ছবিতে সুচিত্রা সেন
নায়িকা থেকে মহানায়িকা, রমা দাশগুপ্ত থেকে উপমহাদেশের আপামর দর্শককুলের নায়িকা হয়ে ওঠেন সুচিত্রা সেন। বাংলা, হিন্দি উভয় ভাষার চলচ্চিত্রেই অভিনয়ের মাধ্যমে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন তিনি। অভিনয় জগতের অন্যতম একজন জনপ্রিয় মুখ, একজন খাঁটি অভিনেত্রী সুচিত্রা সেন।
-
অভিনয় অনেকেই করেন কিন্তু সুচিত্রা সেন সবাই হন না, হতে পারেন না। একজন মানুষ কীভাবে মূল্যায়িত হবেন, তা নির্ভর করে তার কর্মের ওপর। যিনি যে কাজে নিয়োজিত বিশেষ করে সৃষ্টিশীল কাজ, সেখানে তিনি কতটা দক্ষতার ছাপ রাখছেন বা নিজস্বতা সৃষ্টি করছেন, তার ওপর নির্ভর করে তিনি কীভাবে মানুষের হৃদয়ে ঠাঁই করে নেবেন। ছবি: সংগৃহীত
-
সুচিত্রা সেন একেবারেই নিজস্বতা বা আলাদা বৈশিষ্ট্য দিয়ে অভিনয় করে গেছেন চলচ্চিত্রে। একের পর এক জনপ্রিয় সিনেমা উপহার দিয়েছেন। আসলে অভিনয়টা ছিল তার স্বভাবজাত। একসময় এবং আজও রোমান্টিক সিনেমার জুটি বলতেই উত্তম-সুচিত্রা। ছবি: সংগৃহীত
-
এভাবেই ধারাবাহিকভাবে অভিনয়ে মুগ্ধ করেছেন দর্শকদের। সেই সাদা কালোর যুগ থেকে আজ পর্যন্তও তিনি জাদুকরের মতো মন্ত্রমুগ্ধ করে রেখেছেন দর্শকদের। ছবি: সংগৃহীত
-
১৯৩১ সালের ৬ এপ্রিল পাবনায় সুচিত্রা সেনের জন্ম। তার বাবা করুণাময় দাশগুপ্ত ছিলেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক এবং তার মা ছিলেন আর দশজনের মতো গৃহবধূ। তার আরও একটি পরিচয় আছে। তিনি ছিলেন কবি রজনীকান্তের নাতনি। ছবি: সংগৃহীত
-
১৯৪৭ সালে শিল্পপতি আদিনাথ সেনের ছেলে দিবানাথ সেনের সঙ্গে সুচিত্রা সেনের বিয়ে হয়। এর পাঁচ বছর পর সুচিত্রা সেনের অভিনয় জীবন শুরু হয়েছিল ‘শেষ কোথায়’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে। ১৯৫২ সালে তিনি এই সিনেমার মাধ্যমে অভিনয় জগতে নাম লেখান। কিন্তু তার প্রথম সিনেমাটি মুক্তি পায়নি। শেষ পর্যন্ত শেষ কোথায় সিনেমাটি আর শেষ হয়নি। ছবি: সংগৃহীত
-
তার উত্থানের চলচ্চিত্রটির নাম ‘সাড়ে চুয়াত্তর’। এই সিমেনায় তিনি মহানায়ক উত্তম কুমারের বিপরীতে অভিনয় করেন। এই সিনেমাটি প্রেক্ষাগৃহে একটানা ৬৫ দিন ধরে চলেছিল। এটা রেকর্ড। এই জুটি ছিল বাংলা চলচ্চিত্রের আইকন জুটি। বাংলা চলচ্চিত্র ইতিহাসে উত্তম কুমার আর সুচিত্রা সেনের মতো জনপ্রিয় জুটি আজ পর্যন্ত তৈরি হয়নি। ছবি: সংগৃহীত
-
১৯৫৫ সালে তিনি হিন্দি সিনেমায় অভিনয় শুরু করেন। সেখানেও তিনি তার দক্ষতার স্বাক্ষর রাখেন। সৃষ্টিশীল কাজ আসলে এমন একটি অভ্যন্তরীণ শক্তি, তার বিকল্প কোনো শক্তি দিয়ে তা পূরণ করা যায় না। আর সুচিত্রা সেনের মতো মহানায়িকার তো নয়ই। ছবি: সংগৃহীত
-
সুচিত্রা সেন তার অনবদ্য অভিনয়ের জন্য বহু সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। ১৯৭৪ সালে তার অভিনীত ‘আন্ধি’ সিনেমার জন্য সেরা অভিনেত্রী হিসেবে ফিল্মফেয়ার পুরস্কারে মনোনয়ন পান। ১৯৬৩ সালে সুচিত্রা সেনের অভিনীত ‘সাত পাকে বাঁধা’ চলচ্চিত্রের জন্য আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন করেন। ছবি: সংগৃহীত
-
তিনি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সিলভার প্রাইজ ফর বেস্ট অ্যাকট্রেস পুরস্কার অর্জন করেছিলেন। তিনিই ছিলেন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্রের পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রথম ভারতীয় অভিনেত্রী। ২০১২ সালে তিনি পশ্চিমবঙ্গের সর্বোচ্চ পুরস্কার বঙ্গ বিভূষণে ভূষিত হন। ২০০৫ সালে হিন্দি চলচ্চিত্রে অবদানের জন্য দাদা সাহেব ফালকে পুরস্কারে মনোনয়ন পেলেও তিনি তা গ্রহণ করতে আপত্তি জানান। এছাড়া ১৯৬৩ সালে মস্কো চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা অভিনেত্রী, ১৯৭২ সালে পদ্মশ্রী অর্জন করেন। ছবি: সংগৃহীত
-
দীর্ঘ ২৫ বছর অভিনয়ের পর তিনি চলচ্চিত্র থেকে অবসর নেন। তিনি চলচ্চিত্র থেকে চলে গেলেও মানুষের মনে, মুখে মুখে ঠিকই থেকে গেলেন। তার সাথে তুলনা করার কেউ নেই। কোনোদিন হবেও না। অভিনয় যে মানুষের কাছে পৌঁছানোর একটি শক্তিশালী মাধ্যম, তা তিনি দীর্ঘ ক্যারিয়ারে প্রমাণ করে গেছেন। ছবি: সংগৃহীত
-
২০১৪ সালের ১৭ জানুয়ারি কলকাতার বেলভিউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সুচিত্রা। পৃথিবী থেকে চির বিদায় নিলেও তিনি রয়ে গেছেন মানুষের হৃদয়ে। ছবি: সংগৃহীত