মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের পক্ষে ছিলেন যে বিদেশি বন্ধুরা
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে শুরু থেকেই বিদেশি নাগরিকদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অংশগ্রহণ ছিল। তারা নিরস্ত্র বাংলাদেশিদের হত্যা, নির্যাতন এবং যুদ্ধের খবর কেউ পৌঁছে দিয়েছিলেন লেখার মাধ্যমে, কেউ ছবি তুলে। এবার জেনে নিন মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের পক্ষে ছিলেন যে বিদেশি বন্ধুরা।
-
বীরপ্রতীক ওডারল্যান্ড: বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ও সাহসী অবদান রাখার জন্য বীরপ্রতীকপ্রাপ্ত ওডারল্যান্ড ছিলেন একজন ডাচ-অস্ট্রেলিয়ান কমান্ডো অফিসার। ঢাকায় বাটা স্যু কোম্পানির প্রোডাকশন ম্যানেজার হিসেবে ওডারল্যান্ড ১৯৭০ সালের শেষ দিকে প্রথম ঢাকায় আসেন।
-
ইন্দিরা গান্ধী: ইন্দিরা গান্ধীকে মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদান রাখার জন্য ২০১১ সালের ২৫ জুলাই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সম্মাননা ‘স্বাধীনতার সম্মাননা’ দেয়া হয়। ইন্দিরা গান্ধীর পক্ষে সম্মাননা গ্রহণ করেন তার পুত্রবধূ সোনিয়া গান্ধী।
-
সাংবাদিক সায়মন ড্রিং: কলম আর ক্যামেরা হাতে নিজের জীবন বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধে নিরীহ বাংলাদেশিদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন সাংবাদিক সায়মন ড্রিং। একাত্তর সালে সাইমন ড্রিংয়ের বয়স ছিল মাত্র ২৭ বছর। তিনি তখন বিশ্ববিখ্যাত পত্রিকা ডেইলি টেলিগ্রাফের একজন সাংবাদিক।
-
অ্যাডওয়ার্ড: বিশ্বের মানবতাবাদী মানুষ বাংলাদেশের ন্যায্য অধিকার আদায়ের সংগ্রামে, মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেছিলেন। তাদেরই একজন মহান ব্যক্তিত্ব, বাংলাদেশিদের অকৃত্রিম বন্ধু যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর অ্যাডওয়ার্ড কেনেডি। অ্যাডওয়ার্ড কেনেডি ১৯৭১ সালে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের শুরুর দিকে গণহত্যার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ করেছিলেন।
-
জোসেফ ও’কনেল: মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত বন্ধু জোসেফ ও’কনেল টরেন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ম গবেষণা বিভাগের প্রফেসর ইমেরিটাস এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্ব ধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগের সম্মানিত অধ্যাপক ছিলেন। জোসেফ ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে টরেন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ে জনমত গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখেন।
-
কবি অ্যালেন গিন্সবার্গ: যার কাব্য বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে আলোড়ন তুলেছিল। সেই কবির নাম অ্যালেন গিন্সবার্গ। তিনি একজন মার্কিন কবি। বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের ওপর তিনি লিখেছিলেন একটি দীর্ঘ কবিতা। কবিতাটির নাম ছিল- ‘সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড’। তার কবিতাটি ছুঁয়ে যায় হাজারও মানুষের হৃদয়। নিপীড়িত মানুষের হাহাকার মেশানো, যুদ্ধের বাস্তবচিত্র কবিতার অক্ষরে অক্ষরে জানান দিয়ে যায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের দৃশ্য।
-
পল কনেট দম্পতি: লন্ডনে বাংলাদেশের নিরীহ জনমানুষের ওপর অস্ত্র ব্যবহারে নির্মম হত্যাকাÐের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলার গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছিল পল কনেট দম্পতি। পাকিস্তান দোসররা বাংলাদেশে নিরীহ মানুষের রক্ত ঝরাচ্ছে এ খবরে তারা আর চুপ করে বসে থাকতে পারেননি। মুক্তিযুদ্ধকে সমর্থন, বাংলাদেশের খাদ্যসামগ্রী ও ওষুধপথ্য পাঠানোর জন্য তিনি ‘অপারেশন ওমেগা’ নামে একটি সংস্থা করেন।
-
লেয়ার লেভিন: পাকিস্তানি সেনাদের বর্বরতার কাহিনী বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দেবেন- এ মন্ত্রেই ’৭১ সালে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে ক্যামেরা হাতে ঘুরে বেড়িয়েছেন ‘মুক্তি সংগ্রামী শিল্পী সংস্থা’র সঙ্গে। তারা একটি ট্রাকে ঘুরে বেড়াতেন ভারতের বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে আর মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্পে।