রহমানের ২২ বছরের ডাস্টবিন জীবন
২২ বছর ডাস্টবিনে কাটিয়ে কানাকড়িও জোটেনি আবদুর রহমানের।
-
আবদুর রহমান রাজধানীর সেগুনবাগিচার শিল্পকলা একাডেমি এলাকায় দীর্ঘ ২২ বছর ধরে গৃহস্থলীর ময়লা-আবর্জনা ডাস্টবিনে ফেলছেন।
-
সেগুনবাগিচা এলাকার বাসিন্দারা তাকে ‘টপের বুড়া’ নামেই বেশি চেনেন।
-
সেগুনবাগিচা এলাকার যত ময়লা-আবর্জনা শিল্পকলা একাডেমির এই ডাস্টবিনের সামনে ফেলা হয়। সেগুলো বেলচা দিয়ে তুলে ডাস্টবিনের ভেতরে ফেলেন আবদুর রহমান।
-
আবদুর রহমান ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের (ডিসিসি) কর্মচারী না হয়েও তিনি সেগুনবাগিচা এলাকার ময়লা আবর্জনা অপসারণের কাজটি করছেন। বিনিময়ে তিনি ডিসিসি থেকে এখন পর্যন্ত একটি টাকাও পাননি। এলাকাবাসী খুশি হয়ে মাস শেষে কিছু টাকা-পয়সা দেন। তাই দিয়ে কোনভাবেই দিনাতিপাত করছেন তিনি।
-
নিজের একটা দুঃখের কথা জানান আবদুর রহমান। তা হলো- বর্জ্য অপসারণে সরকার কোটি কোটি টাকা খরচ করে। তবে সারাদিন সরকারের পক্ষে কাজ করলেও ২২ বছরে একটি টাকাও পাননি তিনি।
-
আবদুর রহমানের গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের জঙ্গলবাড়ি এলাকায়। বহু বছর আগে ঢাকায় চলে আসেন। প্রথম স্ত্রী মারা গেছেন। সে ঘরের দুই ছেলে ভারতের কোলকাতায় থাকেন। পরে বিয়ে করেছেন। সেই স্ত্রী জামালপুর থাকেন।
-
আবদুর রহমান জানান, আগে তার রোজগার ভালো ছিল। পাড়া-মহল্লায় ঘুরে ঘুরে ময়লা আবর্জনা সংগ্রহ করতেন। বিভিন্ন ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা প্রতিমাসে তাকে ৩শ-৪শ টাকা করে দিতেন। কিন্তু এখন স্থানীয় কমিশনারের লোকজন গাড়ি-বানিয়ে বাসা বাড়ি থেকে মাসিক চাঁদার ভিত্তিতে ময়লা সংগ্রহ করেন। তিনি ময়লা নিতে গেলে তাকে বকাঝকা করেন।
-
আবদুর রহমান এজন্য নিজের ভাগ্যকে দোষ দিয়ে বলেন, যতদিন বেঁচে আছি ততদিন শুধু ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কারের কাজ করে যাবো। দিনভর কাজ করাটা এখন অভ্যাস হয়ে গেছে, কোনো এক দিন কাজ না করলে সারা শরীর ব্যথা করে।