তীব্রতাপদাহ, পরিবেশ সচেতনতার বিকল্প নেই


প্রকাশিত: ০৫:২৩ এএম, ১০ এপ্রিল ২০১৬

ঋতু পরিক্রমায় গ্রীষ্মকাল চলছে। এই সময়ে গরম পড়াটা স্বাভাবিক। কিন্তু তাই বলে এতোটা! বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বৈশ্বিক উষ্ণতার প্রভাব বাংলাদেশে পড়তে শুরু করেছে। যে কারণে ঋতুচক্র ঠিক থাকছে না। অকাল ঝড়-বন্যা বৃষ্টি নানা দুর্যোগ নিয়ে আসছে। বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে অস্বাভাবিক রকমের গরম হয়ে উঠতে পারে পৃথিবী। এর নজির দেখা যাচ্ছে বর্তমানে। তীব্র দাবদাহে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। গরমে বিঘ্নিত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। অফিস, আদালত, স্কুল, কলেজ, বিপণী বিতান সর্বত্র এর প্রভাব পড়ছে। নানা রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে লোকজন।  এ অবস্থা চলতে থাকলে জনদুর্ভোগ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা বলা মুশকিল।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের সূত্র মতে, গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল রাজশাহীতে ৩৯.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শুক্রবার ছিল খুলনায় ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় শুক্রবার ৩৪ দশমিক ৪ ডিগ্রি থাকলেও শনিবার ছিল ৩৪ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের অন্যান্য অঞ্চলের চিত্রও প্রায় একই। এছাড়া ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আদ্রতা ৮৭ শতাংশ। তাই গরমের তীব্রতা একটু বেশি অনুভূত হচ্ছে।মাত্র একদিনের ব্যবধানে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বেড়েছে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়ার অস্বাভাবিক আচরণের কারণে আজ সিলেটসহ বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টির কথা বলছে অধিদফতর। এদিকে, বৈশ্বিক উষ্ণতা ও এল নিনোর প্রভাবে গরম পূর্বের রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে বলেই মনে করছেন আবহাওয়াবিদ ও বিশেষজ্ঞরা।

বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে অস্বাভাবিক রকমের গরম হয়ে উঠতে পারে পৃথিবী। খোদ গবেষকরাই বলছেন, কার্বনডাই অক্সাইডের উপস্থিতি দ্বিগুণ হওয়ার কারণে ধারণাতীত উষ্ণতা অনুভূত হতে পারে। বৈশ্বিক উষ্ণতার এই প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বাংলাদেশে। গত কয়েকদিন ধরে তীব্র গরম অনুভূত হচ্ছে দেশে। এল নিনোর প্রভাবও পড়েছে বাংলাদেশের ওপর। যার কারণে দেশের এক অঞ্চলে বৃষ্টি তো অন্য অঞ্চলে প্রখর রোদ। ১৯৫০ সালের পর থেকে এবারের এল নিনো সর্বাপেক্ষা শক্তিশালী। তিন মৌসুমের এল নিনোর একটি বলে গণ্য হবে। তবে এটাকেই সবচেয়ে শক্তিশালী বলে মনে হচ্ছে। এল নিনোর প্রভাবে শীতের সময় শীত কম অনুভূত হলেও গরমের সময় গরম কম অনুভূত হবে এমন কোনো কথা নেই।

জলবায়ুর পরিবর্তনজনিত ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ একথা অনেকদিন ধরেই আলোচনা হচ্ছে। এখন হাড়ে হাড়ে তা টের পাওয়া যাচ্ছে। এটাকে শুধু প্রাকৃতিক দুর্যোগ বললে ভুল করা হবে। এটা অনেকটাই মনুষ্যসৃষ্ট। শিল্পোন্নত বিশ্বের কথা বাদ দিলেও আমাদের দেশেও বিভিন্নভাবে আমরা পরিবেশ দূষণ করে চলেছি। অধিকাংশ নদী-নালা-খালবিল দখল-দূষণে মৃতপ্রায়। অবাধে চলছে বৃক্ষনিধন। পাহাড়কেটে সমতলভূমি বানিয়ে বসত গড়া হচ্ছে। শিল্পকারাখানার কালো ধোঁয়ায় দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ করা যাচ্ছে না।ফসল উৎপাদনে ব্যবহার করা হচ্ছে ক্ষতিকর কীটনাশক। নানাবিধ কারণে পরিবেশ দূষণ চলছেই। অথচ সচেতন না হলে আমাদের জন্য এক মহাবিপদ সামনে। এজন্য সকলকেই দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। কারণ পরিবেশজনিত বিপর্যয় থেকে আমরা কেউ কিন্তু রক্ষা পাবোনা।

এইচআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।