটুট।