মাঙ্কিপক্স: ইতিহাস বর্তমান প্রাদুর্ভাব এবং ভবিষ্যৎ

ড. হাসিনুর রহমান খান
ড. হাসিনুর রহমান খান ড. হাসিনুর রহমান খান , অধ্যাপক, ফলিত পরিসংখ্যান, পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত: ০৯:৩১ এএম, ১৯ আগস্ট ২০২৪

মপক্স, যা আগে মাঙ্কিপক্স নামে পরিচিত ছিল। এটি একটি ভাইরাসজনিত রোগ, যা বেশ জোরালো ভাবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্থাগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। গত ১৪ আগস্ট বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মাঙ্কিপক্স নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো একটি বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। এর আগে জুন ২০২২ সালে মাঙ্কিপক্স নিয়ে একইভাবে বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিল।

মপক্স প্রথমবারের মতো ১৯৫৮ সালে আবিষ্কৃত হয়। সে বছর ডেনমার্কে গবেষণাগারে পোষা বানরের মধ্যে দুটি মহামারি ছড়িয়ে পড়ে। প্রথমে এটি বানরের মধ্যে আবিষ্কৃত হওয়ায় এই রোগটির নাম হয় ‘মাঙ্কিপক্স’। তবে, গবেষণায় পরে প্রমাণিত হয় যে এই রোগের মূল বাহক সম্ভবত বিভিন্ন রকমের ছোট স্তান্যপায়ী প্রাণী। বিশেষ করে আফ্রিকান রডেন্টস এবং অন্য ছোট প্রাণী। মানুষের মধ্যে প্রথম মপক্স সংক্রমণের ঘটনা ১৯৭০ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী কঙ্গোতে। সে সময়ে বিশ্বব্যাপী ছোট পক্স (গুটি বসন্ত) নির্মূল করার প্রচেষ্টা চলছিল এবং এর ফলে ছোট পক্স ভাইরাসের প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, যা মাঙ্কিপক্স সংক্রমণের ক্ষেত্রে একটি প্রভাবক হতে পারে বলে মনে করা হয়।

যা জানা যায়, তাতে মাঙ্কিপক্স ভাইরাসটি এক ধরনের অরথোপক্সভাইরাস, যা ভ্যারিওলা ভাইরাসের (যা গুটি বসন্তের কারণ) সাথে সম্পর্কিত। এই ভাইরাসটি মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হতে পারে দুটি প্রধান উপায়ে: ১. প্রাণী থেকে মানব সংক্রমণ: মাঙ্কিপক্স মূলত একটি জুনোটিক (পশু থেকে মানুষের মধ্যে সংক্রমিত) রোগ, অর্থাৎ এটি প্রধানত প্রাণী থেকে মানুষে ছড়ায়। আফ্রিকার রডেন্টস, বিশেষ করে গাম্বিয়ান পোউচড র‌্যাট এবং ডরমাইস, এই ভাইরাসের প্রধান বাহক। সংক্রমণ সাধারণত সংক্রমিত প্রাণীর রক্ত, দেহের তরল পদার্থ বা চামড়া/শ্লেষ্মা ঘায়ের সাথে সরাসরি সংস্পর্শের মাধ্যমে ঘটে। ২. মানুষ থেকে মানুষ সংক্রমণ: মাঙ্কিপক্সের মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমণ ঘটে সংক্রমিত ব্যক্তির শ্বাসযন্ত্রের স্রাব, ক্ষত থেকে নির্গত তরল বা দূষিত বস্তু যেমন বিছানার চাদর বা কাপড়ের মাধ্যমে। এছাড়া দীর্ঘমেয়াদি ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শ এবং যৌনমিলনের মাধ্যমেও এই ভাইরাস ছড়াতে পারে।

মাঙ্কিপক্সের ইনকিউবেশন পিরিয়ড, অর্থাৎ সংক্রমণের পর লক্ষণ দেখা দেওয়ার সময়সীমা, সাধারণত ৬ থেকে ১৩ দিন, তবে এটি ৫ থেকে ২১ দিন পর্যন্ত হতে পারে। রোগটি সাধারণত স্বল্পমেয়াদি হলেও কিছু ক্ষেত্রে মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে, বিশেষ করে শিশু, গর্ভবতী নারী এবং কম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে। যাদের ইমিউন সিস্টেম দুর্বল, যেমন এইচআইভি সংক্রমিত ব্যক্তি বা ক্যানসার, অর্গান ট্রান্সপ্লান্ট গ্রহণকারীরা, তাদের জন্য মাঙ্কিপক্সের সংক্রমণ মারাত্মক হতে পারে। এছাড়া যারা সংক্রমিত রোগীদের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেন, যেমন স্বাস্থ্যকর্মী, তাদের জন্য মাঙ্কিপক্স সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি।

মাঙ্কিপক্সের লক্ষণগুলো সাধারণত ফ্লু-এর মতো শুরু হয়, যার মধ্যে থাকে জ্বর, মাথাব্যথা, পেশি ব্যথা এবং ক্লান্তি। এর সাথে লিম্ফ নোড ফুলে যাওয়া (লিম্ফ্যাডেনোপ্যাথি) ঘটে, যা মাঙ্কিপক্সকে গুটি বসন্ত থেকে আলাদা করে। এরপর ত্বকে ফুসকুড়ি দেখা দেয়, যা মুখ থেকে শুরু করে শরীরের অন্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে। এই ফুসকুড়ি বিভিন্ন পর্যায়ে যায়: প্রথমে ম্যাকুলস, তারপর প্যাপুলস, ভেসিকলস, পুস্টুলস, এবং শেষে স্ক্যাব।

মাঙ্কিপক্সের জন্য নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই। সাধারণত রোগটি ২ থেকে ৪ সপ্তাহের মধ্যে নিজে থেকেই সেরে যায়। তবে, গুরুতর ক্ষেত্রে রোগীদের সহায়ক চিকিৎসা প্রয়োজন হয়, যেমন তরল ও ইলেক্ট্রোলাইট সাপোর্ট, সংক্রমণের চিকিৎসা, এবং অন্য উপসর্গের ব্যবস্থাপনা, যা জানা যায় তাতে, মাঙ্কিপক্স ভাইরাসের দুটি জেনেটিক ক্লেড বা শাখা রয়েছে, ক্লেড I এবং II। একটি ক্লেড হলো ভাইরাসের একটি বিস্তৃত গোষ্ঠী, যা কয়েক দশক ধরে বিবর্তিত হয়েছে এবং জেনেটিক ও ক্লিনিক্যালভাবে স্বতন্ত্র। ২০২২ সালের প্রাদুর্ভাবের জন্য ক্লেড II দায়ী ছিল, তবে ক্লেড Ib বেশি গুরুতর রোগ সৃষ্টি করে।

আফ্রিকা সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন মঙ্গলবার মাঙ্কিপক্স প্রাদুর্ভাবকে মহাদেশীয় নিরাপত্তার জন্য জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা হিসেবে ঘোষণা করেছে। এটি ২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে সংস্থাটির প্রথম এ ধরনের ঘোষণা। এ বছর শুরু থেকে এখন পর্যন্ত আফ্রিকার ১৩টি দেশে ১৭ হাজারের বেশি মাঙ্কিপক্স সংক্রমণ এবং ৫০০ এর বেশি মৃত্যুর ঘটনা রিপোর্ট করা হয়েছে। আফ্রিকা সিডিসি এই প্রাদুর্ভাবকে ‘খুব উচ্চ ঝুঁকির ঘটনা’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ হয়েছে গণপ্রজাতন্ত্রী কঙ্গোতে, যেখানে এই মাসে নিশ্চিত হওয়া কেসগুলোর মধ্যে ৯৬ শতাংশের বেশি, অর্থাৎ ১৪ হাজারের বেশি সংক্রমণের ঘটনা রিপোর্ট করা হয়েছে।

মাঙ্কিপক্স প্রথমে মধ্য এবং পশ্চিম আফ্রিকায় সীমাবদ্ধ ছিল, যেখানে প্রধানত গণপ্রজাতন্ত্রী কঙ্গো, নাইজেরিয়া, ক্যামেরুন এবং মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রের মতো দেশগুলোতে এটি প্রায়ই দেখা যেত। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, বিশেষ করে ২০২২ সালে, মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাব আফ্রিকার বাইরেও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে, যা আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্থাগুলোর মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করে।

বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর জন্য মপক্সের প্রাদুর্ভাবের ঝুঁকি রোধে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার প্রস্তুতি এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা অপরিহার্য। যথাযথ সময়ে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে, মপক্স এবং অন্য সংক্রামক রোগের বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব, যা দেশের জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

২০২২ সালে, মাঙ্কিপক্সের একটি উল্লেখযোগ্য প্রাদুর্ভাব ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকার বেশ কয়েকটি দেশে দেখা যায়। যুক্তরাজ্য, স্পেন, পর্তুগাল, জার্মানি, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস এবং ইতালিতে মাঙ্কিপক্সের কেসগুলো দ্রুত বৃদ্ধি পায়। যুক্তরাজ্যে প্রথম আফ্রিকার বাইরের মাঙ্কিপক্স কেস রিপোর্ট হয়, যা পরে ইউরোপের অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে পড়ে। উত্তর আমেরিকায়, যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডায় মাঙ্কিপক্সের সংক্রমণ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে, ২০২২ সালে একাধিক রাজ্যে মাঙ্কিপক্সের কেস শনাক্ত হয়, ফলে সেখানকার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হয়। এছাড়া, দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে ব্রাজিল এবং আর্জেন্টিনায়ও মাঙ্কিপক্সের কেস রিপোর্ট করা হয়।

এশিয়ায়ও এর সংক্রমণ ধীরে ধীরে দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে, ভারত, সিঙ্গাপুর এবং থাইল্যান্ডে মাঙ্কিপক্সের কেস শনাক্ত হয়েছে, যা এশিয়ায় এই ভাইরাসের উপস্থিতির ইঙ্গিত দেয়। ভারতে প্রথম মাঙ্কিপক্স কেস ২০২২ সালের জুলাইয়ে রিপোর্ট করা হয়। কেরালা রাজ্যে একজন ব্যক্তি, যিনি মধ্যপ্রাচ্য থেকে দেশে ফিরেছিলেন, তার মধ্যে মাঙ্কিপক্স সংক্রমণ ধরা পড়ে। এরপর আরও কয়েকটি কেস রিপোর্ট হয়, ফলে স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ সতর্ক অবস্থানে থাকে এবং বিভিন্ন বিমানবন্দর ও প্রবেশপথে স্ক্রিনিং কার্যক্রম জোরদার করা হয়।

সিঙ্গাপুরেও ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময়ে মাঙ্কিপক্স কেস শনাক্ত করা হয়। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে এবং জনগণকে সচেতন করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে। এছাড়া, থাইল্যান্ডেও একাধিক মাঙ্কিপক্স কেস রিপোর্ট করা হয়েছে। সম্প্রতি পাকিস্তানসহ অন্য দেশেও এটি ছড়িয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে|

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই প্রাদুর্ভাবের পেছনে বেশ কিছু কারণ থাকতে পারে। একদিকে, বিশ্বব্যাপী ভ্রমণ এবং সংযোগের কারণে ভাইরাসটি সহজেই এক দেশ থেকে অন্য দেশে ছড়িয়ে পড়তে পারে। অন্যদিকে, গুটি বসন্তের টিকা দেওয়ার হার কমে যাওয়ায় এবং গুটি বসন্ত নির্মূল হওয়ার পর থেকে মানুষের মধ্যে স্বাভাবিক প্রতিরোধ ক্ষমতাও হ্রাস পেয়েছে, যা মাঙ্কিপক্সের সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়িয়েছে। ২০১৭ সালে নাইজেরিয়ায় মাঙ্কিপক্সের একটি বড় প্রাদুর্ভাব দেখা যায়, যা ৪০ বছরের মধ্যে দেশটিতে সবচেয়ে বড় প্রাদুর্ভাব ছিল।

বাংলাদেশে মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাব এখনো দেখা যায়নি, তবে আন্তর্জাতিক ভ্রমণ এবং আঞ্চলিক সংযোগের কারণে এটি ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাবের সম্ভাবনা সম্পর্কে সচেতন এবং প্রস্তুতিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে আগে ভাগেই। বিমানবন্দর এবং স্থলবন্দরগুলোতে বিশেষ সতর্কতা এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানোর প্রয়োজনীয় অবকাঠামো এবং প্রস্তুতির কথা এখনই ভাবতে হবে।

বাংলাদেশে যদি মাঙ্কিপক্স প্রাদুর্ভাব ঘটে, তবে এটি দেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে। বিশেষ করে, দেশের স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য এই রোগের সঠিক জ্ঞান এবং প্রস্তুতি থাকা অত্যন্ত জরুরি, যাতে মাঙ্কিপক্স প্রাদুর্ভাবের ক্ষেত্রে দ্রুত এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায়।

মাঙ্কিপক্স প্রতিরোধের জন্য গুটি বসন্তের টিকা কিছুটা কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে, কারণ এই দুটি ভাইরাসের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। গুটি বসন্ত নির্মূলের পর থেকে গুটি বসন্তের টিকা দেওয়ার হার হ্রাস পেয়েছে, ফলে মাঙ্কিপক্সের সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে গেছে। তবে, গুটি বসন্তের টিকার মতো কিছু নতুন প্রজন্মের টিকা এবং অ্যান্টিভাইরাল ওষুধও মাঙ্কিপক্স প্রতিরোধ এবং চিকিৎসায় ব্যবহৃত হচ্ছে।

সাধারণত, মাঙ্কিপক্সের সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য ব্যক্তিগত সুরক্ষা ব্যবস্থা এবং স্বাস্থ্যবিধি মানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সংক্রমিত ব্যক্তির সাথে সরাসরি সংস্পর্শ এড়ানো, হাত ধোয়া এবং সুরক্ষামূলক পোশাক পরা এই রোগ প্রতিরোধে সহায়ক। এছাড়া, সন্দেহভাজন কেসগুলো বিচ্ছিন্ন করে রাখা এবং দ্রুত চিকিৎসা প্রদান করা মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে।

মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণ এবং চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে অনেক কথাবার্তা চলছে রোগ তত্ত্ববিদ এবং সংশ্লিষ্ট মহলের মধ্যে। বিশ্বজুড়ে গবেষকরা এই ভাইরাসের গতি-প্রকৃতি, সংক্রমণ প্রক্রিয়া এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করছেন। বিশেষ করে ভাইরাসের জিনগত বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ এবং নতুন টিকা ও ওষুধের উন্নয়ন গবেষণার মূল কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।

বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য এই ধরনের গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করা এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে সহযোগিতা করা অত্যন্ত জরুরি। এই ধরনের উদ্যোগ দেশের জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে এবং ভবিষ্যতে মাঙ্কিপক্সসহ অন্য সংক্রামক রোগের বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সহায়ক হতে পারে। অনেকের এ ধরনের প্রত্যাশা সাম্প্রতিক করোনা অতিমারির ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের কাছে ছিল| তবে সেটা আশার মুখ দেখেনি|

মাঙ্কিপক্স একটি গুরুতর ভাইরাসজনিত রোগ, যা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এর বর্তমান প্রাদুর্ভাব এবং ভবিষ্যৎ প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যক্রমের ওপর জোর দেওয়া এখন সময়ের দাবি। বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর জন্য মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাবের ঝুঁকি রোধে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার প্রস্তুতি এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা অপরিহার্য। যথাযথ সময়ে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে, মাঙ্কিপক্স এবং অন্য সংক্রামক রোগের বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব, যা দেশের জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

লেখক: অধ্যাপক, ফলিত পরিসংখ্যান এবং ডেটা সায়েন্স,পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
[email protected]

এইচআর/ফারুক/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।