ইতিহাসে ভরপুর ফরিদপুরের কাচারি ঘর
ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের গুনবহা গ্রামের কাজী বাড়িতে সন্ধান মিলেছে এক ঐতিহ্যবাহী কাচারি ঘরের। শতবর্ষী কাচারি ঘরটি কালের বিবর্তনে জৌলুস হারালেও রয়েছে এর গৌরবময় ইতিহাস। আছে নানা লোক কাহিনী।
-
এই কাচারি ঘরে এসেছেন বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম, পল্লীকবি জসীম উদদীন, শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক, ভারতের শিক্ষামন্ত্রী, কবি হুমায়ুন কবীর, চৌধুরী ইউসুফ আলী মোহন মিয়া। তবে সবচেয়ে বেশি এ বাড়িতে বা এই কাচারি ঘরে যিনি এসেছেন, তিনি হলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ছবি: এন কে বি নয়ন
-
এছাড়া এসেছেন আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার প্রধান কৌসুলি আব্দুস সালাম খান, বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় সংসদের ডাক ও তার প্রতিমন্ত্রী কে এম ওবায়দুর রহমান, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শিক্ষামন্ত্রী এম এ মজিদ খান, বর্তমান সরকারের বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী কর্নেল ফারুক খান, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসমত কাদির গামা, তার বড় ভাই বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় সংসদের ফরিদপুর-১০ আসনের সংসদ সদস্য নুরুল কাদির জুনু, একই সংসদের ৪ নাম্বার আসনের সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন, অভিনেতা অমল বোসের ছোটবেলার অভিনয়ের রিহার্সালের সূতিকাগার ছিল এই কাচারি ঘর। ছবি: এন কে বি নয়ন
-
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হওয়ার পর আত্মগোপনে থাকার অনেকটা সময় এই কাচারি ঘরে কেটেছে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুর রহমানের। বিএনএমের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহ মো. আবু জাফরও ছাত্রজীবনে এই কাচারি ঘরে অনেকটা সময় কাটিয়েছেন। ছবি: এন কে বি নয়ন
-
কথিত আছে, কাচারি ঘরটি তৈরি করতে কয়েকবার মিস্ত্রি বদল করা হয়েছিল। সর্বশেষ একদল মিস্ত্রি তাদের অস্ত্রপাতি ধার দিতে সময় নিয়েছিলেন ৬ সপ্তাহ অর্থাৎ ৪২ দিন। বাঁশের সাজ, বেতের বাঁধন, শাল-সুন্দরীর খুঁটি আর ছনের ছাউনিতে কাচারি ঘর দাঁড় করাতে সময় লাগে কয়েক বছর। প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে শত শত লোক আসতো কাচারি ঘর নির্মাণের কাজ দেখতে। ছবি: এন কে বি নয়ন
-
বর্তমানে জৌলুস হারিয়েছে শতবর্ষী এই কাচারি ঘরটি। ছন ও কারিগরের অভাবে আটচালা কাচারি ঘরটি টিকিয়ে রাখা সম্ভব না হলেও বহু স্মৃতিময় ভিটায় প্রায় ৪০ বছর ধরে দাঁড়িয়ে আছে টিনের প্রতীকী কাচারি ঘর। ছবি: এন কে বি নয়ন