লাভবার্ডসের ব্রিডিং ফার্মে সফল প্রতিবন্ধী আরিফুজ্জামান
শরীয়তপুরে লাভবার্ডসের ব্রিডিং ফার্ম তৈরি করে সফলতার মুখ দেখেছেন শারীরিক প্রতিবন্ধী ইঞ্জিনিয়ার আরিফুজ্জামান খান (৪০)। শুধু তাই নয় এই খামারের মাধ্যমে তৈরি করেছেন বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান।
-
নড়িয়া উপজেলার ভোজেশ্বর ইউনিয়নের নরকলিকাতা এলাকার সুলতান আহম্মেহ খান ও আমেনা খাতুন দম্পতির ছেলে আরিফুজ্জামান খান। তার বয়স যখন ৬ মাস তখন পলিও রোগে বাম পা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরিবারের সাহায্য নিয়েই হাঁটতে হতো তাকে। স্কুলে যাতায়াতে সুবিধার জন্য ছোট বোনের সঙ্গে একই ক্লাসে ভর্তি হতে হয় তাকে। ছবি: বিধান মজুমদার অনি
-
বড় হয়ে যখন বুঝতে পারলেন তার এই সমস্যা পরিবারে ওপর প্রভাব ফেলবে তখন আর কারো বোঝা হতে চাননি। নিজেই কিছু করার চেষ্টা করলেন। গ্রাম থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উচ্চ বিদ্যালয়ের পাঠ চুকিয়ে প্রথমে ভর্তি হন ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে। এরপর স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে পড়াশোনার পাঠ চুকান। ছবি: বিধান মজুমদার অনি
-
ঢাকায় পড়াশোনার দিনগুলো ছিল তার জন্য ভীষণ চ্যালেঞ্জের। শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী হওয়ায় বাস থেকে নামতে গিয়ে বেশ কয়েকবার আহতও হয়েছেন। পড়াশোনা শেষ করে চাকরিতে প্রবেশ ছিল আরও চ্যালেঞ্জের। তবে দমে যাননি তিনি। চাকরি জীবনে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে নিজ কর্মদক্ষতার গুণে কয়েক মাসের মধ্যেই পেয়েছিলেন পদোন্নতি। ছবি: বিধান মজুমদার অনি
-
এরপর তিনি সিদ্ধান্ত নেন চাকরি ছেড়ে নিজে কিছু করবেন। তাই ২০২১ সালে চাকরি ছেড়ে বাড়িতে চলে আসেন। এলাকায় ফিরে ইন্টেরিয়র ডিজাইন করার পাশাপাশি ৪৫ শতাংশ জমি ভাড়া নিয়ে গড়ে তোলেন শৌখিন লাভবার্ডসের ব্রিডিং ফার্ম। ২ বছরের প্রচেষ্টার মাধ্যমে তার এই ফার্মে এখন ১৫ প্রজাতির লাভবার্ডসের ব্রিডিং করানো হয়। ছবি: বিধান মজুমদার অনি
-
তার এই খামারের প্রতি জোড়া পাখির মূল্য প্রকারভেদে দেড় হাজার টাকা থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। বর্তমানে তার খামারে ৪৮ জোড়া প্রাপ্তবয়স্কর পাশাপাশি অন্তত ৩০ জোড়া বিভিন্ন বয়সী লাভবার্ডস রয়েছে। ছবি: জান্নাত শ্রাবণী
-
তিনি এখন পর্যন্ত বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি শুরু না করলেও কিছু কিছু সৌখিন পাখি প্রেমীদের কাছে লাভবার্ডসগুলো বিক্রি শুরু করছেন। কয়েক বছরের মধ্যে তার এই খামার থেকে লাখ টাকা আয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। ছবি: বিধান মজুমদার অনি
-
সরেজমিনে তার লাভবার্ডসের খামারে গিয়ে দেখা যায়, পাখির কিচিরমিচির শব্দে মুখরিত খামারটি। ৪৮টি খাঁচার ভেতর থেকে উঁকিঝুঁকি মারছে হলুদ, সবুজ, নীলসহ বিভিন্ন রঙের মিশ্র লাভবার্ডস। ছবি: জান্নাত শ্রাবণী
-
খাঁচার সামনে ১০ ইঞ্চি দৈর্ঘ্য, ৮ ইঞ্চি প্রস্থ ও সাড়ে ৭ ইঞ্চি উচ্চতার কাঠের বাক্স বসানো হয়েছে। এই বাক্সগুলোর মধ্যে ৩৬টি পাখি ডিম পেড়েছে। কিছু পাখির ছানা আবার একত্রিত করে দুটি ছোট খাঁচার মধ্যে রাখা হয়েছে। এখান থেকে বাচ্চাদের খাবার খাওয়াচ্ছিলেন আরিফুজ্জামান খান। ছবি: বিধান মজুমদার অনি