নিরাশার আঁধারে মুস্তাফিজরাই আশার আলো


প্রকাশিত: ০৪:৩১ এএম, ০৯ মে ২০১৬

চারদিকে যখন নানা নেতিবাচক খবর তখন মুস্তাফিজরাই আশার আলো দেখাচ্ছেন। ভিন্নমতাবলম্বীদের হত্যা, বিদেশি নাগরিকদের ওপর আঘাত, নির্বাচনী সহিংসতায় জীবনহানি, ধর্মীয় উগ্রবাদের উত্থান, আইএসের জুজু, রাজনৈতিক অসহিষ্ণুতা আমাদের তটস্থ করে রাখছে সারাক্ষণ। একদিকে উন্নয়ন অন্যদিকে মানবিক মূল্যবোধের চরম অবক্ষয়। সুরক্ষিত জায়গায়ও হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছে তনুরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের অজাতশত্রু অধ্যাপকও ঘাতকের চাপাতির রোষ থেকে রেহাই পাচ্ছে না। মায়ের হাতে সন্তান খুন, কখনো সন্তানের হাতে পিতা-মাতা আক্রমণের শিকার হচ্ছে। শিশুদের ওপর পৈশাচিক নির্যাতন হচ্ছে। একটি হত্যার রেশ না কাটতেই ঘটছে আরো একটি ঘটনা। কোনো কিছুরই কূল-কিনারা হচ্ছে না।
 
কিন্তু একটা সমাজ তো এভাবে চলতে পারে না। আলোর উল্টো পিঠে যেমন অন্ধকার থাকে। তেমনি অন্ধকারের পরে আলোর দেখা পাওয়াটাই জীবনের ধর্ম। গায়ের ছেলে মুস্তাফিজ। মাত্র বিশ বছরের এক তরুণ। বাংলাদেশের এই সূর্য সন্তানের প্রতিই এখন দৃষ্টি ক্রিকেট দুনিয়ার। সাতক্ষীরার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে জেলা শহরে তাকে অনুশীলনের জন্য যেতে হতো ভাইয়ের মোটরবাইকে চড়ে। এরপর ঢাকায় জাতীয় দলের নেট প্র্যাকটিসের সময় বল করতে দেয়া হলো তাকে। এর পরের ইতিহাস শুধু্ই সাফল্যের। অনেকটা রূপকথার গল্পের মতো। তিন ধরনের ক্রিকেট ফরম্যাটেই অসাধারণ সাফল্য।

mustafij
 
এই সাফল্যের পর ডাক এলো ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) । সেখানেও অসাধারণ সাফল্য দেখাচ্ছেন মুস্তাফিজ। খেলছেন সানরাইজার্স হায়দারাবাদের হয়ে। গতকাল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সকে ৮৫ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে সানরাইজার্স হায়দারাবাদ। এ ম্যাচেও বিপক্ষ দলের ব্যাটসম্যানদের জন্য আতংক ছিলেন মুস্তাফিজ। ৩ ওভার বল করে মাত্র ১৬ রান দিয়ে নিয়েছেন ৩ উইকেট। জয়ের পেছনে মুস্তাফিজের অবদান যে অনেকখানি সেটি বলার অপেক্ষা রাখে না।

মুস্তাফিজকে নিয়ে আলোচনা সর্বত্র। গণমাধ্যম সরগরম তার খবরে। তার গ্রামের বাড়িতে নামছে মানুষের ঢল। মন্ত্রিসভার বৈঠকে কথা প্রসঙ্গে মুস্তাফিজকে ‘জাতীয় বীর’ বলে সম্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ক্রীড়াঙ্গন তো বটেই সারাদেশ জুড়েই মুস্তাফিজকে নিয়ে একটি ইতিবাচক আবহ তৈরি হয়েছে। এটিকে ছড়িয়ে দিতে হবে সমাজের সর্বক্ষেত্রে। আমাদের মেয়েরা হিমালয় জয় করছে। আমাদের বিজ্ঞানীরা পাটের জিন রহস্য উন্মোচন করছেন। আমরা বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট তৈরি করছি। আমাদের  রিজার্ভ ২৮ বিলিয়ন ডলার। (অথচ পাকিস্তানের রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলার।) নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতুর কাজ এগিয়ে চলছে দ্রুত গতিতে। এই ইতিবাচক ধারায় মুস্তাফিজরা আরো গতি নিয়ে আসছে। কাজেই সমাজের সবস্তরে মুস্তাফিজদের সংখ্যা বাড়াতে হবে। এ জন্য প্রয়োজন পরিচর্যা। দিতে হবে এদের সুরক্ষাও। তবেই আমরা পাবো আমাদের কাঙ্খিত বাংলাদেশ। সরকার এই লক্ষ্যে কাজ করুক- এটাই দেশবাসীর একান্ত চাওয়া।

এইচআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।