উদ্বেগজনক


প্রকাশিত: ০১:৫৯ এএম, ৩০ এপ্রিল ২০১৬

বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ সুন্দরবন আমাদের জন্য প্রকৃতির এক অপরূপ দান। এই বনে একের পর এক অগ্নিকাণ্ডে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে জনমনে। সবশেষ বুধবার বিকাল পৌনে ৪টার দিকে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের ২৫ নম্বার কম্পার্টমেন্টের তুলাতলা এলাকায় আগুনের সূত্রপাত হয়। এ নিয়ে গত এক মাসে ওই এলাকায় চতুর্থবারের মতো আগুন লাগলো। অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা আরো আধুনিক ও যুগোপযোগী করার পাশাপাশি আগুন লাগার সঠিক কারণ অনুসন্ধান করতে হবে। এর পেছনে কোনো দুরভিসন্ধি থাকলে সেটিও নির্মূল করতে হবে।   

বুধবার বিকাল পৌনে ৪টার দিকে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের ২৫ নম্বার কম্পার্টমেন্টের তুলাতলা এলাকায় আগুনের সূত্রপাত হয়। এ নিয়ে গত এক মাসে ওই এলাকায় চতুর্থবারের মতো আগুন লাগলো। এর আগে গত ২৭ মার্চ, ১৩ ও ১৮ এপ্রিল ধানসাগর স্টেশনের নাংলী ক্যাম্প এলাকায় আগুন লাগে। সে সময় বন বিভাগের পক্ষ থেকে তদন্ত করে স্থানীয় দুর্বৃত্তদের দায়ী করা হয়। ওই ঘটনায় দুটি মামলাও করে বনবিভাগ। তবে এখনও আসামিদের কাউকে ধরা যায়নি। এদিকে বুধবারের আগুনের ঘটনা তদন্তে সহকারী বন সংরক্ষক বেলায়েত হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে।  এই কমিটিকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। আমাদের দেশে অনেক তদন্ত কমিটি হয় কিন্তু এর শেষ ফলাফল কি হয় তা কেউ জানতে পারে না। এই কমিটির রিপোর্ট আলোর মুখ দেখবে এবং কেউ দোষী প্রমাণিত হলে তার যথাযথ শাস্তি হবে- জাতীয় স্বার্থে এমনটিই দেখতে চায় দেশের মানুষ।
 
সুন্দরবন আমাদের গর্বের ধন হলেও জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কুচক্রী মহল তাদের হীন স্বার্থে এই বনের ধ্বংসসাধনে লিপ্ত। বার বার আগুন লাগার পেছনেও এই চক্রের হাত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দুঃখজনক হচ্ছে, এই দুষ্টচক্রের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থায়ই নেওয়া হয় না ফলে তারা আর বেপরোয়া হয়ে ওঠে। অথচ ঝড়-ঝাপ্টা থেকে শুরু করে প্রাকৃতিক অনেক দুর্যোগ থেকে আমাদের রক্ষা করে সুন্দরবন। এখানকার জীববৈচিত্র্য এই বনকে দিয়েছে অনন্য বৈশিষ্ট্য। সুন্দরবনে রয়েছে ৫ হাজার প্রজাতির সম্পূরক উদ্ভিদ, ১৯৮ প্রজাতির উভচর প্রাণি, ১২৪ প্রজাতির সরীসৃপ, ৫৭৯ প্রজাতির পাখি, ১২৫ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী ও ৩০ প্রজাতির চিংড়ি মাছ। কিন্তু দুঃখজনক হচ্ছে সুন্দরবনের মর্যাদা কি আমরা বুঝতে পারছি? কথায় আছে ‘বাঙালি দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা দেয় না।’ সুন্দরবনের ক্ষেত্রেও এই ধরনের একটি প্রবণতা আমরা লক্ষ্য করছি। যা মোটেও কাম্য নয়।

রয়েল বেঙ্গল টাইগার সুন্দরবনের অন্যতম আকর্ষণ। এই বনকে ঘিরেই বহু মানুষের জীবন-জীবিকা চলছে। বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পেও সুন্দরবন এক অসাধারণ ভূমিকা রেখে চলেছে। কিন্তু দুঃখজনক হচ্ছে সুন্দরবন আজ নানা কারণেই ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। অথচ এই বনকে রক্ষা করতে না পারলে জলবায়ুর পরিবর্তনসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকিতে থাকা বাংলাদেশকে আরও দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হবে। এজন্য সুন্দরবন রক্ষায় সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়ার কোনো বিকল্প নেই।

এইচআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।