কারো পৌষ মাস কারো সর্বনাশ


প্রকাশিত: ০৬:২৯ এএম, ১২ এপ্রিল ২০১৬

সরকার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বহুগুণ বাড়িয়ে পে-স্কেল ঘোষণা করেছে, কোনো কোনো পণ্যে পাটজাত মোড়কের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করেছে, এমনকি নববর্ষ ভাতাও চালু করেছে, অন্যদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকদের তাদের ন্যায্য পাওনার জন্য রাস্তায় নামতে হচ্ছে। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। তবে আশার কথা হচ্ছে এরই মধ্যে খুলনায় আন্দোলনরত শ্রমিকসহ রাষ্ট্রায়ত্ত ২৭টি পাটকলের শ্রমিক-কর্মচারীদের বকেয়া পরিশোধ এবং পাট কেনার জন্য সরকার প্রায় এক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একই সঙ্গে পয়লা বৈশাখের আগে বকেয়া মজুরির একটি অংশ মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পরিশোধ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত যতো তাড়াতাড়ি বাস্তবায়ন করা যায় ততোই মঙ্গল।

পাট খাতে প্রয়োজনীয় অর্থ ছাড়, অবিলম্বে রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পের শ্রমিকদের জন্য মজুরি কমিশন বোর্ড গঠন, ১ জুলাই ২০১৩ ঘোষিত ২০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা প্রদান, শ্রমিকদের স্থায়ীকরণ এবং সব পাওনা পরিশোধের পাঁচ দফা দাবি আদায়ে বাংলাদেশ রাষ্ট্রায়ত্ত জুট মিল সিবিএ-ননসিবিএ ঐক্য পরিষদের আহ্বানে আন্দোলন করছে শ্রমিকরা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সরকার অর্থ বরাদ্ধের ঘোষণা দেয়। এই ঘোষণার পর আন্দোলন স্থগিত করা হয়। পাটকলশ্রমিক ও কর্মচারীদের গ্র্যাচুইটি বাবদ ৩০০ কোটি টাকা, ভবিষ্য তহবিল (প্রভিডেন্ট ফান্ড) ৩০০ কোটি এবং পাট কেনার জন্য ২০০ কোটি টাকা দরকার বলে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় হিসাব দেয়। এ ছাড়া শ্রমিকদের সপ্তাহের মজুরি বাবদ ৪৮ কোটি টাকা বকেয়া পড়েছে। পাটকলগুলোর বেশির ভাগই পুরোনো ও জরাজীর্ণ হওয়ায় সেগুলো সংস্কার ও আধুনিকায়নে টাকার দরকার। এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী এক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিতে বলেন।

পাটের সোনালি অতীতের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার নানামুখি উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। কিন্তু গোড়ায় গলদ রেখে এগুলে আখেরে কোনো লাভ হবে না। এ জন্য পাটকলগুলোর উৎপাদন বাড়াতে হবে। পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে স্থাপিত পাটকলগুলোর সংস্কার ও আধুনিকায়নও জরুরি। দুর্নীতি অনিয়ম দূর করে পাটকলগুলোকে লাভজনক করতে হবে। বিশেষ করে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো যেন কোনো অবস্থাতেই লোকসান না দেয় সেটি নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য শ্রমিক-কর্মচারীদের ন্যায্য পাওনা নিশ্চিত করার বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে স্বচ্ছতা জবাবদিহিতাও অত্যন্ত জরুরি। পাটশিল্পের সার্বিক উন্নতিকল্পে সরকার সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলেও আমরা আশা করছি।

এইচআর/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।