‘থ্রি ইডিয়টস’ ছবির যে ভুলগুলো পারফেকশনিস্ট আমিরের চোখেও ধরা পড়েনি
আমির-কারিনা জুটির অন্যতম সেরা হিট ‘থ্রি ইডিয়টস’। ২০০৯ সালেই রাজকুমার হিরানি পরিচালিত এই ছবি ৪২০ কোটির ব্যবসা দেয় বক্স অফিসকে। বলিউড ছবিপ্রেমী সব দর্শকরা এই ছবিটি দেখেছেন। তবে সিনেমাপ্রেমীদের দাবি, এই ছবিতেও ছিল অনেকগুলো ভুল। তাদের প্রশ্ন, আমির খানের মতো পারফেকশনিস্টের চোখ কীভাবে সেগুলো ধরতে পারল না? জেনে নিন সেই ভুলগুলো।
-
ছবিতে ব্যবহৃত এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটি ওড়ার সময় দেখা যায় তার গায়ে ‘ভিটি-পিপিজি’ লেখা। কিন্তু পরের শটে তা যখন ফের দেখা যায়, তখন তার লেখা বদলে হয়ে গিয়েছে ‘ভিটি-পিপিবি’। বিমানটি ওড়ার সময় ও নামার সময় এর চাকার সংখ্যাতেও গোলমাল আছে। স্পষ্টতই কন্টিনিউয়েশন শটে বিমান বদল হয়েছে, অথচ তার জেরে বিড়ম্বনা পরিচালকের চোখে পড়েনি।
-
চতুরের সেলফোন থেকে ছবি দেখানোর দৃশ্যটি নিয়েও সমস্যা আছে। চতুর তার সেলফোনটির মাত্র একটি বার ছুঁয়েই মোবাইল ডিকশনারি থেকে শুরু করে যে ছবি দেখাতে চান, সেটিও দেখিয়ে ফেলেন। কোন আধুনিক প্রযুক্তির ফোনে মাত্র একবার টাচ করেই নানা বিষয় দেখানো যায়?
-
মাধবন যেখানে পকেটে পানি ফেলছেন, সেই দৃশ্যেও গলদ রয়েছে। বোতল খালি করে প্রায় সবটুকু পানি পকেটে ঢেলে দিলেও ঠিক তার পরের দৃশ্যেই দেখা যাচ্ছে বোতলে অর্ধেকের চেয়ে একটু কম পানি রয়েছে। এটাও কন্টিনিউয়েশনের ভুল।
-
টেবিল টেনিস খেলার দৃশ্যেও দেখা যায় ফারহান ওরফে মাধবন একটা বল হিট করতেই টেবিল টেনিসের টেবিলটিই ভেঙে গেল। এটি অবশ্যই অতিরঞ্জিত। কোনো টেবিল টেনিসের টেবিলই এত পলকা হয় না যে একটা পিংপং বলের দাপটে তা ভেঙে পড়বে।
-
বোর্ডে লেখার সময় র্যাঞ্চো ওরফে আমির খানের হাতের লেখা দুই দৃশ্যে বোর্ডে দু’রকম দেখায়। খুব ভালো করে লক্ষ করলেই বুঝবেন এখানেও থেকে গিয়েছে কন্টিনিউয়েশনের ভুল।
-
চতুরের শিক্ষক দিবসের মূল ভাষণটি তৈরি করে দিয়েছিলেন কলেজেরই এক কর্মী। তার বেশ কিছু শব্দ কেবল চতুরের অজান্তে বদলে দিয়েছিল র্যাঞ্চো। চতুরও রীতিমতো মুখস্থ করে এসেছিল সেই শব্দ বদলানো বক্তৃতা। কিন্তু তা সত্ত্বেও দৃশ্যে দেখা যায় চতুরের বলা বক্তৃতার সঙ্গে মুখস্থ করে আসা বক্তৃতাতেও রয়েছে বেশ কিছু বাক্যগত অমিল, যা র্যাঞ্চো করেনি।
-
মঞ্চের ব্যানারে TEACHEROS DAY। যদিও ইংরেজিতে এটি একটা ব্যকরণগত ভুল। অত বড় কলেজে এত বড় ভুল চোখ এড়ায়নি অনেকেরই। ঠিক শব্দবন্ধটি TEACHERS' DAY
-
আর এক দৃশ্যে দেখা যায় ফারহান একটি ঘটের ঢাকনাকে কমোডে ফেলে দিচ্ছে, কিন্তু ঠিক তার পরের দৃশ্যে ওই ঘটটির উপর ঢাকনাটিকে আবার দেখা যায়! এ কী করে সম্ভব?
-
কিছু সময়গত ভুলও এই ছবিতে আছে। ছবিতে দেখানো হয়েছে, ফারহান বলছে, তার জন্মসাল ১৯৭৮। সেই তথ্য অনুযায়ী তার কলেজে পড়ার বয়স যদি ১৮-১৯ ধরা হয়, তবে তা ১৯৯৬ বা ’৯৭ সালের ঘটনা। কিন্তু ছবিতে ব্যবহৃত স্কুটার, হাসপাতাল, মোবাইলের মডেল সবই ২০০১ সালের পরের।
-
পিয়া ওরফে করিনার বিয়ের খবর রাজু-র্যাঞ্চো-ফারহানদের কাছে আগে থেকে ছিল না। একটি ফোন মারফত তারা শুধু বিয়ের খবর ও জায়গাটি জানতে পারে। কিন্তু দৃশ্যে দেখা যায়, বিয়েবাড়িতে পৌঁছে কোন ঘরে বর-বউ রয়েছেন, কোথায় পিয়া সাজছেন তাও ফারহানরা জানেন!
-
এমনকি বিয়ের দৃশ্যে হবু বর সুহাস বিয়ে বাড়ির মধ্যেই বিয়ের জন্য প্রসাধন সারছেন দেখা যায়। আবার পরের দৃশ্যেই দেখা যায় পিয়া ও রাজু যখন বিয়ে বাড়ি থেকে পালাচ্ছে তখন সুহাস মূল প্রবেশদ্বার দিয়ে ভিতরে ঢুকছে।
-
যে ট্যাক্সিতে চড়ে আমির খান কলেজের সমাবর্তনের পর বেড়িয়ে যাচ্ছেন, তার নম্বর প্লেটটি দিল্লির ট্রাফিক পুলিশের নয়, এমনকি ওইভাবে কোনো গাড়ির নম্বরও হয় না। আইনের চোখেও তা অপরাধ। জেল-জরিমানাও হতে পারে। অথচ সেই ট্যাক্সিকে কেউই রাস্তায় আটকায় না।
-
শেষ দৃশ্যে দেখা যায়, বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হওয়ার পর র্যাঞ্চোকে তারা বালিতে ফেলে খুব মারছেন। যদিও তা ভালোবাসার মার। তখন র্যাঞ্চোর জামা-কাপড়ে খুব কম পরিমাণ বালি লেগেছিল। কিন্তু চতুরের সঙ্গে দেখা হওয়ার দৃশ্যে বালির পরিমাণ অনেকটাই বেড়ে যায়। এও কন্টিনিউয়েশনের ভুল।