যেভাবে তৈরি হয় মাসকালাইয়ের বড়া
রাস্তা দিয়ে হেটে গেলে চোখে পড়ে নীল জালে সাদা মাসকালাইয়ের বড়া। গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের শালমারার উজিরপাড়া বাইগুনী গ্রামে শীতের সকালে দেখা যায় এমন চিত্র। প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই চলে মাসকালাইয়ের বড়া বানানোর আয়োজন। আসুন জেনে নিই, কীভাবে তৈরি হয় মাসকালাইয়ের বড়া?
-
স্থানীয়রা জানান, আগে এ গ্রামে শীতকালে প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই বড়া বানাতো হতো। কালের পরিক্রমায় এখন কয়েকটি পরিবার বড়া বানানোর সঙ্গে যুক্ত। তবে এ বড়া বানানো সহজ নয়। ধৈর্য আর পরিশ্রমের প্রয়োজন। ছবি: সাজেদুর আবেদীন শান্ত
-
বড়া বানাতে প্রয়োজন মাসকালাই। সারারাত পানিতে ভিজিয়ে সকালে খোসা ছাড়িয়ে শিলপাটায় বেটে ভালো করে গুলতে হয়। হাতের কারিশমায় ছোট ছোট গম্বুজ আকৃতি করে জালের ওপর দিয়ে রোদে শুকাতে হয়। ভালো রোদ পেলে দুদিনেই শুকিয়ে যায়। তখন খাওয়ার উপযোগী হয়। ছবি: সাজেদুর আবেদীন শান্ত
-
শিলপাটায় মাসকালাই বাটা কঠিন কাজ। অনেক সময় বেশি কালাই বাটলে হাত ব্যথা হয়। আগে ১০ কেজি কালাই বাটতেই দুজন লোকের তিন-চার ঘণ্টা লাগতো। এখন মেশিনের মাধ্যমে সহজেই বাটা হয়। যারা অল্প বানান, তারা ব্লেন্ড করেন। মেশিনে এক ঘণ্টায় ১০-১২ মণ কালাই বাটা সম্ভব। ছবি: সাজেদুর আবেদীন শান্ত
-
একেকটি পরিবার প্রতি শীতের মৌসুমে প্রায় ৯০ থেকে ১০০ মণ বড়া বিক্রি করেন। নিজের এলাকা ছাড়াও পাশের অনেক স্থান থেকে মানুষ এসে বড়া নিয়ে যায়। সাধারণত বড়াগুলো পাইকারি ১৬০ থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়ে থাকে। ছবি: সাজেদুর আবেদীন শান্ত
-
আগে শীতকালে এ গ্রামে বড়া তৈরির ধুম পড়ে যেত। এখনও অনেক পরিবার তৈরি করে। গ্রামের নারীরাই সাধারণত এগুলো বানান আর পুরুষরা তা হাট-বাজারে বিক্রি করেন। বড়া বানিয়েই অনেকে সংসার চালান। গ্রামীণ অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখেন। ছবি: সাজেদুর আবেদীন শান্ত
-
ভোজনরসিকরা শীতের সকালে বড় মাছের ঝোল, আলুর ডাল বা বিভিন্ন তরকারিতে এ বড়া খেয়ে থাকেন। তবে দেশের সব অঞ্চলে এই বড়া জনপ্রিয় নয়। গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জসহ কিছু জেলায় মাসকালাইয়ের বড়া তৈরি হয়ে থাকে। ছবি: সাজেদুর আবেদীন শান্ত