৭ হাজার টাকার কচু চাষে লাখ টাকা বিক্রির আশা
তার নাম চন্নু দফাদার। পেশায় কৃষক। অভাবের সংসার তার। এর মাঝেই স্বচ্ছলতা এনেছে লতিরাজ কচু। মাত্র ৭ হাজার টাকা নিয়ে লতিরাজ কচু চাষে প্রতি বছর প্রায় ২ থেকে ৩ লাখ টাকা বিক্রি হয়।
-
গত ২ বছর ধরে কচু চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন চন্নু দফাদার। কিন্তু অজানা রোগে কচু চাষে হতাশার ছাপ তার চোখে। তবে কৃষি বিভাগ বলছে সঠিক পরামর্শ দেয়ার পাশাপাশি সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। ছবি: মো. খাইরুল ইসলাম আকাশ
-
বরগুনার তালতলী উপজেলার ঝাড়াখালী গ্রামের এই কৃষক প্রথম বছরে মাত্র ৭ হাজার টাকা নিয়ে মাত্র ৬ শতাংশ জমিতে চাষ শুরু করেন। কম টাকায় বেশি লাভ থাকায় এ বছর তিনি ১০ হাজার টাকা দিয়ে ১৫ শতাংশ জমিতে চাষ করেন। অগ্রহায়ণ মাসের শুরুতে কচুর চারা রোপণ করতে হয়। ছবি: মো. খাইরুল ইসলাম আকাশ
-
দুই মাস পর থেকে কচুর লতি বিক্রি করা যায় এবং লতি বের হওয়া বন্ধ হলে কচু বিক্রি করে দিতে হয়। আর এটা বিক্রি চলে শ্রাবণ মাস পর্যন্ত। ছবি: মো. খাইরুল ইসলাম আকাশ
-
চন্নু দফাদার জানান, গতবছর বাড়ির সামনের জমিতে ৭ হাজার টাকা নিয়ে একক প্রচেষ্টায় কচু চাষ শুরু করি। প্রথমে ৬ শতাংশ জমিতে স্বল্প পরিসরে কচু চাষ করি। কচু চাষে লাভবান হওয়ার এ বছর নিজের ১৫ শতাংশ নিয়ে জমিতে ‘লতিরাজ’ (পানি কচু) কচুর চাষ শুরু করি। কচু চাষে বেশি খরচ হয় না। কচুর চারা রোপণের ২০ দিন পরপর ৬ মাস পর্যন্ত হালকা নিড়ানি দিতে হয়। ছবি: মো. খাইরুল ইসলাম আকাশ
-
কচু গাছের যখন তিন মাস বয়স হয় তখন গাছের গোড়ায় যে লতি বের হয় তা কেজিপ্রতি খুচরা বিক্রি হয় ২০ থেকে ২৫ টাকা। এ পর্যন্ত প্রায় ৫০ হাজার টাকার কচুর লতি বিক্রি করেছি। এরপর কচু বাজারজাত করার উপযোগী হয়। যা বিক্রি হয় প্রতি পিস ৬০-৭০ টাকা। এই জমিতে কচু গাছ হয় প্রায় ১৫-২০ হাজার আর বিক্রি হয় প্রায় ২-৩ লাখ টাকার অধিক। ছবি: মো. খাইরুল ইসলাম আকাশ
-
১৫ শতাংশ জমিতে কচু চাষে মজুরি ও যাতায়াত খরচসহ মোট উৎপাদনসহ সব মিলিয়ে খরচ হয় ১৫ থেকে ২৫ হাজার টাকা। এ কচু চাষে লাভ হয় প্রায় ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকার মতো। আমার এ কচু বাড়ি থেকে পাইকাররা নিয়ে যায়। এছাড়াও জেলার বিভিন্ন উপজেলাসহ স্থানীয় হাট-বাজারে বিক্রি হয়। ছবি: মো. খাইরুল ইসলাম আকাশ
-
তবে কিছু অজানা রোগের (কচুর উপরে ঠোসকা ঠোসকা পড়ছে) কারণে এই বছর আমার কচু চাষে তেমন লাভ হবে না। তাই কৃষি বিভাগের সহয়াতা চেয়েছেন তিনি। তিনি আরও বলেন, ধান চাষের চেয়ে এই কচু চাষে বেশি লাভবান হওয়া যায়। তবে সঠিক পরামর্শ পেলে ভবিষ্যতে আমার যে জমি আছে তাতে এ কচু চাষ শুরু করবো। ছবি: মো. খাইরুল ইসলাম আকাশ
-
চুন্নু দফাদারের কচু খেতে গিয়ে দেখা যায় তিনি কচু খেত পরিচর্চা করছেন। তখন স্থানীয় কয়েকজন কৃষকের সাথে কথা হলে তারা জানান, চুন্নু দফাদারের একক প্রচেষ্টায় এমন সফলতা আসছে যা ভাবার মত। আমরাও তার এই চাষ দেখে ভবিষ্যতে ধান চাষ রেখে এই লতিরাজ (পানি কচু) কচুর চাষ করবো। কারণ ধান চাষে এমন আয় হয় না। ছবি: মো. খাইরুল ইসলাম আকাশ
-
উপজেলা কৃষি অফিস আরিফুর রহমান জানান, তালতলীতে একমাত্র লতিরাজ কচু চাষ করেন চুন্ন দফাদার। তার এই সফলতায় উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। তবে তার কচুতে যে অজানা রোগে ধরেছে সেই জন্য আমি নিজেই তার কচু চাষের জমিতে গিয়ে নমুনা এনেছি। এটা পরীক্ষা করে সঠিক পরামর্শ দেয়া হবে। তার এই কচু বিক্রি করার জন্য আমরা সব ধরনের সহযোগিতা করবো। ছবি: মো. খাইরুল ইসলাম আকাশ