এক আকাশ অভিমান নিয়ে হারিয়ে গেলেন সাদি মহম্মদ
১৩ মার্চ না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী সাদি মহম্মদ। বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে তার মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে তিনি ‘আত্মহত্যা’ করেছেন।
-
তার ছোট ভাই নৃত্যব্যাক্তিত্ব শিবলী মহম্মদ জানান, ‘বুধবারও তানপুরা নিয়ে (সাদি মুহম্মদ) বড় ভাই সংগীত চর্চা করেছেন। সন্ধ্যার পর হঠাৎ দেখি ঘরের দরজা বন্ধ। তখন দরজা ভেঙে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করি। ’ এ থেকে ধারণা করা হচ্ছে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। ছবি: সংগৃহীত
-
সাদি মহম্মদের আত্মীয় নৃত্যশিল্পী শামীম আরা নীপা একটি ইউটিউব চ্যানেলে জানান, ধারণা করছি তিনি আত্মহত্যা করেছেন। আত্মহত্যার কারণ সম্ভবত তার মায়ের মৃত্যু। তার মায়ের মৃত্যুর পর তিনি একধরণের ট্রমায় ভুগছিলেন। ছবি: সংগৃহীত
-
পৃথিবীতে মাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসতেন এই শিল্পী। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই মায়ের মুখ দেখা চাই। তাই বিছানা ছেড়ে সোজা চলে যান মায়ের ঘরে। রাতে ঠিকমতো ঘুম হলো কি না, সকালে কী খাবেন সে বিষয়ে খোঁজখবর নেন। কিন্তু মায়ের মৃত্যুর পর যেন তার পুরো পৃথিবীই থমকে গেছে। ছবি: সংগৃহীত
-
মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রহরে বাবা সলিমুল্লাহকে হারান সাদি। ১৯৭১ সালে মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোডের সি-১২/১০ বাড়িটি ছিল স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম সূতিকাগার। ওই বছরের ২৩ মার্চ বাড়িতে সাদি মহম্মদের আঁকা বাংলাদেশের পতাকা ওড়ান সলিমউল্লাহ। পতাকাটি সেলাই করে দিয়েছিলেন তার মা জেবুন্নেছা। সেই পতাকা ওড়ানোর সূত্র ধরে ২৬ মার্চ অবাঙালি বিহারি ও পাকিস্তানি সেনারা বাড়িটি পুড়িয়ে দেয়, গুলি করে মারা হয় সলিমউল্লাহকে। চোখের সামনেই বাবাকে হত্যা করতে দেখেন তিনি। ছবি: সংগৃহীত
-
গত বছরের জুলাই মাসে সাদি মহম্মদের মা জেবুন্নেছা মারা যান। এরপর থেকেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন তিনি। ছবি: সংগৃহীত
-
সাদি মহম্মদ ভারতের শান্তিনিকেতনে গানের ওপরে পড়াশোনা শেষ করে দেশে ফিরে সরকারি সংগীত কলেজের শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। গত বছর সেখান থেকে অবসর নিয়েছেন সাদী মহম্মদ। তবে নিজের বাসাতেই গান শেখান শিক্ষার্থীদের। ছবি: সংগৃহীত
-
বিশ্বভারতী থেকে রবীন্দ্রসংগীতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেওয়ার পর থেকেই রবীন্দ্রসংগীত নিয়ে পথচলা শুরু সাদি মহম্মদের। তবে আধুনিক বাংলা গানও করেছেন তিনি। বিভিন্ন নাটক ও সিনেমায় অসংখ্য গানে প্লেব্যাক করেছেন। রবীন্দ্রসংগীত ও আধুনিক বাংলা গান মিলিয়ে তার অ্যালবামের সংখ্যা পঞ্চাশের বেশি। ছবি: সংগৃহীত
-
রবীন্দ্রসংগীতের চর্চা ও প্রসারে সাংস্কৃতিক সংগঠন রবিরাগের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন সাদি। পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন সেখানে। এর মধ্যে সুরকার হিসেবে তার আত্মপ্রকাশ ২০০৭ সালে, ‘আমাকে খুঁজে পাবে ভোরের শিশিরে’ অ্যালবামের মাধ্যমে। ছবি: সংগৃহীত
-
তিনি ২০১২ সালে চ্যানেল আইয়ের ‘লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ এবং ২০১৫ সালে বাংলা একাডেমির রবীন্দ্র পুরস্কারসহ অনেক সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন। তার মৃত্যুতে সংস্কৃতি অঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। ছবি: সংগৃহীত